পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অসদাচরণ তদন্ত ও প্রমাণে তিন সদস্যের একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিটি গঠনের বিধান রেখে বিচারকদের অপসারণ সংক্রান্ত আইনের খসড়া উঠছে মন্ত্রিসভায়। আজ মন্ত্রিসভায় নিয়মিত বৈঠকে অনুমোদনের জন্য আইনটি উত্থাপন করা হচ্ছে। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, খসড়া অনুযায়ী বিচারকদের অসদাচরণ তদন্ত ও প্রমাণে গঠিত তদন্ত কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন সাবেক একজন প্রধান বিচারপতি বা আপিল বিভাগের একজন সাবেক বিচারপতি। এছাড়া ওই কমিটিতে সাবেক একজন অ্যাটর্নি জেনারেল এবং একজন বিশিষ্ট নাগরিককে রাখার বিধান রাখা হয়েছে।
খসড়ায় আরো বলা হয়, তিন সদস্যের কমিটির তদন্তের পর প্রতিবেদন জাতীয় সংসদে জমা দেওয়া হবে। ওই প্রতিবেদনের উপর জাতীয় সংসদে আলোচনা হবে। সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতিতে অভিযুক্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো হবে। প্রেসিডেন্ট অপসারণের চূড়ান্ত চিঠিতে স্বাক্ষর করবেন।
এর আগে প্রস্তাবিত আইনের খসড়ার উপর আইন কমিশনের মত নিয়ে তা প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠায় মন্ত্রণালয়। আইনটি নিয়ে অংশীজনের (স্টেক হোল্ডার) মত নেওয়ার পর তা চূড়ান্ত করা হয়। ওই সময় আইনটির নামকরণ করা হয় ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অসদাচরণ ও অসামর্থ্য (তদন্ত ও প্রমাণ) আইন, ২০১৬’।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের নিয়মটি সংবিধানে এ পর্যন্ত তিনবার পরিবর্তন করা হয়েছে। বাহাত্তরের সংবিধানে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা ছিল সংসদের হাতে। সংবিধানের ৯৬ (২) অনুচ্ছেদে বলা ছিল, ‘প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থ্যরে জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সাংসদের ভোটে সমর্থিত প্রস্তাব প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণ করা যাবে’। আর ৯৬ (৩) অনুচ্ছেদে বলা ছিল, ‘অপসারণের প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে’। তবে ওই অনুচ্ছেদ অনুসারে আইন আজ পর্যন্ত প্রণীত হয়নি।
এর মধ্যে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে ৯৬ (২) অনুচ্ছেদ সংশোধন করে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সরাসরি প্রেসিডেন্টের হাতে দিয়ে দেওয়া হয়। আর আইন সংক্রান্ত ৯৬ (৩) অনুচ্ছেদটি বিলুপ্ত করা হয়।
১৯৭৭ সালে বিচারকদের অপসারণের পদ্ধতিতে আবার পরিবর্তন আসে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের এক সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে দেওয়া হয়। এরপর ১৯৭৯ সালে পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে এ বিধান সংবিধানে ঢুকে যায়। ২০১০ সালে আপিল বিভাগ পঞ্চম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করলেও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে অনুমোদন দিয়েছিলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীতে বাহাত্তরের সংবিধানের অনেক বিষয় ফিরিয়ে আনা হলেও সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বাদ পড়েনি।
প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের দু’জন জ্যেষ্ঠতম বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের ক্ষমতা ছিল কোনো বিচারকের সামর্থ্য বা আচরণ সম্পর্কে তদন্ত করার। কাউন্সিলের তদন্ত প্রতিবেদনে যদি বিচারককে অপসারণের সুপারিশ করা হয়, তবে প্রেসিডেন্ট তাকে অপসারণ করতে পারতেন।
২০১২ সালে তৎকালীন হাইকোর্ট বিভাগের ও পরে আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিচারপতিদের অপসারণের পদ্ধতি আবার সংসদের হাতে ফিরিয়ে আনার দাবি ওঠে। ওই সময়ে স্পিকার ও বর্তমানে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদকে নিয়ে বিচারপতি শামসুদ্দিনের একটি মন্তব্যের সূত্র ধরে কয়েকজন সংসদ সদস্য তাকে অপসারণের দাবি তোলেন।
এরপর ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বাহাত্তরের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ পুনঃস্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবার সংসদের হাতে ফিরে যায়। সেই সঙ্গে অভিযোগ তদন্তের জন্য আইন প্রণয়নের দাবি ওঠে। তখন আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, খুব শিগ্গির এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে।
যদিও ষোড়শ সংশোধনীর পর পরই ২০১৪ সালের নভেম্বরে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেওয়ার বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট হয়। প্রাথমিক শুনানির পর আদালত রুল জারি করেন, যার শুনানি এখনো শেষ হয়নি। সূত্র : বাংলা নিউজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।