Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এখনো পানির নিচে রংপুর নগরী

দুর্ভোগ চরমে, দেখা নেই নগরকর্তাদের

হালিম আনছারী, রংপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০৩ এএম

শত বছরের ইতিহাস ভঙ্গ করে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টির দ্বিতীয় দিনেও নগরীর ৭০ ভাগ এলাকা পানির নিচে রয়েছে। ইতোমধ্যে নগরীর প্রধান সড়কসহ কিছু এলাকা থেকে পানি নেমে গেলেও নগরীর অধিকাংশ এলাকাই পানির নিচে তলিয়ে আছে। ফলে পানিবন্দী এসব এলাকার মানুষের দুর্দশা চরমে পৌঁছেছে। এমন দুঃসময়েও পাশে পাচ্ছেন না সিটি কর্পোরেশন তথা মেয়র বা কাউন্সিলরদের। অনেকটাই উধাও হয়ে আছেন তারা। খোঁজ মিলছে না কারোরই।
গতকাল সোমবার নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর মুলাটোল, গুড়াতিপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, গনেশপুর, বাবুখাঁ, আদর্শপাড়া, হাবিবনগর, বালাটারী, দেওডোবা, পাঠানটারী, পার্বতীপুর, কেরানীপাড়া, শালবন, তাজহাট, মাহিগঞ্জ, রবার্টসন্সগঞ্জ, মুসলিমপাড়া, বাবুপাড়া, ঠিাকাদারপাড়া, নুরপুর, মরিচটারী, জুম্মাপাড়া, শালবন, দখিগঞ্জ, মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা এলাকা, সেনপাড়া, হাজিপাড়া, মুলাটোল, মুন্সিপাড়া, গোমস্তপাড়া, গুপ্তপাড়া, খলিফাপাড়া, বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সর্দারপাড়া, ঈদগাহপাড়া, ধাপ, লালকুঠি, রাধাবল্লভ, হনুমানতলাসহ অনেক এলাকায় এখনো হাঁটুপানি রয়েছে। কোথাও কোথাও এখনও কোমরপানি রয়েছে। এখনো পানির নিচে এসব এলাকার রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে এসব এলাকার অনেক পরিবার আশ-পাশের স্কুল-কলেজের উঁচু ভবনে আশ্রয় নিয়েছে। অনেকেই আত্মীয়দের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে। বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোর মাঝে চরম খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে।
তবে গতকাল সোমবার বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ উদ্যোগে খিচুড়িসহ শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। তবে তা চাহিদার তুলনায় অতি নগন্য। বিভিন্ন এলাকা থেকে পানি নেমে যাওয়ায় ঘরে ফিরছেন স্থানীয়রা। নষ্ট হয়ে যাওয়া আসবাবপত্র শুকিয়ে নিচ্ছেন তারা। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারেনি তারা। এদিকে ২য় দিনেও এমন পানিবদ্ধতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মানুষ। স্কুল-কলেজে আশ্রয় নেয়া মানুষরা উৎকন্ঠায় সময় অতিবাহিত করছেন। তাদের অভিযোগ সিটি কর্পোরেশনের অবহেলায় অপূরণীয় ক্ষতি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। পানিবন্দী হয়ে দু’দিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করলেও এখন পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন থেকে তাদের কোন খোঁজখবর নেয়া হয়নি।
নগরীর মুলাটোল এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেন জানান, গত রোববার থেকে স্কুলে পরিবার নিয়ে আছি। বাড়ির বিছানার ওপরে এখনো পানি। কেউ কোন খোঁজ নিচ্ছে না। অসহায় হয়ে এখানে পড়ে রয়েছি। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্কুল-কলেজে আশ্রয় নেয়া ছাড়াও নিজ বাড়িতেই থাকা অনেক নিম্ন আয়ের মানুষ খাদ্যাভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। পানিবন্দী থাকায় তারা কাজে যেতে পারছেন না। তাছাড়া নগরীর অধিকাংশ রাস্তা এখনও পানির নিচে থাকায় রিকশা বা অটো রিকশা নিয়ে বের হতে পারছেন না। ফলে তাদের ঘরের খাবার ফুরিয়ে গেছে। অনতিবিলম্বে এসব পরিবারে খাদ্য সরবরাহ করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রসিকের প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের এলাকা ২শ’ বর্গ কিলোমিটার এলাকা ব্যাপী। বিশাল এই নগরীতে অন্তত ৫০ হাজার হতদরিদ্র মানুষ নগরীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি জানান, জরুরি ভিত্তিতে পানিবন্দী মানুষদের জন্য খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৃষ্টি

১৯ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ