Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরাকান আর্মির হামলায় বহু সেনা হতাহত

রেডক্রসের বোটে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হামলা, চালক নিহত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

মিয়ানমারের পঞ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের রাথেদং টাউনশিপের কাছে অভ্যন্তরীণ বাস্তচ্যুতদের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক রেডক্রসের একটি বোটের চালককে গুলি করে হত্যা ও আরো তিনজনকে আহত করেছে দেশটির নৌবাহিনী। টাউনশিপটির কাছে নদীতে বুধবার এই ঘটনা ঘটে। বোটটি রাজ্যের রাজধানী সিত্তুই থেকে রেডক্রসের ত্রাণসামগ্রী নিয়ে বুধবার সকালের দিকে রাথেদংয়ের কাছে মাইয়ু নদীতে পৌঁছে। তখনই নৌবাহিনী এর ড্রাইভারকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে একজন নিহত ও তিনজন গুরুতর আহত হয়। আহতদেরকে সিত্তুই জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের একজন উ মং থান ওয়াই বলেন, নৌবাহিনী গুলি শুরু করার পর সে ও তার সঙ্গীরা নদীতে ঝাপিয়ে পড়ে। এরপর নৌবাহিনীর সদস্যরা বোটটি জ্বালিয়ে দেয়। অপরদিকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রাথেদং ও মংডু টাউনশিপের মাঝামাঝি জায়গায় অস্থায়ী সেনা চৌকি ও পুলিশের ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে আরাকান আর্মি (এএ) বেশ কয়েকজনকে হত্যা ও অনেককে আহত করেছে। সোমবার সকালের দিকে এই হামলা চালানো হয়। সেনামুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, এএ যোদ্ধারা রকেট-চালিত গ্রেনেড (আরপিজি) দিয়ে ইন দিন গ্রামের কাছে মাইয়ু পাহাড়ের পাদদেশে একটি অস্থায়ী সেনাচৌকির উপর হামলা চালায়। এছাড়া রাথেদং টাউনশিপের আতেত নান ইয়ার গ্রামের কাছে সীমান্ত পুলিশের একটি ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয়। তিনি ইরাবতিকে বলেন, সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে এএ সেনা চৌকিতে আরপিজি নিক্ষেপ করে। দুই পক্ষের মধ্যে প্রায় আধাঘন্টা যুদ্ধ চলে। এরপর এএ পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। এসব হামলায় সরকারি সেনাদের বেশ কয়েকজন নিহত ও আহত হয়েছে। মৃত্যুর বিস্তারিত সংখ্যা তিনি উল্লেখ করেননি। মাইয়ু পাহাড়ের পাশে রাথেদং ও মংডু টাউনশিপ সংযোগকারী একটি পার্বত্য পথে এই সংঘর্ষ হয়। পাহাড়ের দুই পাশেই অস্থায়ী চৌকি বসিয়েছিলো সরকারি বাহিনী। রাথেদংয়ের এক অধিবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন: মাইয়ু সড়কে সংঘর্ষ হয়। পার্বত্য সড়কে জাপানি পাহাড় নামে একটি জায়গা আছে। পাহাড়ে সেনা চৌকি ও আতেত নান ইয়ার গ্রামে পুলিশ ফাঁড়িতে সংঘর্ষ হয়। এটি থাজিন মিয়াইং ও নিয়াউনবিনলা গ্রামপুলিশের ফাঁড়ি। এসব হামলায় ৫০ জনের মতো এএ যোদ্ধা অংশ নেয় বলে সেনা মুখপাত্র জানান। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি বাহিনীর উপর আকস্মিক হামলা চালানোর জন্যও এএ-কে দায়ি করেন তিনি। গত ১৩ অক্টোবর রাথেদং টাউনশিপের আংথারজি গ্রামের কাছে পাহাড়ি এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও এএ-র মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে মিয়ানমার বাহিনীর সহায়তায় জঙ্গিবিমান থেকে গোলাবর্ষণ করা হয় বলে গ্রামবাসীরা জানান। সেখানে উভয় পক্ষে ব্যাপক হতাহত হয়। ৩ থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত আংথারজি গ্রামের কাছে পাহাড়ি এলাকায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষে হতাহতের খবর পাওয়া যায়। রাখাইন এথনিক কংগ্রেস জানায়, গত দুই মাসে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষের কারণে কিয়াকতাউ, রাথেদং ও মারাউক-উ টাউনশিপ থেকে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। ২০১৮ সাল থেকে চলা সংঘর্ষে ২২৬,০০০ মানুষ বাস্তচ্যুত হয়েছে। রাখাইন রাজ্য বাদে সারাদেশে এক তরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর আগে এএ-কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে মিয়ানমার সরকার। মন্তব্যের জন্য এএ-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। দি ইরাবতী, এসএএম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেডক্রস-বোট
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ