বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সবজির মৌসুম বলতেই শীতকালকে বুঝানো হয়। এ সময় বাজারে পাওয়া যায় বাহারি রকমের সবজি। ফলে সুযোগ থাকে পছন্দের সবজি কম দামে কেনার। কিন্তু ভ্যাপসা গরম শেষে রাজধানীতে শীতের সবজির দেখা মিললেও কমেনি দাম। উল্টো নতুন করে বেড়েছে কিছু কিছু সবজির দাম।
গরম শেষে শীতের আমেজ আসার পাশাপাশি বাজারে সবজির সরবরাহ কিছুটা বেড়েছে। তবে দাম কমেনি। এর সঙ্গে পেঁয়াজ ও আলুর চড়া দাম তো আছেই। সবমিলিয়ে বাজারে গিয়ে মোটেই স্বস্তি পাচ্ছেন না নিম্ন আয়ের মানুষ। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার সূত্রে জানা যায়, গত সপ্তাহে গাজরের দাম কিছুটা কমলেও চলতি সপ্তাহে আবার বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে ৮০ থেকে ১০০ টাকা হয়েছে। এর মাধ্যমে আবারও আগের দামে ফিরে গেল গাজর। গত সপ্তাহ বাদ দিলে তিন মাসের বেশি সময় ধরে গাজরের কেজি একশ’ টাকায় রয়েছে। গাজরের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পাকা টমেটো, শিম, উস্তে, বেগুন, বরবটি। গত কয়েক মাসের মতো পাকা টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মাসের অধিক সময় ধরে বাজারে শীতের আগাম সবজি শিম পাওয়া গেলেও তা এখনও অনেকটাই নিম্ন আয়ের নাগালের বাইরে। অবশ্য সময়ের সঙ্গে বাজারে শিমের সরবরাহ বেড়েছে। তবে এতে দাম কিছুটা কমার সম্ভাবনা থাকলেও উল্টো বেড়েছে। বাজার ও মান ভেদে শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, তা গত সপ্তাহে ছিল ৮০ থেকে ১১০ টাকা।
স্বস্তি মিলছে না শীতের অন্যতম সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামেও। ছোট একটি ফুলকপি কিনতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে। একই দাম দিতে হচ্ছে বাঁধাকপির জন্য। মাসের অধিক সময় ধরে শীতের আগাম এই দুই সবজি এমন চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বরবটির ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, উস্তে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এ সবজিগুলোর দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে নতুন করে কিছুটা দাম বেড়েছে ঢেঁড়সের। গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ঢেড়সের দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৯০ টাকা হয়েছে। এর সঙ্গে পটল, শসা, ঝিঙা, ধুন্দুল, কচুর লতি, কাঁকরোল কোনো সবজির দামই ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে না। শসার কেজি গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।
পটলের বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। উসি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি। এ সবজিগুলোর দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। এছাড়া লাউয়ের পিস গত সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এক হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা।
স্বস্তি মিলছে না কাঁচামরিচ ও পেঁয়াজের দামেও। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা পোয়া (৩৫০ গ্রাম) বিক্রি হওয়া কাঁচামরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আর পেঁয়াজ আগের মতো কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা।
এদিকে সরকার দুই দফায় আলুর দাম বেঁধে দিলেও বাজারে সরকারের নির্দেশনার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। সরকার প্রথমে খুচরা পর্যায়ে আলুর কেজি সর্বোচ্চ ৩০ টাকা এবং পরবর্তীতে ৩৫ টাকা বেঁধে দেয়। তবে ভোক্তারা এক কেজি আলু ৪৫ টাকার নিচে কিনতে পারছেন না। এমনকি এখন কোথাও কোথাও আলুর কেজি ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর বাজারে আসা নতুন আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকার ওপরে।
ব্যবসায়ীদের দাবি, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপির সরবরাহ বেড়েছে। তবে বাজারে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে সরবরাহ তার তুলনায় কম। যে কারণে দামটা কমছে না। আমাদের ধারণা কিছুদিনের মধ্যে সবজির দাম কমে আসবে। কারণে বাজারে দেখতে দেখতে ভরপুর শীতের সবজি চলে আসবে।
তারা বলেন, হালকা শীত পড়তে শুরু করেছে। শীতের সবজিও বাজারে বাড়ছে। তবে বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে এবার সবজির অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। যে কারণে এখনও সবজির এতো দাম। তবে সামনে বন্যা বা বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, সে কারণে কিছুদিনের মধ্যে সবজির দাম কিছুটা কমবে বলে আমাদের ধারণা।
বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, শীত এসে গেছে। বাজারেও বিভিন্ন সবজি আসছে। কিন্তু আমাদের কোনো লাভ হচ্ছে না। নামমাত্র সবজি কিনতেই পকেটের সব টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে সবজির বাড়তি দামে নিয়ে ভুগছি। আমরা পেরে উঠছি না। দিন দিন খরচ বাড়ছে। কিন্তু করোনার পর থেকে আয় বাড়ার পর বন্ধ হয়ে গেছে।
তারা আরো বলেন, একদিকে করোনাভাইরাস সর্বনাশ করে দিয়েছে, অন্যদিকে সবজির বাড়তি দাম সর্বনাশ করছে। গত কয়েক মাস ধরে এক টাকাও জামাতে পারিনি। উল্টো আগের যা সঞ্চয় ছিল তাও শেষ হয়ে গেছে। দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি ততো কঠিন হচ্ছে। এখন শুনছি শীতে করোনা বাড়তে পারে। তখন কী হবে তা নিয়েও দুশ্চিন্তা বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।