নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী : চট্টগ্রামে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ মিশন শুরু বাংলাদেশ যুবাদের। চট্টগ্রামের ওই দারুণ শুরুতে উজ্জীবিত বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল কক্সবাজারে আরো ভয়ঙ্কর। স্কটিশ যুবাদের উড়িয়ে দিয়ে নামিবিয়া কোচের দম্ভোক্তির জবাবটা ভালভাবে দিতে ২০৪ বল হাতে রেখে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে স্বাগতিকরা। দাপটের সাথে গ্রুপ রাউন্ড থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে শুধু কোয়ার্টার ফাইনালেই ওঠেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে রানের এভারেস্টে দিয়েছেন পা মিডল অর্ডার নাজমুল হোসেন শান্ত, উইকেটের চূড়ায় পা পড়েছে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজের। একটার পর একটা হার্ডল সহজভাবে পাড়ি দিয়ে মিরাজদের দল আজ অবতীর্ণ হচ্ছে সেমিফাইনালে। প্রতিপক্ষ নেপাল।
যুব বিশ্বকাপে এর আগেও তিনবার খেলেছে বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে, তবে সেমিতে ওঠার অতীত নেই একটি আসরেও। বরং ট্র্যাজেডি হয়ে থেকেছে ওই তিন আসরের কোয়ার্টার ফাইনাল। ২০০০৬ এ ইংল্যান্ডের কাছে, ২০০৮ এ দ.আফ্রিকা এবং ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের কাছে সেই হারের ক্ষত শুকানোর পালা আজ বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের। ট্রফিতে চোখ রেখে শুরু বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের বিশ্বকাপ মিশন, প্রত্যাশিত ট্রফি থেকে এখন তিনধাপ দূরে বাংলাদেশ যুবরা। আজ জিতলেই অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো সেরা চার উঠবে বাংলাদেশ যুবরা, প্রিয় ভেন্যু মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এই ইতিহাস রচনার প্রত্যয় মেহেদী হাসান মিরাজদের।
২০০৬ সালে শ্রীলংকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হারের যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন সাকিব, মুশফিক, তামীম, রকিবুল, মেহরাব জুনিয়র, সোহরাওয়ার্দি শুভরা। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অতীতের নয়টি আসরে এটাই এখনো সেরা সাফল্য ( ৫ম)। কোয়ার্টার ফাইনাল ট্র্যাজেডির অন্য ২টি আসরে বাংলাদেশ যুবারা আসর শেষ করেছে সেখানে ৬ষ্ঠ (২০০৮) ও ৭ম (২০১২) হয়ে। মুশফিকুর, তামীম, সাকিবদের সেই কষ্টটা ভুলিয়ে দিয়ে নুতন ইতিহাস রচনায় সংকল্পবদ্ধ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজÑ ‘বাংলাদেশ এর আগে কখনো সেমিফাইনাল খেলেনি। তাই নেপালের বিপক্ষে জিততে পারলে তা হবে অনেক বড় অর্জন। সে কারণেই আগের ম্যাচগুলোর চেয়ে মনোযোগ আরও বেশি থাকবে। এর আগে (২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ) মুশফিক ভাইরা ভালো পজিশনে ছিলেন। আমাদের সামনেও ভালো পজিশনে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। প্রতিপক্ষকে বিন্দুমাত্র ছাড় নয়। ব্যাটসম্যান- বোলাররা যা করছে সেটাই করবে, নতুন করে কিছু করব না। আগের তিনটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, কোয়ার্টার ফাইনালও সেভাবে খেলব।’
আইসিসি’র সহযোগী সদস্য দেশ হয়েও নেপাল এই আসরে উঠেছে কোয়ার্টার ফাইনালে। তাও আবার নিউজিল্যান্ডকে হতাশ করে, আয়ারল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে। এমন একটি প্রতিপক্ষের বিপক্ষে অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটে একবারই খেলার অতীত আছে বাংলাদেশ যুবাদের। ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত প্লেট সেমিফাইনালে ২৩ রানের সেই হার এখনো পীড়া দেয় বাংলাদেশকে। সে কারণেই নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দলের কাছে আশরাফুল, আফতাব, নাফিস ইকবাল, সৈয়দ রাসেলদের দলের সেই হারের অতীত সতর্ক করেছে মিরাজকেÑ ‘নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দল সম্পর্কে জেনে গেছি। ওদেরকে সহজভাবে নেওয়ার কিছু নেই। যেহেতু কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে তারা, তাই অবশ্যই তারা ভালো দল। তবে আমরা যে ভাবে দিনে দিনে উন্নতি করছি, উন্নতির ওই প্রক্রিয়াতেই থাকব।’
নেপাল অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নিয়ে ইতোমধ্যে গবেষণা করেছে বাংলাদেশ যুব দল। কোচ মিজানুর রহমান বাবুল নেপালকে নিয়ে গবেষণালব্ধ রিপোর্টে যা পেয়েছেন, তাতে ভয়ের কিছুই দেখছেন নাÑ ‘ওদের ব্যাটসম্যানরা শুরুতে শট খেলতে চায়। ওদের একটা-দুইটা ভালো বোলার থাকতে পারে। ভারতের বিপক্ষে নেপালের শেষ ম্যাচটি টিভিতে আমরা একঘন্টা দেখেছি। ম্যাচের পুরো ভিডিও আমাদের কাছে আছে। তাদের কি আছে না আছে এইসব আমরা ভাবছি না। মাঠে পরিকল্পনাগুলো কিভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তা নিয়ে ভাবছি।’
ভারতের কাছে বাজেভাবে হেরে একটা শিক্ষা নিয়েছে নেপাল। উপমহাদেশের কন্ডিশনে আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য দেশের সঙ্গে সহযোগী সদস্যদের ব্যবধান যে কতোটা, তা ভালভাবেই নেপালকে টের পাইয়ে দিয়েছে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সে কারণেই বাংলাদেশবে ফেভারিট মেনেই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে চান নেপাল কোচ জগত বাহাদুরÑ ‘নিজ মাঠে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ অবশ্যই খুবই শক্তিশালী দল। আমরা তাদের বিপক্ষে আমাদের সেরা নৈপুণ্যই উপহার দিতে চাই। বাংলাদেশ দলটিকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি। তারা টেস্ট খুলেড়ে দেশ এবং ধারাবাহিকভাবে ভালো ক্রিকেট খেলছে। তবে ১৫ মাস আমরাও কঠোর অনুশীলন করেছি। তবে আমার দলটির প্রধান শক্তি দলীয় শৃঙ্খলা এবং স্পিন। এই ম্যাচটি হতে পারে স্পিনারদের যুদ্ধ। কারণ, বাংলাদেশের রয়েছে ভালো একটি স্পিন আক্রমণ।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।