Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চরম হতাশায় শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক পরিবারগুলো

দু’মাসেও পরিশোধ হয়নি পাওনা টাকা

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ভাল নেই পাটকল শ্রমিকরা। দুঃখ দুর্দশা যেন তাদের পিছু ছাড়ছে না। শেষ বয়সে এসে অনেকেই বুঝে উঠতে পারছে না চাকরি ছাড়া এখন কি করবেন? কারো কারো আশা ছিল এককালিন বকেয়া বেতন পেয়ে ছোট খাটো ব্যবসা বাণিজ্য করবেন। ধার দেনা পরিশোধ করবেন। কিন্তু সবকিছুই বুমেরং। কর্তৃপক্ষ আগষ্টের মধ্যে সকল দেনা পাওনা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিলেও চলতি মাসের মাঝামাঝিতেও কোনো খবর নেই। চরম হতাশার মধ্যে রয়েছে শিল্পাঞ্চলের শ্রমিক পরিবারগুলো।

এদিকে আন্দোলন সংগ্রামের এক পর্যায়ে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে চালু করা হবে। কিন্তু মিল চালু দূরে থাক, দুই মাস চলে গেলেও এখনো খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত সাতটি জুট মিলের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বকেয়া পাওনার টাকা পরিশোধ করা হয়নি।
পাটকলগুলো বন্ধের সময় কেবলমাত্র দুই মাসের (জুন-জুলাই) বেসিকের ২৬ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। বেতন ও গ্র্যাচুইটিসহ বকেয়া পাওনা না পাওয়ায় দিশেহারা এই চাকরিহারা শ্রমিক পরিবারগুলো।

ক্রমাগত লোকসানের কারণে গত ২৫ জুন খুলনা অঞ্চলের ৯টিসহ দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এরপর ২ জুলাই পাটকল বন্ধসহ গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের আওতায় শ্রমিকদের অবসায়নের প্রজ্ঞাপন মিলগুলোর নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দেয়া হয়। খুলনা অঞ্চলের বন্ধ হওয়া ৯টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল হচ্ছে, ক্রিস্টে জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, স্টার জুট মিল, ইস্টার্ন জুট মিল, আলিম জুট মিল, জেজেআই জুট মিল ও কারপেটিং জুট মিল।
অপরদিকে খালিশপুরের সবচেয়ে বড় ক্রিসেন্ট জুটমিলে গেলে সেখানে দেখা গেল প্রধান গেটজুড়ে অনেক শ্রমিকের জটলা। কেউ নোটিশ বোর্ডের দিকে তাকিয়ে। কেউ সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়। কেউ বকেয়া পাওনা দিবে কি না তা জানতে সিবিএ নেতাদের সাথে আলোচনা। তবে সবার চোখেমুখে ক্ষোভ আর হতাশা।

আক্ষেপের সাথে তারা বলেন, অভিযোগ শোনার যেন তাদের কেউ নেই। মিলের কোনো কর্মকর্তারও দেখা পাওয়া যায় না। একমাত্র সাংবাদিকরাই আমাদের ভরসা। দু’কলম লিখে আমাদের সহযোগিতা করেন। যাতে দ্রুত বকেয়া পেতে পারি।
আরেক শ্রমিক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, বকেয়া না পেয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াসহ সংসার চালাতে ভ্যান-রিকশা চালিয়ে দিন কাটাচ্ছি। সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবে তা জানি না।

ক্রিসেন্ট জুট মিলের ম্যানেজার (অ্যাডমিন) মো. কালাম মল্লিক বলেন, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা এখনো পরিশোধ করা হয়নি। শ্রমিকদের বকেয়া ছয়টি বিলের ব্যাপারেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, বন্ধ ঘোষিত মিল চালুর ব্যাপারেও আমাদের কিছু জানা নেই।
বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়ক (লিয়াজো অফিসার) মো. গোলাম রব্বানী বলেন, অবসরপ্রাপ্ত আট হাজার একশত শ্রমিকের দুই মাসের বেসিকের টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। তবে বেতনসহ অন্যান্য বকেয়া এখনো পরিশোধ করা হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাটকল

২৫ ডিসেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ