Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মিয়ানমারেই ফিরতে চাই

ভাসানচর পরিদর্শনে শেষে রোহিঙ্গারা

কক্সবাজার ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

নোয়াখালীর ভাসানচরে যাওয়ার চেয়ে রোহিঙ্গারা নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরতে বেশি আগ্রহী বলে জানা গেছে । সেখানকার পরিবেশ, অবকাঠামো নিয়ে তাদের কেউ কেউ প্রশংসা করলেও স্থায়ীভাবে থাকতে রাজি নয় তারা। স্বদেশ ভূমি মিয়ানমারে ফিরতে বেশি আগ্রহী তারা।

সরকারের সহযোগিতায় স¤প্রতি তিন নারীসহ রোহিঙ্গাদের ৪০ জনের একটি প্রতিনিধি দল নোয়াখালীর হাতিয়া ভাসানচর পরিদর্শনে যান। তারা দেখেছেন সেখানকার থাকার ঘর, খাদ্য গুদাম, খেলার জায়গা, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্কুল, মসজিদ, কবরস্থান, পুকুর, আশ্রয়কেন্দ্র ইত্যাদি। দুইদিন পর ক্যাম্পে ফিরে অনুভূতি প্রকাশ করেন রোহিঙ্গা নেতারা। জানালেন অনেক তথ্য ও অভিজ্ঞতা।
মৌলভী আবুল কালাম জানান, ভাসানচরে অনেক কিছু দেখেছেন। তা সুন্দর লেগেছে। অন্যান্য রোহিঙ্গাদের তারা এসব বুঝাচ্ছেন। আরেক রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, দু’চারজনে শান্তি বুঝালে হবে না। তাদের দশজন যেদিকে তিনিও সেদিকে। তার একার কোনো মত নেই। তবে, সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় সবদিক বিবেচনা করে নেয়া দরকার। সাধারণ রোহিঙ্গাদের মত ভিন্ন। তারা কোনোমতেই ভাসানচরে যেতে রাজি নয়। তাদের মতে, ভাসানচর একটি দরিয়া। এই দরিয়ার মাঝে যাবে না তারা। প্রয়োজনে ক্যাম্পে না খেয়ে থাকবে।
উখিয়া ক্যাম্প-১৯, বøক-ডি-১২ তে থাকেন ছলিমা নামক পঞ্চাশোর্ধ এক মহিলা। তার সঙ্গে কথা হলে জানান, তার মেয়ে নুর কায়েদার সাথে মালয়েশিয়ার এক ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছে ৩ বছর আগে। স্বামীর দেখিয়ে দেয়া দালালের হাত ধরে বোটে করে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ধরা পড়ে। সে বর্তমানে ভাসানচরে আছে। প্রথমদিকে ফোনে কথা বললেও এখন মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ নাই। ওই সময় মেয়ে নুর কায়েদা জানিয়েছিল, ভাসানচর তাদের জন্য এক প্রকার বন্দিশালা। পরিবারের কেউ যেন ওখানে না যায়। মেয়ের কথার সূত্র ধরে ছলিমাও ভাসানচরের বিপক্ষে। তার মতে, যতদিন আছে ক্যাম্পেই থাকবে। অন্য কোথাও যেতে রাজি নয় তারা।
একই কথা নুরুল আমিন নামক ষাটোর্ধ আরএক রোহিঙ্গার। তার মতে, ভাসানচরে পাঠানোর চেয়ে কোনো একটি পাহাড়ে ফেলে দিলে অনেক ভালো হবে। ক্যাম্পে যেভাবে আছে সেভাবেই থাকতে চায় তারা। এদিকে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় উখিয়া ও টেকনাফের ওপর চাপ কমাতে ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিতে চায় সরকার। আর এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছে বিশিষ্ট জনেরা। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, জনসংখ্যার আধিক্য বিবেচনা করে এক লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে নিতে সরকারি সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং বাস্তবসম্মত। এটি একটি সুন্দর আয়োজন। রোহিঙ্গারা স্বদেশে ফেরত না যাওয়া পর্যন্ত ভাসানচরে যাওয়াটাই উচিত ও যুক্তিযুক্ত বলে মনে করেন তিনি।
অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. সামছু-দ্দৌজা জানান, বঙ্গোপসাগর থেকে উদ্ধার করা ৩০৬ জন রোহিঙ্গা এখন ভাসানচরে ভালোই আছেন। স¤প্রতি রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি দল ভাসানচর ঘুরে দেখেছেন। সেখানে অবস্থানরতদের সঙ্গে তারা কথা বলেছেন। স্বচক্ষে সব পরিবেশ দেখেছেন। কারো কারো মতে ভাসানচরে যাওয়ার চেয়ে নিজ দেশে ফিরতে বেশি আগ্রহ রোহিঙ্গাদের প্রকাশ প্রত্যাবাসন বিরোধী ষড়যন্ত্রের কোন অংশ কিনা তাও খতিয়ে দেখা দরকার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গারা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
১০ অক্টোবর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ