পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মধ্যপ্রাচ্যে চট্টগ্রামের শাক-সবজি ও মৌসুমি ফলের চাহিদা বাড়ছে। শাহ আমানত (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সপ্তাহে সাতদিন তিনটি ফ্লাইটে সরাসরি যাচ্ছে হরেক তাজা শাক-সবজি। চাহিদা বাড়ায় রফতানি খাতে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। বিমান ভাড়া, বিমানবন্দরের চার্জ কমিয়ে এনে কিছু সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে রফতানি দ্বিগুণ করা সম্ভব বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
করোনায় বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় বেশ কয়েক মাস সবজি রফতানি বন্ধ থাকলেও চলতি মাসের শুরু থেকে ফের পুরোদমে শুরু হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ২৯ দিনে ২৩০ মেট্রিক টন সবজি রফতানি হয়েছে। বিমানবন্দর ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, এখন বাংলাদেশ বিমান, এয়ার এরাবিয়া ও ফ্লাই দুবাইয়ের ফ্লাইটে সপ্তাহে সাত দিন সবজি রফতানি হচ্ছে। এসব ফ্লাইটে যাত্রীদের মালামাল নেওয়ার পর লাগেজের বাকি অংশে সবজি ও মৌসুমি ফল নেওয়া হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে সপ্তাহে ৩৫-৩৮ টন সবজি রফতানি হয়। বছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকার সবজি ও ফল রফতানি হয় মধ্যপ্রাচ্যে। এর পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলোতে প্রক্রিয়াজাত সবজি এবং সবজি থেকে তৈরি হরেক রকমের খাবার রফতানি হচ্ছে।
আগে ঢাকা হয়ে চট্টগ্রামের শাক-সবজি রফতানি হতো। ২০০২ সাল থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে শাক-সবজি যাচ্ছে মরুর দেশে। অর্ধশত রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান শাক-সবজি রফতানি করছে। বছরে ১২ মাস সব ধরনের শাক-সবজি ও মওসুমি ফল রফতানি হয়। চট্টগ্রাম থেকে প্রতিদিন টাটকা শাক-সবজি যাচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশী ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ মধ্যপ্রাচ্যের নাগরিকদের কাছে এ দেশের সবজি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। চলতি মওসুমে চট্টগ্রাম থেকে কচু, কচুর লতি, কচুর ফুল, কচু শাক ছাড়াও কচুর ছড়া, ওল কচু, পাইন্যা কচু রফতানি হচ্ছে।
এ তালিকায় আছে বরবটি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, লেবু, পটল, ঝিঙ্গে, শশা, কাকরোল, উচ্ছে, তিতা করলা, দেশি আলু, সীম বিচি। মওসুমি ফলের মধ্যে পেয়ারা, জলপাই, আখ, জাম্বুরা, পানিফল, আমলকি, আমড়া যাচ্ছে প্রতিদিন।
রফতানিকারকরা জানান, চট্টগ্রাম অঞ্চলে উৎপাদিত প্রায় সব ধরনের সবজির বিশাল বাজার সৃষ্টি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সীতাকুন্ড, রাঙ্গুনিয়া, পার্বত্য জেলার খাগড়াছড়ি, মাটিরাঙ্গা, রাঙ্গামাটির চন্দ্রঘোনায় পাহাড়-টিলা ও সমতল ভূমিতে উৎপাদিত শাক-সবজির চাহিদা বেশি। পাহাড়ি জুমের মিষ্টি কুমড়া এবং চাল কুমড়া বেশি জনপ্রিয় মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে। ফলের মধ্যে কাঁঠাল রফতানি হয় বেশি। আমদানিকারকেরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ভালোমানের এসব সবজি সংগ্রহ করেন। কৃষকরাও অপ্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ছাড়াই সযত্মে এসব সবজি ফলান। ন্যায্য দামও পান কৃষকেরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বিদেশ রফতানি যোগ্য শাক-সবজি আবাদে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। তাদের হাতে কলমে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড, চন্দনাইশসহ কয়েকটি এলাকায় ভাল মানের সবজি উৎপাদিত হয়। এসব সবজি দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও যাচ্ছে। এতে প্রান্তিক কৃষকরা সরাসরি উপকৃত হচ্ছে।
বিমানবন্দরে দায়িত্বরত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শৈবাল কান্তি নন্দী বলেন, করোনার কারণে কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর সবজি রফতানি শুরু হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত ২৩০ মেট্রিক টন সবজি রফতানি হয়েছে। বাংলাদেশ বিমানসহ তিনটি ফ্লাইটে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, শারজা ও আবুধাবীতে যাচ্ছে শাক-সবজি। সামনের দিনগুলোতে সবজি রফতানি আরও বাড়বে।
বিমানবন্দর কাস্টমসের উপ-কমিশনার রোকসানা খাতুন বলেন, চট্টগ্রাম থেকে মধ্যপ্রাচ্যে শাক-সবজি রফতানি দ্রুততর করতে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করছে। নিয়ম অনুযায়ী চার্জ আদায় করে দ্রুত রফতানির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। রফতানি বাড়াতে সহযোগিতা করছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো চট্টগ্রামের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আলতাফ হোসেন ভ‚্ইয়া বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে শাক-সবজি রফতানি হচ্ছে, এর পাশাপাশি ইউরোপের দেশগুলোতেও চট্টগ্রামে উৎপাদিত সবজি প্রক্রিয়াজাত করে রফতানি হচ্ছে। উভয়ক্ষেত্রেই সরকার প্রণোদনা দিচ্ছে। শাক-সবজি ও মৌসুমি ফল রফতানিতে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম ফ্রেশ ভেজিটেবলস অ্যান্ড ফ্রুটস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুব রানা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। বিমান ভাড়া এবং বিমানবন্দরের চার্জ কমিয়ে কিছু সুযোগ বাড়ালে সবজি রফতানি দ্বিগুণ করা সম্ভব। বর্তমানে ২৫ কোটি টাকার সবজি রফতানি হয়। তা ৫০ কোটি টাকায় উন্নীত করা যাবে। তিনি বলেন, বর্তমানে সপ্তাহে যে পরিমাণ সবজি যাচ্ছে লাগেজ সুবিধা বাড়ালে আরও বেশি সবজি রফতানি সম্ভব।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।