Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হেরাথে হোয়াইটওয়াশ অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : পাল্লেকেলেতে ওয়ার্ন-মুরালিধরন সিরিজ শুরুর আগের অস্ট্রেলিয়ার সে কি প্রতাপ। টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের শ্রেষ্ঠত্বের সেই গদাটি তুলে দেওয়া হল অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের হাতে। মুরালিধরনকে নিয়োগ দেওয়া হল দলের স্পিন পরামর্শক হিসেবে। এ নিয়ে জলও গড়ায় বেশ দূর। ট্রান্স তাসমান ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে উপমহাদেশে পা রাখা দলটির প্রতিপক্ষ তরুণ আর অনভিজ্ঞতায় গড়া র‌্যাংকিংয়ের ৭ নম্বর দল শ্রীলঙ্কা। পাল্লেকেলেয় সিরিজের প্রথম ইনিংসে সেই প্রতাপ অক্ষুন্ন রেখে তারা লঙ্কানদের গুটিয়ে দিলো মাত্র ১১৭ রানে। তখনও কি তার ভাবতে পেরেছেল সিরিজ শেষে কি অপেক্ষা করছে তাদের জন্য?
পাল্লেকেলের পরের ইনিংস থেকেই পাল্টাতে থাকে টেস্টের রূপ। ৩৩ বছরের টেস্ট ইতিহাসে যে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লঙ্কানদের জয় ছিল মাত্র একটি, সেই অস্ট্রেলিয়াকেই এবার তারা করল হোয়াইটওয়াশ। সেইসাথে অজিদের উপহার দিলো আরো একটা দুঃসংবাদÑ টেস্ট র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ পদ হারিয়ে নেমে তারা গেছে তিন নম্বরে। আর লঙ্কানরা উঠে ছ’য়ে।
১৯৯৯ সালে ক্যান্ডির সেই একমাত্র জয় ড্রেসিংরুমে বসে দেখেছিলেন ২১ বছর বয়সী তরুণ রঙ্গনা হেরাথ। পরের সিরিজেই অভিষেক হয় তার। এরও ১৭ বছর পর অংশ হলেন সেই অস্ট্রেলিয়াকে ধবলধোলাই করা দলের। শুধু একজন বললে হেরাথের মহত্ত্বটা অস্বীকার করা হবে। তিন ম্যাচ সিরিজে ৩১ স্ট্রাইকরেটে আর ১২.৭৫ গড়ে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ২৮ উইকেট। শেষ দিনে ছিলেন আরো বিধ্বংসী, ৬৭ রানের খরচায় ফেরান ৭ ব্যাটসম্যানকে। চতুর্থ ইনিংসে এটি তার অষ্টম ৫ উইকেট শিকারের রেকর্ড, যে রেকর্ড নেই আর কোন বোলারের। এমন বিধ্বংসী রূপে আগে কখনো তাকে দেখা যায়নি। দুই ইনিংস মিলে ১৪৫ রানে নেন ১৩ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কোন লঙ্কান বোলারের যা সেরা বোলিং ফিগার। আগের সেরা ছিল মুত্তয়া মুরালিধরনের (১১/২১২)।
কলম্বোয় সিরিজের শেষ দিনটা যেন পুরো সিরিজের প্রতীক হয়েই ধরা দিলো। সিরিজ জুড়ে লঙ্কান স্পিনারদের কাছে নাকানিচুপানি খাওয়া দলটি এদিনও লঙ্কান স্পিনারদের সামনে নিজেরা দেখা দিলো চরম অসহায় রূপে। আত্মসমর্পণ করল মাত্র ১৩৬ বলে। নিজেদের ইতিহাসে এর চেয়ে কম বল খেলে তারা অল-আউট হয়েছে মাত্র ২ বার।
জয়ের জন্য শেষ দিনে তাদের প্রয়োজন ছিল ৩২৪ রান। উপমহাদেশে যে দলটির ২০০ তাড়া করে জয়ের রেকর্ড মাত্র একটি সেই দলই জয়ের স্বপ্ন দেখছিলো ডেভিড ওয়ার্নানের ঝোড়ো ৬৮ রানের ইনিংসের কল্যানে। ২৬ ওভার শেষেও তাদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ১০০। কিন্তু এরপরই দেখা যায় উপমহাদেশে তাদের সেই পুরোনো রূপ। ১৬০ রানে পৌঁছাতেই নেই হয়ে গেল বাকি ৯ উইকেট। ১৬৩ রানের হারের সাথে নিশ্চিত হল হোয়াইটওয়াশ। উপমহাদেশে যা তাদের টানা তৃতীয় ধবলধোলাই। আগের দুবার তাদের প্রতিপক্ষ ছিল ভারত ও পাকিস্তান। এই ভারত ও পাকিস্তানের কাছেই র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ পদ হারিয়েছে অজিরা।
সকালে মাত্র ৪.৩ ওভারে ৩৫ রান যোগ করে ইনিংস ঘোষনা করে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে সাতে নেমে শতক হাঁকানো ধনঞ্জয়া ডি সিলভা দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত থাকেন ৬৫ রানে। এই প্রথম ছয়ের নীচে নেমে কোন লঙ্কান শতক ও ফিফটি করল। জবাবে অজিরা ২১ ওভারে ৭৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়লেও তাদের আসল চ্যালেঞ্জ ছিল লঙ্কান স্পিনারদের বিপক্ষে যুদ্ধ করে ৮৩ ওভার টিকে থাকা। কিন্তু তার ধারে কাছেও যেতে পারল কই। হেরাথের শিকার হয়ে যখন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নাথান লায়ন ফেরেন দিনের খেলা তখনও ৩৯ ওভার বাকি।

স ং ক্ষি প্ত স্কো র
শ্রীলঙ্কা : ৩৫৫ ও ৩৪৭/৮ ডিক্লে.
অস্ট্রেলিয়া : ৩৭৯ ও ৪৪.১ ওভারে ১৬০ (শন মার্শ ২৩, ওয়ার্নার ৬৮, স্টার্ক ২৩; হেরাথ ৭/৬৪, দিলরুয়ান ২/৭১)।
ফল : শ্রীলঙ্কা ১৬৩ রানে জয়ী।
সিরিজ : শ্রীলঙ্কা ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ ও সিরিজ : রঙ্গনা হেরাথ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হেরাথে হোয়াইটওয়াশ অস্ট্রেলিয়া
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ