Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবি প্রফেসর জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলা

‘আসসালামু আলাইকুম’ এবং ‘আল্লাহ হাফেজ’ নিয়ে কটাক্ষ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি বিভাগের প্রফেসর জিয়া রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে এ মামলা দু’টি দায়ের করা হয়। ‘আসসালামু আলাইকুম’ ও ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলাকে জঙ্গিবাদের চর্চা বলে মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে উভয় মামলাতেই।

এর আগে গত ২২ অক্টোবর ড. জিয়া রহমানকে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত’ ও ‘দৈনিক আল ইহসান’ সম্পাদক মুহম্মদ মাহবুব আলম। তার পক্ষে অ্যাডভোকেট মুহম্মদ শেখ ওমর শরীফ এ নোটিশ দেন। গতকাল মুহম্মদ মাহবুব আলম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। অপর মামলাটি করেন অ্যাডভোকেট ইমরুল হাসান। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলা ও ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলাকে গর্হিত, নিন্দনীয়, জঘন্য ব্যাখ্যা করেন অধ্যাপক জিয়া রহমান। এসবকে জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করেন তিনি। সম্প্রতি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের ‘উপসংহার’ নামক টক-শো’তে ‘ধর্মের অপব্যাখ্যায় জঙ্গিবাদ’ বিষয়ক আলোচনায় মুসলিমদের শুদ্ধ উচ্চারণে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলা ও ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলাকে গর্হিত, নিন্দনীয়, জঘন্য ব্যাখ্যা করেন অধ্যাপক জিয়া রহমান।

অ্যাডভোকেট শেখ মুহম্মদ ওমর শরীফ মামলার বিষয়ে বলেন, সম্প্রতি ডিবিসি নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলের ‘উপসংহার’ শিরোনামের টক-শো’তে ‘ধর্মের অপব্যাখ্যায় জঙ্গিবাদ’ বিষয়ক আলোচনায় মুসলিমদের শুদ্ধ উচ্চারণে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলা ও ‘আল্লাহ হাফেজ’ বলাকে গর্হিত, নিন্দনীয়, জঘন্য ব্যাখ্যা করে এসবকে জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জিয়া রহমান। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের যেকোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রয়েছে। সালাম আদান-প্রদান সহিভাবে করা ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সালাম আদান-প্রদানের জন্য পবিত্র কোরআন ও হাদিস শরীফে বহুবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

মামলায় পবিত্র কোরআনের তিনটি আয়াতের বাংলা অনুবাদসহ কয়েকটি হাদিস সংযুক্ত করা হয়েছে। এতে বলা হয়, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) প্রদত্ত নির্দেশ ও শিক্ষা অনুযায়ী শুদ্ধভাবে সালাম দেয়াকে জিয়া রহমান অত্যন্ত গর্হিত, নিন্দনীয়, বেয়াদবিপূর্ণ ও জঘন্যভাবে জঙ্গিবাদের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। এসব মন্তব্যের দ্বারা বাংলাদেশের মুসলিমদের শুদ্ধভাবে ধর্মীয় ইবাদাত পালনের মৌলিক অধিকারকে খর্ব করতে চেয়েছেন। এই ধরনের মন্তব্য ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক। এসব মন্তব্য মুসলিম নাগরিকদের ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত হেনেছে।

ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে প্রযোজ্য শাস্তির কথা উল্লেখ করে অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ ওমর শরীফ জানান, ড. জিয়া রহমান ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ২৮ ও ২৯ ধারায় অপরাধ করেছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮-এর ২৮ ধারায় বলা হয়েছে-(১) যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে ধর্মীয় মূল্যবোধ বা অনুভূতিতে আঘাত করিবার বা উস্কানি প্রদানের অভিপ্রায়ে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন বা করান, যা ধর্মীয় অনুভূতি বা ধর্মীয় মূল্যবোধের ওপর আঘাত করে, তাহলে ওই ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। (২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বছর কারাদন্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লাখ টাকা অর্থদন্ডে, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

একই আইনের ২৯ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মানহানিকর তথ্য প্রকাশ বা প্রচার করেন, তা জন্য তিনি অনধিক ৩ (তিন) বছর কারাদন্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লাখ টাকা অর্থদন্ডে, বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। একইভাবে, এই মন্তব্যসমূহ বাংলাদেশের দন্ডবিধি, ১৮৬০-এর ২৯৫(ক) ধারার অধীনে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

জিয়া রহমান যেহেতু ডিবিসি নিউজ টেলিভিশন চ্যানেলের টক-শো’তে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রদান করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন, তাই নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে তাকে এসব বক্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেননি। এ কারণে আমরা সংশ্লিষ্ট আদালতে মামলা রুজু করেছি আইনি প্রতিকার লাভের জন্য। আশা করছি আমরা ন্যায় বিচার পাব।



 

Show all comments
  • Shah Newaz ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    আমার কাছে খুব অবাক লাগে এই রকম গাধার বাচ্চা গাধা কি ভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয় !
    Total Reply(0) Reply
  • Mustafa Nazmus Sakib ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    akhono grefter hoy nai.
    Total Reply(0) Reply
  • Rahat Rahman ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    এগুলা কোথায় থেকে আসে? যার কাছে ধর্মের সাধারণ জ্ঞান নেই।সেই আসছে ধর্মের অপব্যখ্যা দিতে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu chowhan ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    Really he should be punish,what ever his beleave or practices thats his personal but he has no right to insult or harm others faith...
    Total Reply(0) Reply
  • জন্মভুমি ছাতক ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    গলটা মনে হয় ভুয়া ছাটিফিকেট দেখিয়ে চাকরি নিয়েছে তাই সুদধো সহি সবদ তার ভালো লাগে না।
    Total Reply(1) Reply
  • নীল আকাশ ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    Zia is basically a stupid guy. Can never be a good teacher who can say such bad things on sensetive religion matter. May Allah SWT give him Hedayet.
    Total Reply(0) Reply
  • রমজান আলি ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 0
    আমারা মুসলমানগন ঈমানী বা মানসিক ভাবে এতই দুর্বল যে ইসলামের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বল্লে আমাদের অন্তরে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া হয়না। এবং এই জন্যই সারা বিশ্বে আমাদের এই অবস্থা। এখান থেকে কি আমাদের মুক্তি নাই ???
    Total Reply(0) Reply
  • রাজিয়া সুলতানা ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 0
    এই বেটা ইসলামের শত্রু। এ জন্য কঠিন ব্যাবস্থা নেয়া জরুরি। এই বেটাকে যে বা যারা ঐ অনুষ্ঠানে নিচে তাদেরও সম্পৃক্ততা আছে । সময় আছে খালেস তওবা না করলে জাহান্নামের আগুন যথেষ্ট।
    Total Reply(0) Reply
  • মো: নাজিম উদ্দিন ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০৩ এএম says : 0
    এটা নতুন কিছু নয়। এরা নিজেরা পথভ্রষ্ট অন্যকেও পথভ্রষ্ট করছেন। এদের আর কিছু থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিদ্যাপীঠে শিক্ষকতার যোগ্যতা নেই। এ যেন নব্য আবুজেহেল মূর্খ। প্রাথমিক স্তরের একটা ছাএ ও স্লামালীকুম এবং আছ্ছালামুআলাইকুম এর পার্থক্য সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ জাকির হোসেন ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ২:৩৯ এএম says : 0
    ফ্রান্স এ পাঠিয়ে দেওয়া হওক।
    Total Reply(0) Reply
  • Md.main uddin sarker ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১১:৩৪ এএম says : 0
    Why this stupid criticised islam? If islam does not like,stop to say rubbish. He reads but not learn.he is a blackship.
    Total Reply(0) Reply
  • Md shafiqur rahman ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:০৫ পিএম says : 0
    She Manus namer kolonko thake pabnay patano huok.
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ ইমরান আখন্দ ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ১:৫৯ পিএম says : 0
    এই ব্যক্তিটিই হল আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী। এর মত লোকদের হাত থেকে আওয়ামী লীগকে মুক্ত করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ রবিউল ইসলাম ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ২:০৬ পিএম says : 0
    একজন শিক্ষিত লোকের এরকম মন্তব্য করা একেবারেই উচিত হয়নি। ভবিষ্যতে এই ধরনের লোককে টকশোতে না ডাকার জন্য অনুরোধ করছি। যা মানুষকে কষ্ট দেয় এমন বিষয় নিয়ে টকশো না করার জন্য টিভি চ্যানেল গুলোর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • abul kalam ২৬ অক্টোবর, ২০২০, ৬:০৭ পিএম says : 0
    এসব লোক আদতে মূর্খ, ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের কলন্ক, অবাক লাগে এখনো কিভাবে সে মাষ্টার আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাগরট ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ২:৫৮ এএম says : 0
    এই কালপ্রিট টাকে তারাতাড়ি গ্রেফতার করার জোর আবেদন জানাচ্ছি।
    Total Reply(0) Reply
  • Akbar Hulala ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ৫:২৬ পিএম says : 0
    দুঃখ লাগে যখন একজন মুসলিম নামধারী সেলামালেকুম আর আস,সালামুআলাইকুম এর পার্থক্য বুঝেনা। আবার তিনি যদি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক।
    Total Reply(0) Reply
  • নাজানা ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ৫:৩৫ পিএম says : 0
    এ বেটা অধম। সরকার থেকে সুযোগ নেওয়ার জন্য এ বক্তব্য দিয়েছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md.Zihan Babu ২৭ অক্টোবর, ২০২০, ১১:২৮ পিএম says : 0
    Rubbish.......
    Total Reply(0) Reply
  • MUHAMMAD ABDUR RAZZAK RIPON ২১ নভেম্বর, ২০২০, ৫:৩২ পিএম says : 0
    REALLY A MATTER OF SORROW.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ