Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘জিজুর সেঞ্চুরি’র নায়ক রামোস

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

স্প্যানিশ লা লিগার চলতি মৌসুমের শুরুটা পরিকল্পনামাফিক হয়নি রিয়াল মাদ্রিদের। নিজেদের প্রথম ম্যাচে রিয়াল সোসিয়েদাদের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিতে কোনো ভুল করেনি প্রতিযোগীতার সফল দলটি। দারুণ ছন্দে থাকা রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়েও পূর্ণ তিন পয়েন্ট আদায় করে নিয়েছে লস ব্লাঙ্কোসরা। তবে গতপরশু রাতে প্রতিপক্ষের মাঠে ৩-২ গোলের কষ্টার্জিত জয়ই পেয়েছে লা লিগার শিরোপাধারী রিয়াল। ম্যাচের শেষ দিকে পেনাল্টি থেকে জয়সূচক গোলটি করেন রিয়াল দলনেতা সার্জিও রামোস।

সাম্প্রতিক সময়ে রিয়ালের জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে বেতিস। আগের তিনবারের মুখোমুখি লড়াইয়ে জয়হীন ছিল জিনেদিন জিদানের শিষ্যরা। লা লিগায় তাদের সবশেষ হারটিও ছিল বেতিসের বিপক্ষে। এদিনও তেমন কিছুর শঙ্কা জেগেছিল। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিজেদের জাত চেনায় সফরকারীরা। ফেদেরিকো ভালভার্দের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যাওয়া রিয়াল আইসা মান্দি ও উইলিয়াম কারভালহোর গোলে বিরতির আগেই পিছিয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে প্রতিপক্ষের ভুলে সমতায় ফেরে তারা। নিজেদের জালেই বল পাঠানো এমারসন ৬৭তম মিনিটে লাল কার্ড দেখলে দশ জনের দলে পরিণত হয় স্বাগতিকরা। এরপর ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দেন স্প্যানিশ তারকা রামোস।

আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ঠাসা ম্যাচে বল দখলে এগিয়ে ছিল রিয়াল। ৫৫ শতাংশ সময়ে বল তাদের পায়ে ছিল। বিপরীতে, সুযোগ তৈরিতে প্রাধান্য ছিল বেতিসের। তারা মোট ১৪টি প্রচেষ্টা নেয় প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠানোর। তবে বড় ধরনের সুযোগ রিয়ালই পেয়েছে বেশি (সাতটি)। দুই ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্রয়ে রিয়ালের পয়েন্ট ৪। তারা আছে লিগের পয়েন্ট তালিকার পাঁচ নম্বরে। টানা দুই জয়ের পর হারের স্বাদ নেওয়া বেতিসের অর্জন তিন ম্যাচে ৬ পয়েন্ট। গোল ব্যবধানে তারা রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে।

তবে আরেকটি কারণে ম্যাচটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে জিনেদিন জিদানের জন্য। বেতিসকে হারিয়ে লা লিগায় দারুণ এক মাইলফলকের দেখা পেয়েছেন রিয়াল কোচ। ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি রিয়াল মূল দলের কোচ হন জিদান। ফরাসি কিংবদন্তি কি তখন ভাবতে পেরেছিলেন এতটা পথ পেরিয়ে আসবেন? রিয়ালের ইতিহাসে ডাকাবুকো কোচের অভাব নেই। কিন্তু তাঁদের অনেকেই ক্লাবটির ডাগ আউটে বেশি দিন টিকতে পারেননি। এদিকে রিয়াল মূল দলের কোচ হওয়ার আগে জিদানের বড় কোনো দল সামলানোর অভিজ্ঞতাও ছিল না। সেখান থেকে দুই মেয়াদে এই ক্লাবের দায়িত্ব নিয়ে তিনি লিখে চলছেন রূপকথা। এদিন সে রূপকথায় যোগ হলো নতুন পাতা- ১০০তম জয়!

রিয়াল কোচ হিসেবে কাল লা লিগায় শততম জয় তুলে নিয়েছেন জিদান। দলটিকে তিনবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানো এ কোচ স্পেনের শীর্ষস্থানীয় লিগে এ নিয়ে ১৪৭তম ম্যাচে রিয়ালের ডাগ আউটে বসে ১০তম জয় তুলে নিলেন। এর মধ্যে ঘরের মাঠে জিতেছেন ৫৫ ম্যাচ, প্রতিপক্ষের মাঠে ৪৫ ম্যাচ। এ পথে জিদানের খেলোয়াড়দের গোল করা ও গোল হজমের পরিসংখ্যানটা দলটির সমর্থকদের জন্য সন্তুষ্টির উপলক্ষ। ১৪২ গোল হজমের বিপরীতে ৩৪২ গোল করেছে জিদানের রিয়াল।

জিদান রিয়াল কোচ হিসেবে লা লিগায় যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতলেন তা কিন্তু নয়। মিগুয়েল মুনোজকে নিশ্চয়ই জানা আছে? ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সফল কোচ হিসেবে ধরা হয় মুনোজকে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত রিয়াল কোচ হিসেবে দুবার ইউরোপিয়ান কাপ (চ্যাম্পিয়নস লিগ) ও নয়বার লিগ জিতেছেন স্পেনের সাবেক এ মিডফিল্ডার। এই মুনোজ লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদ কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জিতেছেন- ২৫৭। জয়ের হিসেবে জিদানের সামনে এখন শুধুই মুনোজ। তবে লা লিগায় দ্রূততম ১০০ ম্যাচ জয়ের দৌড়ে জিদান তৃতীয়। বার্সেলোনা কোচ হিসেবে ১৩২তম ম্যাচে এসে শততম জয় তুলে নিয়েছিলেন পেপ গার্দিওলা। এরপর মুনোজ (১৩৯) এবং তারপর জিদান (১৪৭)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জিজুর-সেঞ্চুরি

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ