বিশেষ সংবাদদাতা : ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলশ ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এখনো বাংলাদেশ সফর চূড়ান্ত করার কথা জানায়নি। এ মাসেই তাদের নিরাপত্তা প্রতিনিধি দলের বাংলাদেশ সফর করার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর কথা তাদের। তবে তার আগেই গতকাল আন্তঃমন্ত্রাণালয় বৈঠকে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফরের প্রাক-প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গুলশানে হলি আর্টিজানে সশস্ত্র জঙ্গি হামলায় ২০ বিদেশী নিহত হওয়ায় যুক্তরাজ্যের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা জারি করেছে সে দেশের সরকার। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের বাংলাদেশ সফর নির্ভর করছে তাদের সরকারের গ্রিন সিগন্যালের উপর। ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক মরগান বাংলাদেশ সফর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিকল্প হিসেবে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে সিরিজ আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এসব নিয়ে উৎকণ্ঠার কিছুই দেখেননি বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি। ক্রিকেটীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য ধরে রাখতে বাংলাদেশ সফরে আসবে ইংল্যান্ড, এ বিশ্বাসই বদ্ধমূল মাশরাফির। কন্ডিশনিং ক্যাম্পের শুরুতেই মিডিয়াকে সেই বিশ্বাসের কথাই জানিয়েছিলেন মাশরাফি। টি-২০ বিশ্বকাপ শেষে লম্বা সময় দেশে কাটিয়ে ইংলিশ ফিল্ডিং কোচ ঢাকায় ফিরে গতকাল অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দিয়েও একই ধারণা পোষণ করেছেন ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসলÑ ‘আমি আশাবাদী ট্যুরটা যথাসময়ে হবে। পৃথিবীর সকল প্রান্তে খেলতে ইংল্যান্ড প্রতিশ্রæতিবদ্ধ, এটাই মনে করছি। তাদের অনূর্ধ্ব-১৯ দলও এসেছিল যুব বিশ্বকাপে। এখন বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভালো হয়েছে, সচেতনতা বেড়েছে। এখানেও যে, ঝুঁকি আছে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। এমন পরিস্থিতি সবখানেই বিদ্যমান। ইংল্যান্ডকে মূল্যায়ন করতে হবে তাদের খেলোয়াড়দের জন্য এটা নিরাপদ কিনা। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমার মনে হয়, এখানে থাকা নিরাপদ।’
মুম্বাইয়ে তাজ হোটেলে সশস্ত্র হামলার ঘটনায় সফরের মাঝপথে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল সফর স্থগিত করে পরবর্তীতে অবশিষ্ট ম্যাচগুলো খেলতে ভারত সফর করেছে। সেই অতীতও মনে করিয়ে দিয়েছেন হ্যালসল। সম্প্রতি বেলজিয়াম, ফ্রান্স, তুরস্ক, জার্মানীতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পরও যে আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েনি সেই সব দেশে, তাও মনে করিয়ে দিয়েছেন হ্যালসলÑ ‘যা ঘটেছে, তা একটা নির্মমতা। কিন্তু পৃথিবীর সর্বত্র এমন ঘটনা ঘটছে, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, জার্মানি। লন্ডন যখন আক্রান্ত হয় তখন আমি সেখানে ছিলাম। আমি ভারতে ছিলাম যখন তাজ হোটেলে আক্রমণ হয়েছিল। আমরা শুধু এক সপ্তাহ আগে তাজ হোটেলে ছেড়েছিলাম। যারা আক্রান্ত হচ্ছে ত খুব দুঃখজনক। এই ঘটনায় নিহত হয়েছেন, তাদের জন্য আমার সমবেদনা রইল।’
গুলশানের হলি আর্টিজানে সশস্ত্র হামলায় যুক্তরাজ্য সরকার তাদের দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণে সতর্কতা জারী করায় ইংলিশ ফিল্ডিং কোচ রিচার্ড হ্যালসলের বাংলাদেশে আসা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন অনেকেই। তবে পেশাদার কোচ বলে দায়িত্ব পালনটাই তার কাছে গুরুত্ব বলে ঢাকায় এসেছেন বলে জানিয়েছেন হ্যালসলÑ ‘সবসময় ফিরে আসার ইচ্ছা ছিল। আমি পেশাদার এবং আমার চাকরি হলো কোচ। বিসিবি আমার প্রতি অনেক যতœবান। বেশ কিছুদিন আমাদের কোনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছিল না। এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়ে এছে। তার মানে এটা নয় যে, এসব আর ঘটবে না। কিন্তু ইংল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জার্মানির মতোই। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে, ঝুঁকি সম্পর্কে সাবধান থাকতে হবে এবং শান্তিপূর্ণ পরিবেশের জন্য কাজ করতে হবে।’