Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্ধশত ছোট-বড় পাহাড় ধস বিধ্বস্ত ৪ শতাধিক বাড়ি

শামসুল হক শারেক, রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ফিরে : | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০১৮, ১২:০১ এএম

এই বর্ষায় উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নয়া রোহিঙ্গাদের দু:খ দুর্দশার কোন শেষ নেই। ভারী বর্ষণ হলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে পাহাড় ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশঙ্কা প্রতিনিয়ত। এরকম ঝুঁকিতে বসবাস করছে প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা। কম বেশী পাহাড় ধসের আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদশে বসবাসর করা মিয়ানমারর থেকে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে আসা অধিকাংশ রোহিঙ্গারা।
এই বর্ষার আগে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরকার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করলেও এ পর্যন্ত মাত্র ৩৫ হাজার রোহিঙ্গাকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে সরিয়ে নয়া সম্ভব হয়েছে। শরনার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোঃ আবুল কালাম জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রাণহানির আশঙ্কা করে অতি ঝুকিপূর্ণ রোহিঙ্গাকে ইতোমধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকীগুলোতে তেমন বেশী ঝুঁকি না থাকায় আপাতত অন্যত্রে সরানোর পরিকল্পনা নেই। তবে পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে বাকীদের মধ্য থেকেও ঝুঁকিপূর্ণদের সরিয়ে নেওয়ার হবে।
গত বছরের ২৫ আগস্টের পর উখিয়া ও টেকনাফের ৫ হাজার একর বনভূমি দখল করে পাহাড়ে ও পাহাড়ের পাদদেশে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৭লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে থেকে বসবাসকারী আরো ৪লক্ষাধিক রোহিঙ্গাসহ ১১ লাখ ১৮ হাজার মমত রোহিঙ্গার বসবাস এখন উখিয়া-টেকনাফে। বৃষ্টির কারনে আশ্রয় নেয়া এসব রোহিঙ্গাদের জনজীবনে নেমে এসে বিপর্যয়।
আরাকানে (রাখাইনে) বর্মী সেনা, বিজিপি ও রাখাইন উগ্রবাদীদের নির্যাতনের শিকার হয়ে এদেশে পালিয়ে এসে এবার তাদের বেঁচে থাকার লড়াই প্রকৃতির সাথে। এখন প্রতিদিনের টানা ভারী বর্ষণের কারণে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অধিকাংশ পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় গত ৫ দিনে প্রায় অর্ধশত ছোট-বড় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৪শতাধিক বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মারা গেছে এক শিশুসহ ২জন। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক রোহিঙ্গা নারী পুরুষ।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে উখিয়ার কুতুপালংয়ের মধুরছড়া, বালুখালী, ময়নার ঘোনা, জামতলী, থাইংখালী ও টেকনাফের উংচিপ্রাং-এর রোহিঙ্গা ক্যাম্প। এসব এলাকার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অনেক পাহাড়ে ভয়াবহ ফাটল দেখা দিয়েছে। মধুরছড়া ১৭নং ক্যাম্পের আশ্রিত রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ ও শফিকুর রহমান জানান, গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় ভয়ে রোহিঙ্গারা ঝুপড়ি থেকে বের হতে পারছেনা।
একই ভাবে কুতুপালং লম্বাশিয়া, ময়নারঘোনা, তাজনিমারখোলা, বালুখালী, শফিউল্লাহকাটায় ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গা পরিবারগুলো চরম আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছে বলে জানান সেখানকার অনেক রোহিঙ্গা।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র অবজারভার দুলাল চন্দ্র দাশ জানান, নিন্মচাপের প্রভাবে কক্সবাজারের আশে-পাশের এলাকাগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। ঝড়ো হাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এসময় পাহাড় ধ্বসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোহিঙ্গারা

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০
১০ অক্টোবর, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ