নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ব্যাট-বলের লড়াইয়ের উত্তেজনা আবার ফিরে আসতে শুরু করেছিল। স্কিল ঝালাইয়ের পাশাপাশি চলছিল নানা পরিকল্পনাও। রোমাঞ্চ নিয়ে শ্রীলঙ্কা সফরের অপেক্ষায় ছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। আপাতত এসবের সমাপ্তি। সফর স্থগিত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ক্রিকেটাররা। তবে বাস্তবতাও তারা অনুধাবন করছেন। তাই হতাশায় মুষড়ে না পড়ে নতুন আশা নিয়েই সামনে তাকিয়ে মুমিনুল হক, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমরা। সেই সবুজ সঙ্কেতও পেয়ে গেছে বাংলাদেশ দল। টেস্ট না থাকলেও আসছে বছরের মার্চে ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলতে নিউজিল্যান্ড যাবে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর দল।
এদিকে সফর স্থগিত হলেও ক্রিকেটারদের স্কিল ক্যাম্প চলবে আরও দুই সপ্তাহ। মাঝে তিন দিনের বিরতি দিয়ে গতকাল থেকেই ফের শুরু হয়েছে দলীয় অনুশীলন। আপাতত তারা মনোযোগী এই ক্যাম্পে নিজেদের শাণিত করা নিয়ে। এরপর একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট দিয়ে ঘরোয়া মৌসুম শুরুর পরিকল্পনা করছে বিসিবি। তার আগে দেশের একটি নিউজ এজেন্সির সঙ্গে কথোপকথনে সফর পিছিয়ে যাওয়ার প্রতিক্রিয়া আর সামনের পরিকল্পনা জানালেন ক্রিকেটারদের অনেকে। সবার আগের নামটি অবশ্যই মুমিনুল হক। শ্রীলঙ্কা সফর দিয়ে প্রথম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ খেলতে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। সেই অপেক্ষা বাড়ায় কিছুটা হতাশ টেস্ট অধিনায়ক, ‘এমনিতে আমি মানসিকভাবে তৈরি হয়ে গিয়েছিলাম সফরের জন্য। দল নিয়ে, নিজেকে নিয়ে ভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। অবশ্যই খেলায় ফিরতে পারলে ভালো লাগত। তবে ভাবনা আসলে সবসময়ই থাকে, এখনও আছে। আপাতত ঘরোয়া ক্রিকেটের দিকে তাকিয়ে আছি।’
তবে বাস্তবতার নিরিখে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে অভিজ্ঞ এই টেস্ট সেনানী আপাতত তাকিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটের দিকে, ‘বাস্তবতা মানতেই হবে। কিছু করার নেই। আপাতত নিরাপদ থাকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি টেস্ট সিরিজ খেলতে গেলে প্রস্তুতিও যথাসম্ভব ভালো হওয়া দরকার। বিসিবি এখানে কোনো আপোস করেনি, সেটিই ঠিক হয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেট আমার মনে হয়, খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে। মন্দের ভালো হিসেবে এটা বলতে পারি যে, ৬ মাস ধরে আমরা খেলার বাইরে, ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেললে ভালো হবে।’
একই সুর শোনা গেল আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমের কণ্ঠেও, ‘সিরিজ হলে খুব ভালো লাগত। পরিস্থিতির কারণে হচ্ছে না, কিছু তো করার নেই। আল্লাহ যা করেন, ভালোর জন্যই করেন। আমরা পেশাদার ক্রিকেটার, প্রস্তুতি চালিয়ে যাব। সামনে যখন খেলা শুরু হবে, তখন টানা অনেক খেলা হবে। তখন যেন শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট ও প্রস্তুত থাকি, সেই চেষ্টা করে যাব। সামনে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচ রেখেছে বিসিবি, এটা খুব ভালো উদ্যোগ। যতই অনুশীলন করি না কেন, ম্যাচ খেললে এবং ম্যাচে বড় স্কোর করলে এটা অন্যরকম আত্মবিশ্বাস আসে। এখন তাই প্র্যাকটিস ম্যাচগুলিতে ভালো করা নিয়ে চিন্তা করছি। সব মিলিয়ে আমি আগ্রহ নিয়েই সামনের দিকে তাকিয়ে আছি।’
তবে নেতার মতোই দৃঢ় শোনাল দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবালের কণ্ঠস্বর। সফর স্থগিত হওয়াতেই যেন স্বস্তির আভাস পাওয়া গেল ওয়ানডে অধিনায়কের কথায়, ‘আমরা তো খেলতে প্রস্তুতই ছিলাম। কিন্তু শ্রীলঙ্কার শর্তগুলো খুব কঠিন হয়ে গিয়েছে। বিসিবি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছে। ওই শর্তগুলো মেনে খেলার মতো অবস্থায় নেই আমরা। আমরা অবশ্যই চাই খেলা হোক, যত দ্রুত সম্ভব আমরা যেন ম্যাচে ফিরতে পারি। এজন্যই কাজ করে যাচ্ছিলাম সবাই। মানসিকভাবেও সিরিজের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম। কিন্তু যেখানে আমরা বুঝতেই পারছি প্রস্তুতি যথেষ্ট হবে না সিরিজের জন্য, তখন খেলতে যাওয়া কঠিন।’ এই মুহূর্তে নিজেদের কাজটিও ঠিক ঠাক করে রাখতে চান পঞ্চপান্ডবের এই সদস্য, ‘আমরা আমাদের মতো প্র্যাকটিস করে যাব। সামনে ঘরোয়া ক্রিকেট বা যেটাই হোক, বিসিবি নিশ্চয়ই ভালো কিছুই ঠিক করবে আমাদের জন্য। আন্তর্জাতিক সিরিজ যার সঙ্গেই খেলি সামনে, আশা করি ততদিনে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত থাকব।’
সিনিয়রদের মতো বাস্তবতার মধ্য দিয়ে না গেলেও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নতুনরাও। সেদিক থেকে তাইজুল ইসলাম কিছুটা যেন পরিপক্ক। তবুও ২৮ বছর বয়সী এই বাঁ-হাতি স্পিনারের কণ্ঠে হতাশার ছাপ স্পষ্ট, ‘অনেক দিন খেলা নেই তো, ভালো লাগছে না। আমরা খেলার মানুষ, খেলা হলেই ভালো লাগে। ক্রিকেট শুরু করার পর থেকে মনে হয় এত লম্বা সময় ম্যাচ খেলা ছাড়া থাকিনি। কিন্তু এখানে আমাদের কারও হাত নেই। বিসিবি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমাদের ভালো জন্য, দেশের ক্রিকেটের ভালোর জন্যই নিয়েছে। আশা করি, দ্রুতই খেলায় ফিরবে পারব আমরা।’
ইনজুরির কারণে অনেক দিন থেকেই ক্রিকেটে বাইরে তাসকিন আহমেদ। সিরিজ স্থগিত হয়ে যাওয়ায় তরুণ পেসার আক্ষেপটা যেন একটু বেশিই, ‘অনেক দিন পর খেলা হওয়ার কথা ছিল। শুধু আমি নই, সবাই খুব রোমাঞ্চিত ছিলাম। এখন খারাপ লাগছে অবশ্যই। তবে কিছু করার নেই। কারও হাত নেই এই পরিস্থিতির ওপর। সবাইকে মেনে নিতেই হবে। আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো এগোচ্ছিল। খুব ভালো ট্রেনিং চলছে। ব্যাক্তিগতভাবে বললে, আমি লকডাউনের সময়টায় অনেক খেটেছি ফিটনেস নিয়ে। এরপর ট্রেনিংয়ে বোলিংয়েও উন্নতির চেষ্টা করছি। কোচরাও খুশি হয়েছেন আমার বোলিং দেখে। এখন চাওয়া, যত দ্রুত খেলা শুরু হয়। বিসিবি নিশ্চয়ই ভালো কিছুই করবে আমাদের জন্য। তবে সুযোগ সামনেও আসবে ইনশাআল্লাহ। অনেক খেলা আছে। তখনও পারফর্ম করার চেষ্টা করব।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।