Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

স্বাস্থ্যবীমা চালু করেছে বিজিআইসি

প্রকাশের সময় : ১৩ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সরকারের সিদ্ধান্তের পর প্রথম ধাপে মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পলিসি চালু করেছে বেসরকারি বীমা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি (বিজিআইসি)। ম্যাস হেলথ ইন্স্যুরেন্স পলিসির আওতায় স্মার্ট কার্ডের মাধ্যমে প্রায় ৪০০ রোগের প্যাকেজভুক্ত চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। পরিবারপ্রতি সর্বাধিক ৫ জন এই সেবা পাবে।
প্যাকের আওতায় বছরে ১ হাজার ২০০ টাকা প্রিমিয়ামের বিনিময়ে ৫০,০০০ টাকার স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। এছাড়াও ৬০০ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে পরিবারের একজন সদস্য বছরে ২০,০০০ টাকার স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা গ্রহণ করতে পারে।
বাংলাদেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সাইফুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী জানান, সাধারণ মানুষকে অল্প টাকায় স্বাস্থ্য সুবিধা দিতে দেশব্যাপী এই পলিসি চালু করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, পলিসিটির মাধ্যমে সাধারণ মানুষ তাদের স্বাস্থ্য খাতের ব্যয় কমিয়ে আনতে পারবে।
বিজিআইসি কর্তৃপক্ষ জানান, ভৌগোলিক সীমার নিরিখে বাংলাদেশের জনসংখ্যা অনেক বেশি। এই জনগোষ্ঠীর বিশাল অংশ পারিপার্শ্বিক কারণে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি দ্বারা আক্রান্ত। এই ঝুঁকি থেকে জনস্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ‘বিজিআইসি’ চালু করেছে ‘ম্যাস হেলথ ইন্স্যুরেন্স’ বীমা পলিসি। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক কোম্পানির চুক্তিবদ্ধ হাসপাতাল অথবা চিকিৎসাকেন্দ্রে বিনামূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাস্থ্যবীমার আওতায় সুবিধাগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ হাসপাতালে থাকা-খাওয়া ও চিকিৎসা খরচ। সার্জন, অ্যানেসথেটিস্ট, ফিজিশিয়ান, কনসালট্যান্ট, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ফি। অ্যানেসথেসিয়া, রক্ত, অক্সিজেন, অপারেশন থিয়েটার চার্জ, সার্জিক্যাল উপকরণ, ওষুধ, রোগ নির্ণয়ের সামগ্রী, এক্স-রে এবং অনুরূপ ব্যয়সমূহ। হাসপাতালে যাতায়াত বাবদ প্রত্যেকবার ১০০ টাকা এবং বছরে সর্বোচ্চ ১,০০০ টাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওয়া যাবে। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরবর্তী পাঁচ দিন বিনা খরচে ওষুধ এবং প্রথম দুই সন্তানের প্রসবজনিত খরচ পাওয়া যাবে। জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশের বীমা কোম্পানিগুলোর জন্য ম্যাস হেলথ ইন্স্যুরেন্স নামে নতুন এই পলিসি অনুমোদন করে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ।
এসময় প্রস্তাবিত বীমাপত্র চালুর পূর্বে নেটওয়ার্ক হাসপাতালের সঙ্গে শর্ত অনুযায়ী চুক্তি সম্পাদন এবং ওই সব হাসপাতালে স্মার্ট কার্ড ব্যবহারের মেশিন সরবরাহ করার শর্তারোপ করে আইডিআরএ।
একইসঙ্গে দেশব্যাপী এই সুবিধা ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় অন্তত একটি করে হাসপাতাল নেটওয়ার্কের অধীনে আনতে বলা হয়। বিজিআইসি সূত্র জানায়, ম্যাস হেলথ ইন্স্যুরেন্স এক ধরনের স্মার্ট কার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্যবীমা, যা বীমাকারীর সব চিকিৎসা ব্যয় বহন করে। এটি অন্যান্য বীমা পদ্ধতির মতোই একটি বীমা প্রতিষ্ঠান এবং একজন ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর মধ্যে চুক্তি যেখানে বীমা কোম্পানি পলিসিতে নির্ধারিত নিয়ম ও শর্তাবলি সাপেক্ষে একটি নির্দিষ্ট প্রিমিয়ামের বিনিময়ে নির্দিষ্ট ব্যাধিসমূহের স্বাস্থ্যবীমা কভার দিতে সম্মত হয়।
বিজিআইসি জানিয়েছে, এই পলিসির সুবিধা পেতে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নির্দিষ্ট হাসপাতালে কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা থাকতে হবে। তবে দুর্ঘটনাজনিত আঘাত এবং কয়েকটি নির্দিষ্ট চিকিৎসার জন্য এই সময়সীমা প্রযোজ্য নয়। এক্ষেত্রে চিকিৎসাসেবা পেতে বীমা কোম্পানি প্রদত্ত স্মার্ট কার্ড নিয়ে হাসপাতালের হেল্প ডেস্কে যোগাযোগ করতে হবে। তবে কার্ডে নির্ধারিত টাকার পরিমাণ চিকিৎসা খরচের চেয়ে কম হলে, বাকি টাকা কার্ডধারীকে প্রদান করতে হবে।
জানা গেছে, কোনো কারণে স্মার্ট কার্ডটি হারিয়ে গেলে বিজিআইসির কাছ থেকে নতুন কার্ড পাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে কার্ডধারীকে নতুন কার্ড তৈরির খরচ বহন করতে হবে। বিপদকালে স্মার্ট কার্ড আনতে ভুলে গেলে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে কার্ড এনে জমা দিতে হবে। আর প্রতিবার কার্ডের মেয়াদ শেষে নতুন করে নবায়ন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই স্মার্ট কার্ডটি পরিবারের নথিভুক্ত সদস্য ছাড়া অন্য কারো কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্ডটি নিজের কাছেই রাখতে হবে। এছাড়া হাসপাতাল থেকে ছুটির সময় যাতায়াত বাবদ নগদ ১০০ টাকা ও স্মার্ট কার্ডটি চেয়ে নিতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যবীমা চালু করেছে বিজিআইসি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ