Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৭ জুন ২০২৪, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পাচ্ছে আজ

আয়োডিনযুক্ত লবণ আইন ২০২০ চূড়ান্ত খসড়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৫ এএম

নিবন্ধন না করে কেউ কোনো প্রকার লবণ আমদানি, গুদামজাত, ভোক্তাপর্যায়ে পাইকারি সরবরাহ, প্রত্রিক্রয়াকরণ, পরিশোধন বা আয়োডিনযুক্তকরণ কারখানা পরিচালনা করলে ৫ বছরের কারাদন্ড অথবা ২০ লাখ টাকা অর্থদন্ডে অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন। মৌসুমের বাইরে লবণ চাষিদের বিকল্প পেশার বা সংস্থানের ব্যবস্থা থাকবে। এমন বিধান রেখে আয়োডিনযুক্ত লবন আইন, ২০২০ চ‚ড়ান্ত করেছে সরকার। শিল্প মন্ত্রণালয়ের উদ্দ্যোগে নতুন করে এ আইনটি চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। আজ বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে চুড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।এছাড়াও আজকের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সকল মন্ত্রণালয় থেকে কোভিড-১৯ এর আপডেট সংগ্রহ প্রতিবেদন উপস্থাপন হতে পারে।

আজ বুধবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে আইনটি চ‚ড়ান্তভাবে অনুমোদন হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। মন্ত্রিসভায় পাঠানো আইনের প্রস্তাবনায় বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণের গলগন্ড রোগসহ আয়োডিনের অভাবজনিত নানাবিধ রোগ বিবেচনায় লবণে আয়োডিন মিশ্রণ সংক্রান্ত আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ আইন-১৯৮৯ প্রণয়ন করা হয়েছিল। ওই সময়ে প্রণীত আইনে আয়োডিনের ব্যবহার সংক্রান্ত বিধিবিধান ছিলো। দেশের আয়োডিনযুক্ত লবণ খাতের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান আইনটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে যুগোপযোগীর উদ্যোগ নেয় সরকার। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে জানুয়ারিতে মন্ত্রিসভায় ‘আয়োডিন যুক্ত লবণ আইন-২০২০’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন হয়। পরে আইনটি চ‚ড়ান্ত করা হয়। জাতীয় আয়োডিনযুক্ত লবণ কমিটি গঠন, পর্যবেক্ষণ ও বাস্তবায়ন সেল গঠন, লবণ উৎপাদনকারীদের প্রশিক্ষণ প্রদানের বিষয় যুক্ত করা হয়। এছাড়াও লবণ চাষিদের লবণ মৌসুম বহির্ভূত বিকল্প পেশা অন্বেষণ, লবণ তথ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, লবণ গবেষণা ইনষ্ট্রিটিউট স্থাপন ও আয়োডিনযুক্ত লবণ নিশ্চিত করতে মোবাইল কোর্ট আইন-২০০৯ এর প্রয়োগের বিষয়টিও আইনে রাখা হয়।

আইনে বলা হয়েছে, আয়োডিনযুক্ত লবণ বলতে নির্ধারিত মাত্রায় আহার্য এবং মানুষ ও অন্যান্য প্রাণির খাদ্য তৈরিতে ব্যবহার্য আয়োডিনযুক্ত লবণকে বোঝানো হয়েছে। কারখানা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কাজে ব্যবহƒত লবণ কারখানা ও শিল্প লবণ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়োডিনের অভাবজনিত রোগের বিদ্যমান অবস্থা জাতীয় জীবনে আয়েডিনযুক্ত লবণ গ্রহণের পরিমাপ, লবণ উৎপাদন, পরিশোধন,সরবরাহসহ সংশ্লিষ্ট্র অন্যান্য বিষয়সমুহ পর্যবেক্ষণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ সেল গঠন করবে। এ আইনের অধীনে জাতীয়, জেলা ও প্রান্তিক কমিটি নামে ৩টি কমিটি লবনে আয়োডিনযুক্ত করণের বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করবেন। জাতীয় লবণ কমিটি লবণ আয়োডিনযুক্ত করণে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণ করবে। মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর খাদ্যদ্রব্য তৈরিতে কমপক্ষে ৯৬ দশমিক ৯৯ ভাগ সোডিয়াম ক্লোরাইড, অনধিক শূণ্য পয়েন্ট ১ ভাগ পানিতে অদ্রবণীয় পদার্থ, কমপক্ষে ৩ দশমিক শূণ্যভাগ পানিতে দ্রবনীয় পদার্থ, উৎপাদন পর্যায়ে ৩০ থেকে ৫০ পিপিএম এবং খুচরা পর্যায়ে ২০ থেকে ৫০ ভাগ পিপিএম মাত্রার আয়োডিন, এবং জলীয় অংশের পরিমান সর্বোচ্চ ৬ দশমিক শূণ্য শতাংশ থাকবে হবে।

আইনে বলা হয়, প্যাকেটের গায়ে পণ্যের ওজন পরিমাণ উৎপাদন ও ব্যবহার বিধি ব্যাচ সর্বোচ্চ খুচরামূল্য উৎপাদনের তারিখ প্যাকেটজাতকরণের তারিখ এবং মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ না করলে ২ বছরের জেল ও ৫ লাখ টাকা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত করা হবে।

আয়োডিনযুক্ত না করার ফলে অন্যের জীবণ বিপন্ন হলে ৭বছরের জেল ও ২৫ লাখ টাকার অর্থ দন্ড অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত করা হবে। দন্ডের অর্থ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির পরিবারকে প্রদান করা হবে। লবণ উৎপাদনকারী ব্যাক্তি প্রতিষ্ঠানকে সরাসরি লবণ কারখানায় প্রেরণের জন্য জাতীয়, জেলা ও প্রান্তিক লবণ কমিটি কার্যকর ব্যবস্থা নেবেন। লবণ মৌসুমে অভ্যন্তরীন ভাবে উৎপাদিত লবেণে দেশের বাৎসরিক চাহিদার কম উৎপাদন হলে শুধুমাত্র সেইক্ষেত্রে ভোজ্যলবণ উৎপাদন এবং চামড়া শিল্প বা রাসায়নিক কারখানার ব্যবহারের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনে অপরিশোধিত লবণ আমদানী করা যাবে। এই আইনের অধীনে নিবন্ধন ছাড়া কেউ লবণ আমদানি করতে পারবে না। লবণ চাষীদের এক বা একাধিক সংগঠন থাকবে। মৌসুমের পর লবণ শ্রমিকদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের কথাও বলা হয়েছে এ আইনে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খসড়া


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ