বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চলতি মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমনে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের করোনা পরিস্থিতি আবার নাজুক আকার ধারন করেছে। বৃহস্পতিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও পিরোজপুরে সংক্রমন বৃদ্ধির ফলে দক্ষিণাঞ্চলে নুতনকরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৮-এ উন্নীত হয়েছে। যা গত ৭ সেপ্টেম্বরের পরে সর্বোচ্চ সংক্রমন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে শুধু বরিশালের সংখ্যাটাই ২৪। জেলাটিতে আগের ২৪ ঘন্টায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৫। বরিশালে আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিনিয়তই স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বশীলদের দুঃশ্চিন্তায় রাখছে। এরফলে দক্ষিণাঞ্চলে কোভিড-১৯ রোগীর মোট সংখ্যাটা দাড়াল ৮ হাজার ৭৪৩ জনে। আর স্বাস্থ্য বিভাগের অনুমিত হিসেবনুযায়ী গত ২৪ ঘন্টায় ৪৩ জন সহ মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ১৪৩ জন। সুসথ্যতার হার ৯৩.৫৪%।
গত দেড় মাসের সর্বোচ্চ সংক্রমন নিয়ে বরিশাল জেলার পরিস্থিতি ইতোমধ্যে যথেষ্ঠ দুূর্ভাবনার কারন হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে। দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট আক্রান্ত ৮,৭৪৩ জনের মধ্যে বরিশাল জেলার সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩,৭৩৫-এ। যা দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্তের প্রায় ৪৫%। অথচ এ অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ২৫%-এরও কম মানুষ বাস করেন বরিশাল জেলায়। অপরদিকে বরিশাল জেলার মোট আক্রান্তের মধ্যে ৩ হাজারেরও বেশী মহানগরীতে। যা দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্তের ৩৫%-এরও বেশী। অথচ দক্ষিণাঞ্চলের মোট জনসংখ্যার ৫%-এর কিছু বেশী মানুষ বাস করেন এ নগরীতে। মৃত্যুর পরিসংখ্যানেও বরিশাল জেলা ও মহানগরীর অবস্থা উদ্বেগজনক। এপর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে মোট মৃত ১৭৫ জনরে মধ্যে বরিশালেই মারা গেছেন ৭২ জন। যা এ অঞ্চলের মোট মৃতের প্রায় ৪০%। মহানগরীতে মৃতের সংখ্যাটাও ৫০-এর কাছে। এখনো দক্ষিণঅঞ্চলে মৃতের হার ২.০১%।
কিন্তু এ উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসন সহ স্বাস্থ্য বিভাগ ও নগর প্রশাসনের তেমন কোন উদ্যোগ লক্ষনীয় নয়। আসন্ন শীতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ইতোমধ্যে সয়ং প্রধানমন্ত্রী সকলকে সতর্ক করে দিয়েছেন। কিন্তু সে আলোকেও বরিশাল মহানগরী সহ জেলায় তেমন কোন উদ্যোগ নেই। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘বর্তমান উদাশীনতা বরিশাল মহানগরী সহ জেলাটিতে আরো বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।’
অপরদিকে দক্ষিণাঞ্চলে নমুনা পরিক্ষায়ও তেমন কোন ইতিবাচক দিক লক্ষণীয় নয়। বৃহস্পতিবার সকালের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে ১৩৫ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩১ জনের ও ভোলার ল্যাবে ২৯ জনের মধ্যে ৫ জনের করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে। এ অঞ্চলে এখনো সনাক্তের হার ১৭.১১%।
এদিকে পটুয়াখালীতেও আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের শূণ্য থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ জনে উন্নীত হয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১,৪৮৬ জনের মধ্যে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভোলাতেও আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের ৪ থেকে ৫ জনে উন্নীত হয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ৭৭১ জন আক্রান্তের মধ্যে ৬ জনের মারা গেছেন । পিরোজপুরে টানা ৪ দিন কোন আক্রান্ত না থাকলেও বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে নতুন করে ৩ জনের আক্রান্তের কথা জানান হয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ১, ১০২ জন আক্রান্তের মধ্যে ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বরগুনাতে আক্রান্তের সংখ্যা গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের মত একজনই রয়েছে। ফলে জেলাটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯২৭ জনে উন্নীত হল। এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৯ জনের। ঝালকাঠীতে ৪৮ ঘন্টা পরে বৃহস্পতিবার ১ জনের কোভিড-১৯ আক্রান্তের কথা বলেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলাটিতে এ পর্যন্ত ৭২২ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ছিল আগের দিনের ৯ জনের স্থলে ১৫ জন। এসময়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে অবশ্য আগের দিনের ১৭ জনের স্থলে ১৫ জন চিকিৎসাধীন ছিলেন। আর আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন ছিলেন ১০জন। যে সংখ্যাটা আগের দিন ছিল সাত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।