পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। প্রথম ধাপে রাজধানীর ডেমরার করিম জুট মিলসের শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়টি বিবেচনায় এসেছে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি)। আজ মঙ্গলবার ২ হাজার ৩৭১ শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। তাদের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে অবসরে যাওয়া ৬১২ শ্রমিক আটকে থাকা পেনশনের টাকাও পাবেন। অর্থ এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার শ্রমিকদের ব্যাংক হিসাবে অর্থ পাঠানোর কাজ শুরু হচ্ছে। একই সঙ্গে সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমেও পাওনা পরিশোধ করা হবে। মোট পাওনার অর্ধেক সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে পরিশোধের সিদ্ধান্ত আগেই নেয়া হয়েছে। প্রথম ধাপের শ্রমিকদের পাওনা বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। চলতি সেপ্টেম্বরের মধ্যেই বাকি মিলগুলোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের কাজ শেষ হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ বলেন, পাটকলগুলো বন্ধ করার সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর পক্ষ থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে শ্রমিকদের সমুদয় পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ মাসের বাকি কয়েক দিনের মধ্যে অন্যান্য মিলের শ্রমিকদেরও পাওনা পরিশোধ করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নির্দিষ্ট পাটকলের বিপরীতে অর্থ ছাড় করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকদের পাওনা খুব কম। তাদের অনেকে দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টা কাজ করেছেন। তবে কম আর বেশিই হোক তাদের প্রাপ্য শিগগিরই বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
বিজেএমসি সূত্রে জানা গেছে, করিম জুট মিলসের শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার। তাদের মধ্যে বন্ধ হওয়ার আগে কাজ করতেন ১ হাজার ৭৫৯ জন। আগেই অবসরে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা ৬১২। এই ২ হাজার ৩৭১ শ্রমিকের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১১৪ কোটি টাকা। এই অর্থের মধ্যে শ্রমিকপ্রতি মোট পাওনার অর্ধেক তাদের ব্যাংক হিসাবে পাঠানো হবে। বাকি অর্ধেক সঞ্চয়পত্র আকারে পাবেন তারা। উভয় পদ্ধতিতে প্রাপ্য এই অর্থ শ্রমিকদের হাতে তুলে দেয়া হবে। জানা গেছে, প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের বাকিরা অস্থায়ী বা ঠিকা ভিত্তিতে কাজ করতেন। অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকের সংখ্যা ২ হাজার ৬২৫। তাদের পাওনা খুব বেশি নয়। শিগগিরই তাদের পাওনাও পরিশোধ করা হবে।
সূত্র জানিয়েছে, শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে ৬ হাজার ৬০০ কোটি টাকা লাগবে। এই হিসাব আরও যাচাই-বাছাই করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চ‚ড়ান্ত হিসাব অনুমোদনের পর পাওনা পরিশোধ শুরু হবে। মজুরি কমিশন-২০১৫ অনুযায়ী গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের অর্থ নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা নির্ধারণে গঠিত টাস্কফোর্স প্রাথমিক হিসাব তৈরি করেছে। শ্রমিকরা কে কত টাকা পাবেন, সেই হিসাব বিজেএমসির কাছে জমা দিয়েছে টাস্কফোর্স। প্রাথমিক এই হিসাবের ওপর নিজেরাও যাচাই-বাছাই করেছে বিজেএমসি। অধিক স্বচ্ছতার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়ার আগে নিরপেক্ষ অডিট ফার্ম দিয়ে হিসাবটি আবার নিরীক্ষা করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বিজেএমসি থেকে তালিকা পাওয়ার পর স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। তালিকায় থাকা কিছু নাম রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিক কি না, সেই সন্দেহ থেকে মুক্ত হতে পারেনি কমিটি। এ ছাড়া শ্রমিকদের বিপরীতে দেখানো পাওনার পরিমাণ নির্ভুল কি না, সে ব্যাপারেও সন্দেহ রয়েছে তাদের। এ কারণে অডিট অফিসের দুজন কর্মকর্তাকে পুনর্বাছাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা নমুনার ভিত্তিতে পুরো তালিকা যাচাই-বাছাই করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এর ভিত্তিতেই করিম জুট মিলসের শ্রমিকরা তাদের পাওনাদি পাচ্ছেন।
নোটিস মেয়াদের, অর্থাৎ জুলাই-আগস্টের ৬০ দিনের মজুরি এরই মধ্যে পেয়েছেন শ্রমিকরা। প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ), গ্র্যাচুইটি, গোল্ডেন হ্যান্ডশেক সুবিধাসহ সমুদয় পাওনার ৫০ শতাংশ নিজ নিজ ব্যাংক হিসাবে এবং বাকি ৫০ শতাংশ সঞ্চয়পত্র আকারে পরিশোধ করা হবে। এরই মধ্যে শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর বিজেএমসির হাতে পৌঁছেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।