পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের উত্তরাঞ্চলে ঘটে গেছে অঘোষিত কৃষিবিপ্লব। জমিতে বছরে তিন দফায় ফসল ফলানোর পাশাপাশি একই জমিতে কৃষকরা নানা ধরণের শস্য উৎপাদন করছেন। বিশেষ করে পাহাড়ের চা বাগান এখন শোভা পাচ্ছে তেঁতুলিয়ার ধানের জমিতে। ধানের জমিতে চা চাষের মাধ্যমে পাল্টে গেছে পঞ্চগড়ের কৃষকদের জীবনধারা। এক সময় পাট বিদেশ রফতানিতে বৈদেশিক মূদ্রা আসতো। পাটে চলছে দুর্দিন। তবে পাটের বদলে চা বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনে সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিয়েছে সমতলের চা চাষীরা। ২০১৯ সালে পাহাড়-সমতল মিলে দেশে সাড়ে ৯ কোটি কেজি চা উৎপাদন হয়েছে। চা বিক্রির রেকর্ডেও দেখা যায় ২০১৮-১৯ বর্ষে সারাদেশে ২ হাজার ৭৮ কোটি টাকার চা বিক্রি হয়। তবে ২০১৯-২০ বর্ষে চা বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকার।
তেঁতুলিয়ার চা চাষীরা বলছেন, ধানের জমিতে চা বাগার দেশের কৃষিতে বিপ্লব। ‘বিক্রির নিশ্চয়তা’ পেলে চায়ের আবাদ বাড়বে। তখন দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে চা রফতানি করে বিপুল পরিমান বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। প্রয়োজন শুধু সরকারি উদ্যোগ।
‘একই জমিতে যদি ধান-পাট-গম-চা দেখতে চান/ দেশের উত্তরাঞ্চলের হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া চলে যান’ কোনো কবিকে তেঁতুলিয়া সম্পর্কে লিখতে বললে এটাই লিখতেন। দেশের সর্ব উত্তরের উপজেলা তেঁতুলিয়া পাল্টে দিয়েছে চা বাগান সম্পর্কে মানুষের ধারণা। সিলেট, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য জেলার পাহাড়ি অঞ্চলে চা বাগান নয়; সমতল ধানের জমিতেও চা উৎপাদন করা হচ্ছে অন্য সব শস্যের মতোই।
প্রধান ভাই (শফিউল আলম প্রধান) বেশ কয়েকবার বলেছিলেন, ‘চলো তেঁতুলিয়ার চা বাগান দেখতে যাই’। যাওয়া হয়নি। জাগপা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বন্ধু মোমেন বাবুলের মৃত্যুর পর লাশের সঙ্গে বোদার ময়দানদিঘী যেতে পারিনি। দু’জনের মৃত্যুর পর পেশাগত কাজেই হিমালয় কন্যা পঞ্চগড় যেতে হলো। সারারাত বাস জার্নির পর সকালে বাংলাবান্ধা স্থল বন্দরে নেমেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিকেলে তেঁতুলিয়ায় চা বাগানে ঘুরতে যাব। যেমন কথা তেমন কাজ। সূর্য পশ্চিম দিকে গড়াতে না গড়াতেই স্থানীয় সাংবাদিক মো. আবু তাহের আনছারী হোটেলে হাজির। ফাল্গুন-চৈত্র মাসেও প্রচন্ড ঠান্ডা। শীতের কাপড় গায়ে জড়িয়ে রওয়ানা দিলাম। লক্করঝক্কর বাইক খানাখন্দের মাটির রাস্তা লাফাতে লাফাতে এগিয়ে চলছে। যেদিকে চোখ যায় সমতল ভুমিকে সারি সারি চায়ের বাগান। কোথাও একই জমিতে গম, চা ও পাট তিন ফসলই চাষ করা হয়েছে। কোথাও একই জমি খন্ড খন্ড করে গম, চা আর সবজির বাগান। দৃশ্য এমন যে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে যেন বিএসএফ চা বাগান পাহারা দিচ্ছে।
বাংলাদেশের সর্ব উত্তরের গ্রামের নাম দর্জিপাড়া, আজিম নগর, তিমনদুত গ্রামের বেশির ভাগ ধানের জমিতে চা চাষ হচ্ছে। কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে ভারতের কালুগঞ্জ, বড় বিল্লার গ্রাম আর এপারে বাংলাদেশের দর্জিপাড়া গ্রাম। তিমনদুত গ্রামের মো. মোনাদুল ইসলাম ও হামিদা খাতুন বাগানে চা পাতা কাটছিলেন। দেখেই দাঁড়িয়ে যায় বাইক। হামিদা জানালেন, তারা বাড়ির পাশে ১২ শতক (৮ কাঠা) জমিতে চা বাগান করেছেন। পান সুপারি কেনার জন্যই তাদের এই চা চাষ। এ বাগান থেকে সে বাগান ঘুরছি। সীমান্তের কাঁটা তারের বেড়ার ওপারে বিএসএফের টহলের দৃশ্য দেখছি। এমন সময় চা বাগান থেকে কাজ করে হাজির দর্জিপাড়া গ্রামের আমিন উদ্দিনের ছেলে আ: গাফ্ফার। তিনি জানালেন, দুই বিঘা জমির মধ্যে এক বিঘায় চা, অন্য জমিতে গম ও ভুট্টা চাষ করেছেন। আমাদের মুখে বার বার ‘চা বাগান’ শব্দ শুনে অনুযোগের সুরে বললেন, ‘স্যার আপনি বাগান বলছেন কেন, তেঁতুলিয়ায় ক্ষেতে চা চাষ করা হয়। সিলেট, চট্টগ্রামে পাহাড়ে বড় পরিসরে চা বাগান হয়’।
মোহাম্মদ হাফেজ নামের এক চা চাষি বললেন, ৯ শতক জমিতে চা চাষ করেছি। সমতলে চা চাষ সম্পর্কে জানতে হলে মৃত্য সিরাজউদ্দিনের ছেলে আব্দুর রহমানের কাছে যান। উনি তেঁতুলিয়ায় ধানের জমিতে প্রথম চা চাষ করেছেন। তার অনুপ্রেরণায় তেঁতুলিয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ গো-চারণ ভ‚মি এখন চায়ের সবুজ পাতায় ভরে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে সবুজের সমারোহ। তার কাছে সব খবর পাবেন। স্থানীয় সাংবাদিক আবু তাহের আনছারী বাইক নিয়ে ছুটলেন আব্দুর রহমানের খোঁজে।
সরেজমিন চা বাগান যাওয়ার আগে পথের চায়ের দোকানে তেঁতুলিয়া প্রেসক্লাবে সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক ধানের জমিতে চা চাষ সম্পর্কে কিছু তথ্য দেন। তিনি জানান, পঞ্চগড়ের চা চাষের বিশেষত্ব হচ্ছে কৃষকরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চা বাগান গড়ে তুলছেন। প্রান্তিক চাষিদের এই চা ভাগ্যোন্নয়নে গুরুত্বপ‚র্ণ ভ‚মিকা রাখছে। ধানের জমিতে চা চাষে চাষিদের ৯ মাসের আয়ের পথ তৈরি হয়। স্থানীয় বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান করেছে চা ক্ষেত।
ঢাকার কিছু ব্যবসায়ী পঞ্চগড়ে জমি কিনে চা চাষ করায় জমির দাম বেড়েছে কয়েক গুণ। চা চাষাবাদকে কেন্দ্র করে পঞ্চগড়ে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া চা বাগান দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসছে পর্যটক। এতে গত কয়েক বছরে পাল্টে গেছে সীমান্ত শহর তেঁতুলিয়ার চিত্র। বেড়েছে গ্রামীণ মানুষের মাথাপিছু আয়।
বোঝা গেল দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে নীরবে ঘটে গেছে চা চাষের বিপ্লব। পঞ্চগড় চা বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের তথ্য মতে, বর্তমানে জেলার ১৬ হাজার একর জমি চা চাষের উপযোগী করা হয়েছে। তবে চা চাষ হচ্ছে দুই হাজার ২৫৫ দশমিক ৫৫ একর জমিতে। চা চাষ করছে ১৮২ জন ক্ষুদ্র চাষি যাদের জমি ১০ শতক থেকে ৫ একরের নিচে। ৫ থেকে ২০ একর জমিতে চা চাষ করছেন ১১ জন। এবং ২০ একরের ওপরে ১৯টি ‘টি এস্টেট’ চা চাষ করছে। প্রায় ৫ হাজার নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
আগে পুরুষ শ্রমিকরা মহানন্দা থেকে পাথর উত্তোলন আর নারী শ্রমিকরা পাথর ভেঙে জীবিকা নির্বাহ করত। এখন নারীরা চায়ের পাতা কাটার কাজ করেন। দরিদ্র ও বঞ্চিত নারীদের জীবনে দুই বেলা দুই মুঠো ভাতের নিশ্চয়তা দিয়েছে চা বাগান। আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা আগেই জানিয়েছেন, ১৯৯৬ সালে তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চগড় সফরে এসে চা চাষের সম্ভাবনার কথা জানান ওই সময়ের জেলা প্রশাসক মো. রবিউল হোসেনকে। ডিসির তত্ত্বাবধানে পরীক্ষামূলকভাবে চা চাষ করা হয়। প্রথমে টবে, পরে জমিতে চায়ের চাষ করা হয়। তেঁতুলিয়া টি কোম্পানি ও কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেটসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান চা চাষ শুরু করে। পঞ্চগড়ে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চা উৎপাদন করা হচ্ছে।
সীমান্তের কাচা রাস্তায় ছুটে চলেছে বাইক। কিন্তু বাসায় গিয়ে আবদুর রহমানকে পাওয়া গেল না। তার স্ত্রী জানালেন, তিনি সালিশ করতে গেছেন কয়েক কিলোমিটার দূরে। সেদিকে ছুটে চললো বাইক। সেখানে গিয়েও পাওয়া গেল না ‘ধানের জমিতে চা’এর জনক আব্দুর রহমানকে। ফিরে আসছি এমন সময় দূরে দেখা গেল একটি বাইকে দুজন আসছেন। কাছে আসতেই স্থানীয় মসজিদের ইমাম আর চা চাষি আব্দুর রহমান স্থানীয় পূর্ব পরিচিত সাংবাদিককে সালাম দিলেন। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। যেন হারানো কোনো মানিক খুঁজে পাওয়ার গল্প। আব্দুর রহমান নিয়ে গেলেন চায়ের দোকানে। তিনি শোনালের তেঁতুলিয়ার চা চাষের কাহিনী।
ধানের ক্ষেতে চা চাষের গল্প শুরু করলেন আব্দুর রহমান। ২০০০ সালে তেঁতুলিয়ায় আমিই প্রথম ধানের জমিতে চা চাষ শুরু করি। জমিতে ধান-গম ভাল হতো না। সবজি চাষ করেও দাম পাওয়া যায় না। তখন কাঁটা তারের বেড়া ছিল না। ওপারে (ভারত) পাশের গ্রাম কালিগঞ্জ (পশ্চিমবঙ্গের দিনাজপুর) খালুর বাসায় বেড়াতে গেলাম। খালু মো. মোন্তাজ আলী সংসারের খোঁজ খবর নেয়ার সময় ধানের বদলে চা চাষের পরামর্শ দিলেন। তিনি জানালেন, চা চাষ করলে সংসারের অভাব দূর হবে এবং গ্রামের গরীব মানুষও কাজ পাবে।
ফেরার সময় জোর করেই তিনি চা গাছের কিছু ডাল হাতে ধরিয়ে দেন। এনে ধানের জমিতে ‘চায়ের ডাল’ রোপন করি। অনেকে দেখে ‘আমি পাগল হয়েছি’ এমন প্রচারণাও করেন। প্রথম তিন বছর কিছুই পাইনি। এ নিয়ে বন্ধু মহলের হাসিঠাট্টা হয়। অতঃপর কয়েকজন বেকার ভবঘুরেকে কাজে লাগিয়ে চায়ের পাতা কেটে বিক্রির উদ্যোগ নেই। প্রথমে তেঁতুলিয়া চা কোম্পানী লিমিটেড (টিটিসিএল) সাড়ে ৮ টাকা কেজি দরে চায়ের পাতা বিক্রি করি।
বলে রাখা ভাল যে বাংলাদেশে চা চাষ শুরু হয়েছিল ১৮৪০ সালে চট্রগ্রামের ক্লাব প্রাঙ্গণে (পাহাড়)। সিলেটের পাহাড়ে উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫৪ সালে। প্রায় দেড়শ বছর পর পঞ্চগড়ে ২০০০ সালে ধানের জমিতে চা চাষ শুরু হয়। সে সময়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক চায়ের পাতা বিক্রিতে সহায়তা করেন। পঞ্চগড়ের চা দেশের বাজার ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করেছে। তেঁতুলিয়ার অর্গানিক চা বিক্রি হচ্ছে লন্ডনের হ্যারোড অকশন মার্কেটে। রপ্তানি হচ্ছে দুবাই, জাপান ও আমেরিকায়।
চা চাষে আমার আর্থিক উন্নতি দেখে পরবর্তীতে অনেকেই এগিয়ে আসেন। তাদের চা চাষে আমি সব ধরণের সহায়তা পরামর্শ দিয়েছি, দিচ্ছি। আগে খড়ের ঘর ছিল এখন পাকা বিল্ডিং করেছি। ছেলেদের লেখাপড়া শিখিয়েছি। জমিতে বছরে ধান হয় দুই বার। চা একবার চাষ করলে সে গাছ ৬০ থেকে ৭০ বছর পাতা দিয়ে থাকে। চায়ের পাতা বছরে ৭ রাউন্ড তোলা যায়। এতে ধানের চেয়ে লাভ বেশি। সিলেটের চা বাগারের মতো আমাদের নিজস্ব শ্রমিক রাখার প্রয়োজন হয় না। ফলে শ্রমিক খরচ কম।
একজন শ্রমিক এক কেজি চা পাতা তুললে পান ৩ টাকা। চা পাতা কাটলে তারা দিনে ৫’শ টাকা রোজগার করেন। পঞ্চগড়ে এ বছর চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ কেজি। চা বোর্ডের ‘স্ট্র্যাটেজিক ডেভেলপমেন্ট পান ফর টি ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ ভিশন-২০২১’ প্রকল্প গ্রহণ করায় এখানকার চাষিদের মধ্যে চা উৎপাদনের আগ্রহ বেড়ে গেছে। গাছের আগা কেটে পাতা কাটায় উৎপাদন হচ্ছে পৃথিবীর সেরা চা। দেশের চা শিল্পের প্রসারে ভারতের চা আমদানী বন্ধ করা উচিত। প্রয়োজনে চা আমদানীতে ট্রাক্স চার থেকে পাঁচগুণ বাড়ানো উচিত। এ শিল্পের বিকাশে সমতলের চা চাষিদের প্রণোদনা দেয়ার মধ্যে শ্রমিকদের সুবিধা দেয়া উচিত।
আব্দুর রহমানের কাছ থেকে বিদায় নিতেই সালাম দিয়ে হাত মেলালেন হাবিবুর রহমান হবু। সঙ্গে গওহর রহমান, মো. হাফিজ উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক। বিকেলে কাঁটাতারের বেড়ার অদূরে চা বাগানে তাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। বললেন, সমতলে চা চাষ করে আমরা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারি। এক সময় ৩৬ টাকা কেজি দরে চা পাতা বিক্রি করতাম; এখন সেই পাতা ২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়। চট্টগ্রাম ও মংলায় এই পাতা বিক্রি করতে হয় বলেই সিন্ডিকেট করে দরপতন ঘটানো হয়েছে। অথচ তেঁতুলিয়ার চা বাগানের পাশের জমি ভারতের কালুগঞ্জ, বড় বিল্লাল গ্রামের চাষীরা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে চা পাতা বিক্রি করেন।
দর্জিপাড়ার মো. হাফিজ উদ্দিন বললেন, এক বিঘা জমির চা পাতা তুলতে ৮ জন শ্রমিক লাগে। প্রতি শ্রমিককে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা মজুরি দিতে হয়। মজুরি দিয়ে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা কৃষকের থাকে। কিন্তু সিন্ডিকেট করে চা পাতার দাম কমিয়ে দেয়ায় চা চাষিদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। ১৫ থেকে ২০ জন চা চাষির সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, ডিসি চায়ের দাম নির্দ্ধারণ করে দেন। তবে সরকার পঞ্চগড়ে কৃষকদের সরাসারি চা বিক্রির ব্যবস্থা করলে চাষিরা লাভবান হয়ে চা চাষে আরো উৎসাহী হতেন। কিন্তু সিন্ডিকেট কৃষকদের ঠকানোর জন্য নানা ফন্দিফিকির করেন। যা সমতলে সম্ভবনাময় চা শিল্পের আকাশে কালো মেঘের নামান্তর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পঞ্চগড়ে চা চাষকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কাজী এন্ড কাজী চা বাগান, আগা টি এস্টেট, করতোয়া চা বাগান, গ্রীন কেয়ার চা বাগান, ডাহুক চা বাগান, ময়নাগুড়ি চা বাগান, পঞ্চগড় চা কোম্পানি, কাজী ফার্মস লি:, স্যালিলেন টি এস্টেট, এমএম টি এস্টেট, আর ডি আর এস চা বাগান, গ্রীন গোল্ড চা বাগান লি:, হক টি এস্টেট, নাহিদটি এস্টেট, আরিব টি এস্টেট, জেসমিন টি এস্টেট, কুসুম টি এস্টেট নামে প্রতিষ্ঠান। তারা নিজেরাও চা চাষ করছেন এবং চা ক্রয় বিক্রয় করছেন। বড় বড় এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা নানা ভাবে ক্ষুদ্র চা চাষিদের উৎপাদিত চা পাতার দাম নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
অভিযোগ যাই হোক পঞ্চগড়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুনভাবে যোগ হয়েছে ধানের জমিতে চা চাষ। জেলার অধিকাংশ জমিই একসময়ে অলস পড়ে থাকত। সেখানে এখন কৃষকরা চা চাষ করছেন। এখন প্রয়োজন সরকারের সুনজর ও পরিকল্পনা। পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেয়া হলে সীমান্তের কাঁটাতারে ঢাকা পড়ে থাকা তেঁতুলিয়ায় পাল্টে দিতে পারে দেশের অর্থনীতির চাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।