পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ভোট গণনা শেষ পর্যায়ে। প্রথম দিনেই ‘বিজয় নিশ্চিত’ ঘোষণা দিলেও পরাজয় নিশ্চিত এটা মানতে পারছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে কারণে একেকবার তিনি একেক ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, অভিযোগ তুলছেন। আদালতে মামলা করছেন, ভোট গণনা বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে মিথ্যা বলার কারণে তিনটি মার্কিন টেলিভিশন তার বক্তব্যের লাইভ স¤প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। মিশিগান ও জর্জিয়ায় ট্রাম্পের মামলা খারিজ করে দিয়েছেন স্থানীয় আদালতের বিচারকেরা। ট্রাম্প নিজের এসব কর্মকান্ডে কারো সমর্থনই পাচ্ছেন না। উল্টো তিনি বিশ্বজুড়ে সমালোচিতই হচ্ছেন। এমনকি টুইটার কর্তৃপক্ষ তার বক্তব্য ‘লেবেল’ করছেন। নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উল্টাপাল্টা কথাবার্তা বলায় তার সঙ্গে যেন কেউ থাকতে চাচ্ছেন না। দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা (বিভিন্ন রাজ্যের গভর্নর) সরাসরি ট্রাম্পের বক্তব্যকে মিথ্যা অবিহিত করে তাকে সমর্থন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের বক্তব্য ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
আলজাজিরা জানায়, এবিসি, এনবিসি এবং সিএনবিসি চ্যানেল ট্রাম্পের লাইভ স¤প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। সিএনএন স¤প্রচার অব্যাহত রাখলেও জানিয়ে দেয়, ট্রাম্প কোনো ধরনের তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই (কারচুপির) এসব দাবি করছেন।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গণনার মধ্যে তিনি প্রায় অর্ধশতটি টুইট করেছেন। মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর খবর মতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬টি টুইট করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যার মধ্যে সাতটিকেই ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে ‘লেবেল’ করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ।
ট্রাম্পের করা এই ১৬টি টুইটের মধ্যে চারটিতে রয়েছে ভিডিও। যার মধ্যে তিনটিই ‘লেবেল’ করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও, দুইটি টুইটে রয়েছে সংবাদ। সর্বশেষ টুইটে ট্রাম্প বলেছেন, ‘টুইটার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। সরকারের ২৩০ ধারা উপহারের মাধ্যমেই এটা সম্ভব হয়েছে!’ আর গত ২৪ ঘণ্টায় দেওয়া সর্বপ্রথম টুইটে তিনি বলেছেন, ‘গণণা বন্ধ করুন!’ এ ছাড়াও টুইটার কর্তৃক ‘লেবেল’ করা টুইটগুলোতে তিনি নির্বাচন নিয়ে ‘বিতর্কিত ও বিভ্রান্তিকর’ মন্তব্য করেছেন। একটিতে তিনি বলেছেন, ‘প্রতারণা বন্ধ করুন।’ অপর একটিতে বলেছেন, ‘যে ভোট নির্বাচনের দিনের পরে এসেছে, সেগুলো গণনা হবে না’।
ট্রাম্পের সাতটি টুইট টুইটার কর্তৃক ‘লেবেল’ করে বলা হয়েছে, ‘এই টুইটে শেয়ার করা কিছু বা সব কন্টেন্ট বিতর্কিত এবং এগুলো একটি নির্বাচন বা অন্য নাগরিক কার্যধারার জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে।’
মার্কিন যুক্তরাষ্টের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ২৬৪টি (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সন্ধ্যা) ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন জো বাইডেন। আর ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি।
এখনো ভোট গণনা চলছে জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, নেভাদা, উত্তর ক্যারোলিনা ও আলাস্কার। অনেক মার্কিন গণমাধ্যম অ্যারিজোনার ভোট গণনা হিসেবে না নেয়ায় তারা বাইডেনের ২৫৩ ইলেকটোরাল ভোট দেখাচ্ছেন। অঘোষিত ৫ রাজ্যের মধ্যে তিনটিতে এগিয়ে গেছেন বাইডেন। নির্বাচনের সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, জয়ের পথেই হাঁটছেন ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন।
নির্বাচনে হারলে আদালতের পথে অগ্রসর হবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনের ফলাফল তার পক্ষে না গেলে তিনি যে আদালতে যাবেন, সে কথা বরবারই সে হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ভোট গণনা যত শেষের দিকে যাচ্ছে, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগও তত দৃঢ় হচ্ছে। ভোট কারচুপি ও ব্যালটে ফলস ভোট পড়ার দাবি তুলে নির্বাচনের বিষয়টিকে বিতর্কিত করে ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার চেষ্টা করছেন বলেই ধারণা করছেন। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুরু থেকেই ট্রাম্প ও রিপাবলিকানদের মধ্যে ধারণা ছিল যে, এবার তারা জিততে পারবেন না। এ কারণেই একটু এগিয়ে যাওয়ার পরপরই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা দেয়ার পরিকল্পনা ছিল ট্রাম্পের। যেহেতু রিপাবলিকান সমর্থকরা ভোটের দিন সরাসরি ভোট দিয়েছেন, তাই ভোট গণনার শুরুতে ট্রাম্পই এগিয়ে ছিলেন। আর এর ভিত্তিত্তে ট্রাম্প নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন। যদিও আইনগতভাবে এই কাজটি করা যায় না। পরে যখন আগাম ভোট গণনা শুরু হয়, তখন জয়ের পথে এগোতে থাকেন বাইডেন। হোয়াইট হাউসের ট্রাম্প একের পর এক ‘ফেইক’ বক্তব্য দিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও কাউকেই পাশে পাচ্ছেন না।
দলের নেতারাই ট্রাম্পের ফেইক কথাবার্তায় বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। মেরিল্যান্ডের রিপাবলিকান গভর্নর ল্যারি হোগান বলেছেন, ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খাটো করছেন। ল্যারি হোগান টুইটারে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে খাটো করে প্রেসিডেন্ট যে মন্তব্য করেছেন, তার কোনো আত্মপক্ষ সমর্থন হয় না। আমেরিকায় ভোট গণনা চলছে। আগের সবসময়ের মতোই মার্কিনদের অবশ্যই এই ফলাফলকে সম্মান করতে হবে। কোনো নির্বাচন বা কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের চেয়ে গুরুত্বপ‚র্ণ নয়। ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে টেক্সাসের রিপাবলিকান প্রতিনিধি উইল হার্ট টুইট এ বলেছেন, ‘একজন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে খাটো করছেন। তিনি কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই অগণিত আমেরিকানের মতামতের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। এটা শুধু বিপজ্জনকই নয়, ভুলও বটে। এটা আমাদের জাতির ভিত্তিকেই খাটো করছে। ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান প্রতিনিধি অ্যাডাম কিনজিঙ্গার তার দলের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ করেছেন। ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে তিনি টুইটে বলেছেন, ‘ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ করুন।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।