Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় মাতৃসেবা নিয়ে মানুষের পাশে মা-টেলিহেলথ সেন্টার

সেবা নিয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার জন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৯:০৫ পিএম

মহামারির করোনার সরাসরি প্রভাব পড়েছে জনগনের স্বাস্থ্য এবং সমৃদ্ধির ওপর (এসডিজি ৩)। একইভাবে প্রভাবিত করেছে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ এবং কর্মসংস্থানকে। জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) তৃতীয় লক্ষ্য বাস্তবায়নে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই লক্ষ্য পূরণে মাতৃমৃত্যু হ্রাসসহ পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের মাধ্যমে মৃত্যু কমাতে কাজ করছে ‘মা টেলিহেলথ’। পাশাপাশি সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে অ-সংক্রামক রোগ থেকে মৃত্যুহার হ্রাস নিশ্চিত করতে এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে সুস্থ রাখতেও ভূমিকা রাখছে এই টেলিহেলথ সেন্টারটি। করোনাকালীন সময়ে নিরবচ্ছিন্ন মাতৃসেবা দিয়ে গর্ভবতী ও মাতৃদুদগ্ধদানকারী মা ও শিশুর সেবা পৌঁছে দিচ্ছে প্ল্যাটফর্মটি। মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে, তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ ও এটুআইয়ের তত্ববাবধনে সেবা দিচ্ছে মা টেলিহেলথ সেন্টার। এতে কারিগরি সহায়তা করছে বেসিস, সিনেসিস আইটি ও স্বাস্থ্য বাতায়ন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রায় ১০ লাখ মায়ের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়া লক্ষ্যে সেন্টারটি গত বছরের ১৪ জুন চালু হয়। বর্তমানে পাইলট প্রকল্প হিসাবে ১৩টি উপজেলায় সেবা দিচ্ছে। দেশে প্রথমবারের মতো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সমন্বয়ে গঠিত একটি মাল্টি ডিসিপ্লিনারি টীম সরাসরি গর্ভবতী মহিলাদের, দুগ্ধদানকারী মা ও শিশুদের পরিষেবা প্রদান করে যা সরকারের স্বাস্থ্য সেবার পরিপূরক। গর্ভবতী মা, দুগ্ধবতী মা ও দুই বছর বয়সী শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং হেলথ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এটি সেবা প্রদান করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিদ, কাউন্সেলিং সেবা এবং স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম কাজ করে যাচ্ছে। বেসরকারী খাতের সঙ্গে কার্যকর রেফারাল সিস্টেমসহ শিশুদের স্বাস্থ্যসেবার জন্য টেলিহেলথ সেবা নাম্বার ৩৩৩ এবং স্বাস্থ্য বাতায়ান (১৬২৬৩); সার্বক্ষনিক সেবা দিচ্ছে।

এক সমীক্ষার তথ্য অনুযায়ি, মা টেলিহেলথ সেন্টার গত ১৪ জুন থেকে চলতি ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ৭৯ হাজার ৪৪২ জনকে সেবা দিয়েছে। যার মধ্যে ৮ হাজার ৮১৭ জনকে স্ত্রীরোগবিদ্যা বিশেষজ্ঞ সেবা, ১২ হাজার ৪৪৬ জনকে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সেবা দুই হাজার ১৪২ জনকে সাধারন চিকিৎসা সেবা, ৯৪১ জনকে মনরোগের চিকিৎসা সেবা, দুই হাজার ২৩০ জনকে পুষ্টি সেবা, ২৯৪ জন করোনা রোগীকে চিকিৎসা সেবা, ৩৬১ জন করোনা রোগীর ফলো-আপ নেয়া হয়েছে।

এটুআইয়ের চীফ ই-গভর্ন্যান্স স্ট্র্যাটিজিস্ট, লীড ফোকাল ডিজিটাল সার্ভিস এক্সিলারেটর, ফরহাদ জাহিদ শেখ বলেন, এসডিজি'র তৃতীয় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করছে মা-টেলিহেলথ সেন্টার এবং এর মাধ্যমে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যকর জীবন নিশ্চিত এবং মাতৃমৃত্যু হ্রাস করতে এটি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আমরা আশা করি। এছাড়াও করনাকালীন এ সময়ে মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ডিজিএইচএস, এটুআই এবং সিনেসিস আইটি একসঙ্গে মা-টেলিহেলথ নিয়ে কাজ করছে।

করোনা মহামারী এবং এর বাইরেও বাংলাদেশে গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মহিলাদের কার্যকর এএনসি, পিএনসি এবং জরুরী সেবা দেয়া হচ্ছে বলে জানালেন সিনেসিস হেলথ এর সিইও ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নিজামউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মা- টেলিহেলথ সেন্টারের মাধ্যমে গর্ভবতী মা, দুগ্ধবতী মা ও দুই বছর বয়সী শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ, প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা এবং হেলথ সেন্টারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে এটি সেবা প্রদান করে। এ লক্ষ্যে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, শিশু বিশেষজ্ঞ, পুষ্টিবিদ, কাউন্সেলিং সেবা এবং স্থানীয় সরকারের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত টিম কাজ করে যাচ্ছে। প্রতিদিন দুটি শিফটে সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এই সেবা প্রদান করা হচ্ছে। ৬ জন মেডিকেল ডাক্তার যাদের মধ্যে দুই জন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, দুই জন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, এক জন সাধারন চিকিৎসক এবং একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। এছাড়াও একজন পুষ্টিবিদ এবং ৮ জন হেলথ ইনফরমেশন অফিসার মা- টেলিহেলথ সেন্টারে দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়াও এটি জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য, ওষুধ, অ্যাম্বুলেন্সও প্রদান করছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ