Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লেসবসে প্রতিস্থাপন ক্যাম্প নির্মাণের বিরুদ্ধে শরণার্থীদের বিক্ষোভ

চার শ’ শিশু আশ্রয় পাচ্ছে দশ দেশে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০২ এএম

গ্রিসের লেসবস দ্বীপে শরণার্থীদের আশ্রয়শিবির পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর হাজার হাজার অভিবাসী ও শরণার্থী আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন। তাদেরকে ঠাঁই দেয়ার জন্য আরেকটি ক্যাম্প নির্মাণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রতিস্থাপন ক্যাম্প নির্মাণের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন এসব অভিবাসী। বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন মোরিয়ার শরণার্থী এবং গ্রিক দ্বীপে অবস্থানকারীরা। এর মধ্যে মোরিয়া ক্যাম্পে গাদাগাদি করে বসবাস করছিলেন প্রায় ১৩ হাজার অভিবাসী। তারা আর সেখানে থাকতে চান না। তারা চান গ্রিসের মূল ভূখন্ডে প্রবেশ করতে। কিন্তু তাদেরকে সেখান রাখতেই আশ্রয়শিবির পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে ওই দ্বীপে অবস্থানকারীরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা সব সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে বন্ধ করে দিয়েছে সহায়তা সরবরাহ। এই আশ্রয়শিবিরে থাকা ৪০০ শিশুকে ইউরোপের ১০টি দেশ আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। এতে আরো বলা হয়, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নতুন করে আবাসন গড়ে তোলা শুরু করেছে গ্রিক সেনাবাহিনী। অন্যদিকে আগুনে শিবির পুড়ে যাওয়ায় অসংখ্য পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে, রাস্তার পাশে রাত্রিযাপন করছেন। আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য মোরিয়া শিবির গড়ে তোলা হয়েছিল। সেখানে যাতে ৩০০০ মানুষ অবস্থান করতে পারেন- এমন উপযোগী করে তা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন ৭০ টি দেশের আশ্রয়প্রার্থীরা। এর মধ্যে বেশির ভাগই আফগানিস্তানের। শুক্রবার মোরিয়া ক্যাম্পমুখী সব সড়কে পুলিশি প্রতিবন্ধকতার দিকে অগ্রসর হন অভিবাসী ও শরণার্থীরা। এ সময় তাদের হাতে ছিল ‘ফ্রিডম’ লেখা ব্যানার। তারা নতুন আশ্রয়শিবির নির্মাণের বিরোধিতা করতে থাকেন। এ ছাড়া মোরিয়ায় নতুন আশ্রয় শিবির নির্মাণের বিরোধিতা করেন স্থানীয়রাও। স্থানীয় এক নেতা ভ্যাঙ্গেলিস ভায়োলেটজিস বলেছেন, আমরা এখানে আরেকটি আশ্রয়শিবির চাই না। এখানে যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণের বিরোধিতা করবো আমরা। এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি আমরা ৫ বছর। এখন এদেরকে সরিয়ে অন্য কোথাও নিয়ে যান। অন্যদেরকে এই দায়ভার কাঁধে নিতে বলেন। আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর ওই এলাকা বৃহস্পতিবার সফর করেছেন ইউরোপীয়ান কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মারগারিটিস শিনাস। এরপর তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ধ্বংস হয়ে যাওয়া ওই আশ্রয়শিবিরটির পরিবর্তে একই স্থানে আধুনিক একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। তিনি আরো বলেছেন, অভিবাসী ও আশ্রয় প্রার্থীদের বিষয়ে নতুন একটি প্রস্তাবনা আগামী ৩০ শে সেপ্টেম্বর উত্থাপন করবে কমিশন। এর মধ্য দিয়ে এই অগ্রহণযোগ্য পরিস্থিতির ইতি ঘটবে। শুক্রবার জার্মানি ঘোষণা করেছে যে, মোরিয়ার নিঃসঙ্গ যেসব শিশু-টিনেজ রয়েছে তাদের ৪০০ জনকে গ্রহণ করতে রাজি হয়েছে ইউরোপের ১০টি দেশ। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হোর্স্ট সিহোফার বলেনে, ১০০ থেকে ১৫০টি করে শিশুকে আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে ফ্রান্স ও জার্মানি। নেদারল্যান্ডস নিতে চেয়েছে ৫০টি শিশুকে। ফিনল্যান্ড নেবে ১১ জনকে। অন্য দেশগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আরও যারা এসব শিশুকে নেবে বলে আশা করা হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া, লুক্সেমবার্গ, পর্তুগাল। তিনি আরো বলেন, ইউরোপে আমাদের কি পরিবর্তন আনা প্রয়োজন তা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে মোরিয়ার ওই অগ্নিকান্ড। কিন্তু দাতব্য সংস্থাগুলোর একটি গ্রুপ ও এনজিওগুলো জার্মান সরকারের কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছে, শুধু শিশুদের ক্ষেত্রে নয়, সব অভিবাসীর জন্য আরো বেশি করতে হবে। খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে ইউরোপীয় শরণার্থী বিষয়ক নীতির ব্যর্থতার জন্যই ওই ক্যাম্পে লজ্জাজনক পরিস্থিতি ও অগ্নিকান্ডে ভয়াবহতার সৃষ্টি হয়েছে। এখন এসব মানুষকে অবশ্যই সহায়তা করতে হবে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে। ৪০০ শিশুর সবাইকে এখন উড়িয়ে নেয়া হবে গ্রিসের মূল ভূখন্ডে। বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিশনার ইভা জোহানসন বলেছেন, শিশুদেরকে মূল ভূখন্ডে নিয়ে যাওয়ার জন্য যে খরচ হবে তাতে অর্থায়ন করতে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সেখানে তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। তিনি এক টুইটে বলেছেন, মোরিয়ার সব মানুষের নিরাপত্তা ও আশ্রয় এখন অগ্রাধিকারে রয়েছে। বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ