Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্থিরতা বৃদ্ধির আশংকায় কাশ্মীরে আবার কারফিউ

প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সান্ধ্য আইন আর কঠোর বিধিনিষেধের যাঁতাকলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে জনজীবন
ইনকিলাব ডেস্ক : আবার কারফিউ বলবত করা হয়েছে কাশ্মিরবাসীর উপর। নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় কাশ্মীরের অনন্তবাগ, সোপিয়ান, বারামুল্লা, অবন্তিপুর, পাম্পোর, পুলওয়ামা, বুড়গ্রাম, চাদুরা, মাগাম, কুঞ্জার, তংমার্গ এবং পট্টান এলাকায় কারফিউ আরোপ করা হয়। গত ৮ জুলাই কাশ্মীরে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের (এইচএম) শীর্ষ কমান্ডার বুরহান মোজাফফর ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে কারফিউ, বনধ এবং বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞায় কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মুক্তির দাবিতে উত্তাল কাশ্মীরের জনজীবন। এই পরিস্থিতির মধ্যে কাশ্মীরের বিভিন্ন অংশে নতুন করে কারফিউ এবং কঠোর বিধিনিষেধ জারি করায় পরিস্থিতি আরো জটিল হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের কাশ্মীর উপত্যকায় ভারত সঞ্চার নিগমের (বিএসএনএল) পোস্টপেইড মোবাইল পরিষেবা ছাড়া বন্ধ রাখা হয়েছে অন্যান্য সংস্থার মোবাইল পরিষেবা। বিধিনিষেধ আরোপ রয়েছে নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রেও। এদিকে বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা বনধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, গত শুক্রবার কাশ্মীর পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মূলত এই বৈঠকে বিরোধীরা কাশ্মীরে ছররা গুলির ব্যবহার বন্ধের প্রস্তাব দেয় বলে প্রাথমিকভাবে খবরে জানা গেছে। ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত লাগাতার হরতালের ডাক দিয়ে রেখেছেন স্বাধীনতাকামী নেতারা। তার মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার হুরিয়ত কনফারেন্স প্রধান সৈয়দ আলী শাহ গিলানি, মীরওয়াইজ ওমর ফারুক এবং অন্য নেতারা শ্রীনগরের ঈদগায় অবস্থিত ‘মাজার-এ শোহাদা’তে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেই চেষ্টা রুখে দেয় পুলিশ। পুলিশ সেই সময় তাঁদের বাধা দেয় এবং আটক করে। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ওই নেতারা নিহত হুরিয়ত নেতা শেখ আবদুল আজিজসহ অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ‘ঈদগাহে চলো’ কর্মসূচির ডাক দেন। এই ঘটনার পরই ফের উপত্যকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
হুরিয়ত কনফারেন্সের মিডিয়া উপদেষ্টা আইনজীবী শহীদ-উল ইসলাম জানান, শান্তিপূর্ণভাবে তাঁরা শোভাযাত্রার জন্য বের হলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। সূত্রের খবর, আগের সপ্তাহে নিরাপত্তা বাহিনী এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে জুমার নামাজ শেষে জমায়েতের মাধ্যমে ফের যাতে অশান্তি না ছড়ায়, সেই কারণেই আগেভাগে কারফিউ জারি করা হয়।
এদিকে, শনি ও রোববার ২ দিনব্যাপী উপত্যকার লালচক পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, আগামী ১৬ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার দিন কাশ্মীরের শিশুদের স্বাধীনতা উৎসবে শামিল না হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা। এই পরিস্থিতির মধ্যে গত বুধবার জম্মু-কাশ্মীরের মেডিকেল ও ডেন্টাল হাসপাতালের মেডিকেল ফ্যাকালটি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা সাদা অ্যাপ্রোন পরে অবিলম্বে আইন করে ‘পেলেট গান’ বা ‘ছররা বন্দুক’ ব্যবহার বন্ধ করার দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পেলেট গানের আঘাতে এরই মধ্যে যাদের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, তাদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে তাঁরা চোখ বেঁধে প্রতিবাদ জানান। তবে উপত্যকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দোকানপাট, পরিবহন বন্ধ রয়েছে। ফলে ভোগান্তি বাড়ছে সাধারণ মানুষের। এনডিটিভি, ওয়েবসাইট।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অস্থিরতা বৃদ্ধির আশংকায় কাশ্মীরে আবার কারফিউ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ