নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : স্বল্পমূল্যে ও সহজ কিস্তিতে কারখানা করার নামে প্লট বরাদ্ধ নিয়ে লে-আউট প্ল্যান বহির্ভূত স্থাপনাসহ আবাসিক ভবন নির্মাণ করে পারিবারিকভাবে বসবাস, কেউ ফ্যামেলি, মেস ভাড়া দিয়ে আবাসিক এলাকায় পরিণত করছে কুমিল্লার বিসিক শিল্পনগরীকে। প্লট মালিকদেরকে বিসিক এলাকায় আবাসিক ভবন গড়ে তুলে তাতে বসবাস পরিহার করতে কর্তৃপক্ষের ইতিপূর্বে পাঠানো কয়েকদফা নোটিশও কার্যকর হচ্ছেনা। বিসিক কর্তৃপক্ষ ও প্রকৃত শিল্প উদ্যোক্তারা দিন দিন আবাসিক ভবন নির্মাণের চাহিদা ও অস্তিত্ব বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে কুমিল্লা শিল্পনগরীর জন্য হুমকি বলে মনে করছেন।
কুমিল্লায় শিল্পের প্রসার ও বেকার সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে ১৯৬০ সালের শেষের দিকে নগরীর আশোকতলায় ৫৪ দশমিক ৩৫ একর ভূমিতে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশন-বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই এলাকায় ১৫৫টি প্লটের মধ্যে বরাদ্দকৃত শিল্পপ্লট রয়েছে ১৪৯টি। প্রশাসনিক, আবাসিক ও ওয়াটার ট্যাংক মিলে রয়েছে ৬টি। বিসিক ঘুরে দেখা গেছে, প্রকৃত শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠিত প্রায় একশ’ শিল্প ইউনিট ছাড়া বাকী প্লটগুলোতে গড়ে উঠা স্থাপনায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেরাই পারিবারিকভাবে বসবাস এবং কেউ কেউ শিল্প কারখানা বন্ধ রেখে তাতে বাসা ভাড়া ও মেস বাসা ভাড়া দিয়ে আবাসিক এলাকায় পরিণত করেছেন। আবার ভাঙ্গারি দোকান, অটোরিকশার গ্যারেজও ভাড়া দিয়েছেন অনেকে।
শিল্পকারখানার নামে প্লট নিয়ে তা বাসগৃহে পরিণত করার কারণ উল্লেখ করে ৫ বছর আগে বিসিক কুমিল্লা কার্যালয় থেকে ওইসব প্লট মালিকদের নোটিশ দেয়া হয়েছিল। নোটিশে বলা হয়েছিল, যে সকল শিল্প মালিক শিল্প কারখানায় অবৈধভাবে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন ও বাসা ভাড়া দিয়েছেন তা দ্রæত সময়ের মধ্যে পরিহার করতে হবে। অন্যদিকে যে সকল শিল্প কারখানায় দীর্ঘদিন যাবত অব্যবহৃত খালি জায়গা পড়ে আছে তা জরুরী ভিত্তিতে সদ্বব্যবহারের পদক্ষেপ নিতে হবে। অনুমোদিত খাত বহির্ভূত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিসিকের অনুমোদন নিয়ে চালু করতে হবে। তাছাড়া যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে কারখানা ভাড়া দিয়ে রেখেছে সেগুলোকেও বিসিকের নিকট থেকে অনুমোদন করে নিতে হবে। শিল্পনগরীর অভ্যন্তরে অবৈধ দোকান ও টি-স্টল সরিয়ে নিতে হবে। নোটিশে আরও উল্লেখ ছিল, যে সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে রুগ্ন অবস্থায় বন্ধ রয়েছে সেগুলো শীঘ্রই চালু করতে হবে। অথচ গত ৫ বছরেও বিসিক কর্তৃপক্ষের ওই নোটিশের কোনটিই কার্যকর হয়নি। কেবল তাই নয়, বিসিক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এরকম অর্ধশতাধিক নোটিশ প্লট মালিকদেরকে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশন-বিসিক, কুমিল্লার একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, ‘কুমিল্লা শিল্পনগরীতে কিছু আবাসিক প্লট রয়েছে। এটা বিসিক আইনের পরিপন্থি। আবার কিছু কিছু ফ্যাক্টরি রয়েছে সেখানে আবাসিকভাবে যারা থাকেন তারা নিজের ফ্যাক্টরিতে কাজও করেন। এছাড়াও যারা শিল্প কারখানা না করে অথবা কারখানা করেছেন কিন্তু তা চালু না রেখে সেখানে আবাসিকভাবে বসবাস করছেন সেধরণের প্লট মালিকদের একাধিকবার নোটিশের মাধ্যমে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন অ্যাকশনে যাওয়া যাচ্ছে না বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে। তবে বিসিক রক্ষার জন্য আবাসিক ভবন সরিয়ে নেয়া উচিত। প্লট মালিকদের বিসিকের স্বার্থের কথা ভেবে অন্তত এটা করা উচিত। কেননা এভাবে আবাসিক ভবনের সংখ্যা বা আবাসিক পরিবার দিন দিন বাড়তে থাকলে কুমিল্লার বিসিক শিল্পনগরী হুমকির মুখে পড়বে।’
শিল্প কল-কারখানা করার নামে প্লট বরাদ্ধ নিয়ে লে-আউট প্ল্যান বর্হিভ‚ত স্থাপনাসহ আবাসিক ভবন নির্মাণ করে বসবাস, কেউ কেউ ফ্যামেলি, মেস ভাড়া দিয়ে আবাসিক এলাকায় পরিণত করছে কুমিল্লার বিসিক শিল্পনগরীকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।