নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বছরটা এমন যে কোনো কিছুই স্বাভাবিক না। করোনায় বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর মিছিল, ক্রীড়াঙ্গণে হাহাকার। তবে লাল দুর্গে অবশ্য এসব খাটেনি। দাপুটে এক জয়ে নোভাক জোকোভিচকে উড়িয়ে রজার ফেদেরারের ২০ গ্র্যান্ডস্ল্যামের রেকর্ডে ভাগ বসালেন রাফায়েল নাদাল।
প্যারিসে এটিপি র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দুই তারকার মধ্যে লড়াই জমল না তেমন। ম্যাচের প্রথম গেমেই প্রতিপক্ষের সার্ভিস ব্রেক করলেন নাদাল। জিতলেন জোকোভিচের পরের দুই সার্ভিস গেমও। ৬-০ গেমে প্রথম সেট জয়ের দাপুটে পারফরম্যান্স টেনে নিলেন শেষ পর্যন্ত। প্রথম গেমের মতো দ্বিতীয়টিও জিতলেন অনায়াসে, ৬-২। সার্বিয়ান তারকা যা একটু লড়লেন তৃতীয় সেটে। কিন্তু নাদালের খুনে পারফরম্যান্সের জবাব জানা ছিল না তার। ৭-৫ গেমে জিতে ফরাসি ওপেনের শিরোপা ধরে রাখেন নাদাল। সব মিলিয়ে ইতিহাস গড়তে ক্লে কোর্টের রাজা সময় নেন মাত্র ২ ঘণ্টা ৪১ মিনিট। তাতে ফলটা দাঁড়ায় ৬-০, ৬-২, ৭-৫।
রোঁলা গাঁরোয় ১০২তম ম্যাচে এসে ১০০তম জয়, ১৩তম শিরোপা- নাদাল গতপরশু আবারও প্রমাণ করলেন ফ্রেঞ্চ ওপেনের লাল মাটি তার রাজপাট। সেটিও এমনভাবে, ফাইনাল দেখে মনে হয়েছে, ৩৪ বছরের ‘এল ম্যাটাডোর’ যেন ফিরে গিয়েছিলেন কুড়ি বছর বয়সে! একটা গেম জিততে ৫৪ মিনিট লেগেছে সার্বিয়ান ‘জোকার’-এর। অন্য প্রান্তে ১২টি শিরোপা আর ৯৯ জয়ের পর নাদাল জমা করে রেখেছিলেন ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স।
ক্যারিয়ারে এর আগে বড় টুর্নামেন্টের ফাইনালে কখনো কোনো সেটে ‘হোয়াইটওয়াশড’ হননি জোকাভিচ। নাদালের কারণে পরশু তাঁকে এ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আর স্প্যানিশ কিংবদন্তি টের পেয়েছেন ফেদেরারের অনুভূতি- ২০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপা জয়ের স্বাদ। ওপেন যুগে প্রথম পুরুষ খেলোয়াড় হিসেবে কোনো সেট না হেরে চারটি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ের নজিরও গড়লেন নাদাল- এবার লাল দুর্গের মুকুট জিতে।
এ বছর নাদালের এটি প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়। ফরাসি ওপেনে টানা চতুর্থ ও রেকর্ড ত্রয়োদশ শিরোপা জিতলেন নাদাল। বাকি সাত গ্র্যান্ড স্ল্যাম শিরোপার চারটি জিতেছেন ইউএস ওপেনে, দুটি উইম্বলডনে আর একটি অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। এমন অসাধারণ জয়ের পর নাদাল বললেন, ‘এখানে একটি জয়ই আমার কাছে সবকিছু। সত্যি বলতে, ২০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয় ও রজারের রেকর্ড ছোঁয়া নিয়ে ভাবছি না। আমার কাছে এটা শুধুই আরেকবার রোলাঁ গারোঁ জয়। ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলোর বেশিরভাগ এখানে কাটিয়েছি আমি। এখানে খেলতে পারাটাই আমার জন্য অনুপ্রেরণার। এই শহর ও এই কোর্টের সঙ্গে আমার যে ভালোবাসার গল্প, তা কখনও ভুলে যাওয়ার নয়।’
শিরোপায় চুমু আঁকার পথে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে রোলাঁ গারোঁয় শততম ম্যাচ জয়ের কীর্তিও গড়েছেন নাদাল। একটা জায়গায় এগিয়ে গেছেন নিজের ১৮তম শিরোপার জন্য লড়াই করতে নামা জোকোভিচের চেয়ে; গ্র্যান্ড স্ল্যামের ফাইনালে ৯ বারের মুখোমুখি লড়াইয়ে এটা তার পঞ্চম জয়। সব মিলিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য এখনও এগিয়ে আছেন জোকোভিচ; ৫৬ বারের দেখায় নাদালের এটি ২৭তম জয়, জোকোভিচের ২৯। তবে ক্লে কোর্টে গল্প যে ভিন্ন, তা দেখল টেনিস বিশ্ব। জোকোভিচের কণ্ঠেও ফুটে উঠল তাই, ‘আজ তুমি দেখালে, কেন তুমি ক্লে কোর্টের রাজা।’
টেনিস কোর্টে তারা প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী, কোর্টের বাইরে দুজনের সম্পর্ক দারুণ। সেটির আরেক দফা নমুনা দেখা গেল ফেদেরারের রেকর্ডে নাদাল ভাগ বসানোর পর। নাদালকে স্তুতির জোয়ারে ভাসালেন ফেদেরার। বন্ধু নাদালকে অভিনন্দন জানাতে সময় নেননি ফেদেরার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার প্রতিক্রিয়ায় মিশে থাকল নাদালের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসা, ‘ব্যক্তি হিসেবে ও একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে, বন্ধু রাফার প্রতি বরাবরই সর্বোচ্চ শ্রদ্ধাবোধ আছে আমার। বছরের পর বছর ধরে আমার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে, আমি মনে করি, পরস্পরকে আমরা ধাবিত করেছি আরও ভালো খেলোয়াড় হয়ে উঠতে। এজন্যই, তার ২০তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের পর তাকে অভিনন্দন জানাতে পারা আমার জন্য সত্যিকারের সম্মান।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।