Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্ব জগতের রহমত হিসেবে নবী (সা.) দুনিয়ায় এসেছেন জুমার বয়ানে পেশ ইমাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০২০, ২:৫৯ পিএম | আপডেট : ৩:০১ পিএম, ৬ নভেম্বর, ২০২০

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন "নবীজী আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্যে রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি”। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, নিশ্চই আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর ফিরিশতারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করেন। হে মু’মিনগণ তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করো। (সূরা আহযাব: ৫৬)। রাসুল (সা.) প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করলে দশটি নেকি হয় আর দশটি গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন। 

আজ শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা এসব কথা বলেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে নগরীর মসজিদগুলোতে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।
ঢাকার ডেমরার দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মো. ফরীদ খুৎবার বয়ানে বলেছেন, সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার যিনি আমাদের সৃষ্টি করে সম্মানিত করেছেন সকল সৃৃষ্টির উপরে। দরুদ ও সালাম সেই মহামানবের প্রতি যিঁনি তাঁর সারা জীবন ব্যয় করেছেন উম্মতের হেদায়াতের জন্য, পথ হারা মানুষকে পথ দেখানোর জন্য। মহান রব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন,
নিশ্চই আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর ফিরিশতারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করেন। হে মু’মিনগণ তোমরাও তাঁর প্রতি দরুদ ও সালাম প্রেরণ করো। (সূরা আহযাব: ৫৬)।

হযরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার প্রতি একবার দরুদ শরিফ পাঠ করবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি দশটি রহমাত নাযিল করবেন এবং তার দশটি গোনাহ মাফ করে দিবেন। (মুসনাদে আহমাদ)।
পেশ ইমাম বলেন, উক্ত আয়াত ও হাদিসের ভাষ্য থেকে আমারা জানতে পারি যে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা আমাদের কর্তব্য।
ছয়শ হিজরীর পর বিখ্যাত যত উলামায়ে কেরাম এসেছেন তাঁদের অধিকাংশই মিলাদ-কিয়াম করেছেন। মিলাদ-কিয়ামের উপর বই-পুস্তক লিখেছেন এবং এটা সওয়াবের কাজ মনে করে মানুষকে পালন করতে উৎসাহিত করেছেন।
মিলাদ-কিয়ামে যদি গুনাহের কোন কাজ প্রবেশ না করে তাহলে তা জায়েয। কিন্তু যদি গোনাহের কোন কাজ প্রবেশ করে তাহলে তা নাজায়েয ও অবৈধ। সাধারণত মিলাদ-কিয়ামে যা করা হায় তা’ নিম্নরূপ: কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ শরিফ পাঠ, কাসিদা পাঠ, ইস্তিগফার, দোয়া, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী আলোচনা।

বর্তমান সময়ে যে সব ওলামায়ে কেরাম মিলাদ-কিয়ামের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাঁরা মূলত সেই সব মিলাদ-কিয়ামের কথা বলেন যাতে গুনাহের কাজ রয়েছে। আকিদাগত ভ্রান্তি রয়েছে। আর যারা মিলাদ-কিয়ামের পক্ষে কথা বলেন, তাঁরা মূলত বৈধ পন্থায় গুনাহের কাজ এড়িয়ে যে মিলাদ-কিয়াম করা হয় , তার কথা বলেন। উভয়ের উদ্দেশ্য এক। তাই আমরা সবাইকে আহŸান করবো কেউ যেন কারো বিপক্ষে অহেতুক উস্কানি মূলক কথা না বলি। সকলে সকলের প্রতি সম্মানবোধ রেখে নিজ নিজ ধর্মীয় কাজ করে যায়। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন। আমীন!

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি এহসানুল হক জিলানী আজ খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেছেন, মহান আল্লাহ তায়ালা মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পৃথিবী বাসীর জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন "নবীজী আমি আপনাকে বিশ্ব জগতের জন্যে রহমত বানিয়ে পাঠিয়েছি”। অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গোটা স্বত্তাটাই যেন রহমতে ভরপুর। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মতের প্রতি এতই দরদ ও মায়া ছিল যে, উম্মত কিভাবে জাহান্নাম থেকে নাজাত পায়। পেশ ইমাম বলেন, কারণ একজন মানুষের সবচেয়ে বড় সফলতা ও কামিয়াবী হলো জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করা। তাইতো "আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন তোমরাতো জাহান্নামের গর্তের কিনারায় যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলে আল্লাহ তায়ালা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে তোমাদেরকে রক্ষা করেছি। হাদীস শরীফে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন" আমি তোমাদের কোমর ধরে ধরে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করেছি। অতএব মানুষের দুনিয়া ও পরকালের সফলতা একমাত্র রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ অনুসরণ-অনুকরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে।

ঢাকার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতিব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী জুমার বয়ানে বলেন, একজন মুসলমানের জন্য স্বীয় বংশ এবং বংশীয় পূবপুরুষদেরকে জানা যত না জরুরি, তার চেয়ে বেশি জরুরি মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা,) কে জানা। কারণ তিনি হলেন মহান আল্লাহর প্রিয়তম পয়গম্বর এবং সমস্ত নবী-রাসুলগণের দলপতি। তিনি পৃথিবীতে শুভাগমন করেছেন সকল নবী-রাসুলের পরে অথচ তাঁর মর্যাদা সবার উপরে। গভীর মনযোগের সাথে হযরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এর সীরাত পড়া-শুনা করলে ইনশাআল্লাহ পাঠকের মন বিগলিত হবে এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসা জন্ম নিবে, কেননা মানবজীবনে পরিবর্তন ও বিপ্লব সৃষ্টি করার মত অসংখ্য উপাদান বিদ্যমান প্রিয় নবী (সা.) এর সীরাতে তাইয়্যিবায়। আজকের দুনিয়াতে এই জায়গাটাতে চরম শৈথিল্য প্রদর্শিত হচ্ছে। যার কারণে ঘটছে একের পর এক মহানবী (সা.) এর অবমাননার ঘটনা। যা শুধু দুঃখজনকই নয় বরং অবমাননাকারীর জন্য রয়েছে কুরআন=সুন্নাহর মধ্যে আল্লাহর লানত ও কঠিনতম শাস্তির হুশিয়ারি। পবিত্র কুরআনের অন্যতম তাফসীরগ্রন্থ তাফসীরে মাজহারীতে সূরা আহজাবের ৫৭ নং আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, কেউ যদি হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে কোন ভাবে কষ্ট দেয় এবং তাঁর সত্তা অথবা গুণাবলীতে প্রকাশ্যে কিংবা ইঙ্গিতে কোন প্রকার দোষ বের করে তাহলে সে কাফের হয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেশ ইমাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ