Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উলিপুরে আলোচিত বাল্যবিয়ের তদন্ত : বিচার এড়াতেই স্কুলছাত্রীকে বিয়ে

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ১১ নভেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

নবম শ্রেণীর ছাত্রীকে বাল্য বিয়ে করে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী সেই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অবশেষে আনুষ্ঠানিক তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ-জান্নাত রুমি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত সোমবার দুপুরে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম এর নির্দেশে এ তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযুক্ত চেয়ারম্যানকে তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে নোটিশ প্রদান করা হলেও তিনি কমিটির সামনে উপস্থিত হননি বলে তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানিয়েছেন। তবে তদন্ত কমিটি কিশোরীর প্রকৃত বয়স ও বাল্য বিয়ের রহস্য উদঘাটনে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের নিকাহ্ রেজিস্ট্রার নুরুন্নবী খন্দকার, উলিপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নাদিরুজ্জামান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এরশাদুল আলম হীরা, কিশোরীর জ্যাঠা গ্রাম পুলিশ আবু বক্কর, কিশোরীর বাবা প্রতিবন্ধী ওসমান গনি সরকার বাচ্চু, ইউপি সচিব কাওছার আলীসহ সংশ্লিষ্ট এলাকার বেশ কয়েকজনের সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করেন। একটি সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি তাদের মতামতসহ রিপোর্ট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানোর পর অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হবে।
তদন্তে জানা যায়, জেলার উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের দোলন গ্রামের হতদরিদ্র প্রতিবন্ধী ওসমান গনি সরকার বাচ্চুর নবম শ্রেণী পড়ুয়া বকসীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছা. বর্ণিতা ওসমান বর্ণী’র (১৪) উপর বেশ কিছুদিন আগ থেকে লোলুপদৃষ্টি পরে বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের। প্রায় ৩ মাস আগে ওই কিশোরীকে নিয়ে চেয়ারম্যানের অনৈতিক কর্মকাÐের একটি ঘটনা এলাকায় জানাজানি হলে বিপাকে পড়েন তিনি। সে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ধুরন্ধর ওই চেয়ারম্যান, তারই ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নং ওয়ার্ডের মেম্বার আজিজুল হকের সহযোগিতায় কিশোরীর জ্যাঠা গ্রাম পুলিশ আবু বক্করকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাড়াহুড়ো করে কাজী ডেকে বিয়ে রেজিস্ট্রি করান বলে জনশ্রæতি পাওয়া যাচ্ছে। অনৈতিক কর্মকাÐের দায় এড়াতেই ওই চেয়ারম্যান দরিদ্র পরিবারটিকে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে বে-আইনি বাল্যবিয়েতে রাজি হতে বাধ্য করে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে বর সেজে বধূ বেশে ঢাকঢোল পিটিয়ে চেয়ারম্যান নবম শ্রেণী পড়ুয়া ওই কিশোরীকে বিয়ে করে নিয়ে আসেন। বাল্য বিয়ে করার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রæত ভাইরাল হলে দৈনিক ইনকিলাবসহ বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইন পোর্টালে গুরুত্বসহকারে প্রকাশিত হলে প্রশাসনের টনক নড়ে।
চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকারের বর্তমানে এক স্ত্রী ও কলেজ পড়ুয়া এক কন্যা সন্তান রয়েছে। এছাড়াও আরো একটি বিয়ে করেছিলেন তবে সেটা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি বলে এলাকাবাসী জানান। তদন্ত কর্মকর্তা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর-এ- জান্নাত রুমি বলেন, অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দ্রতই আইনি প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিয়ে


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ