পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় গতকাল শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, সদ্যসৃষ্ট লঘুচাপটি ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করে ঘনীভূত এবং নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। অনেকদিন যাবত বঙ্গোপসাগরের পানির উপরের স্তরে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। যা সমুদ্রে নিম্নচাপ-ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ারও ক্ষেত্রে সহায়ক।

এখন মধ্য-কার্তিক মাস। সাধারণত এ সময়ে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ-নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়। এরপর ধাপে ধাপে ঘনীভ‚ত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার আশঙ্কা থাকে। যা ‘কার্তিকের তুফান’ হিসেবে অতীতকাল থেকেই এদেশে পরিচিত। নভেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে একাধিক নিম্নচাপ সৃষ্টি এবং এর মধ্য থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কার কথা দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। সর্বশেষ গত ২০ মে ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস ‘আমফান’ এবং গত বছরের ৯ নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ ভারতের উপক‚ল হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানে।

এদিকে আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বৃষ্টিবাহী দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশ থেকে পুরোপুরি বিদায় নিয়েছে। এ বছরের গত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দীর্ঘস্থায়ী সক্রিয় মৌসুমী বায়ু প্রচুর বৃষ্টি ঝরিয়ে বিলম্বে বিদায় নিল। মধ্য-কাতিকে তথা হেমন্তের শুরুর দিকে বর্তমানে দেশের অনেক স্থানে স্বাভাবিক শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করছে। উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অনেক জেলায় ভোরে হালকা কুয়াশা পড়ছে। মাঝরাত থেকে হালকা শীত অনুভ‚ত হচ্ছে। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ১৬.৪ ডিগ্রি সে.। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সৈয়দপুরে ৩৪.৬ ডিগ্রি সে.। ঢাকার পারদ সর্বোচ্চ ৩১.৬ এবং সর্বনিম্ন ২৪.১ ডিগ্রি সে.।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগে হালকা থেকে মাঝারি ও ভারী বর্ষণ হয়েছে। এ সময় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় নোয়াখালীতে ১১৯ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকা, সিলেট, বরিশাল ও খুলনায় বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বৃষ্টি ঝরেনি।
আজ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত এবং রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে।

পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে।