পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বদলে যাচ্ছে মগবাজার-মালিবাগ ফ্লাইওভার। নিরাপত্তার জন্য বসানো হবে ৮শ’ ইউনিটের ১ হাজার ৪০৪টি এলইডি লাইট। ফ্লাইওভারের ট্রাফিক সিগন্যাল, সাইন, মার্কিং, সিসি ক্যামেরা ও নিচের রাস্তা, মিডিয়ান এবং ফুটপাতসহ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। ফ্লাইওভার মেরামত ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য থাকবে হাইড্রলিক লেডার, ওয়াটার স্প্রিংকলিং ভেহিকেল ও রোড সুইংপিং ভেহিকেল। একই সাথে বাড়ানো হবে ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যও।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসবের জন্য সরকার একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ‘মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন’-শীর্ষক প্রকল্পটি প্রণয়ন করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অনুমোদন পেলে এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৮০০ ইউনিট এলইডি বাতি স্থাপন, হাইড্রলিক লেডার ক্রয়, ওয়াটার স্প্রিংকলিং ভেহিকেল ও রোড সুইংপিং ভেহিকেল সংগ্রহ এবং মেরামত ও সংস্কার কাজ করা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী রোববার এই প্রকল্পের প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভার তারিখ নির্ধারিত রয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে। পিইসি সভায় পর্যালোচনার পর প্রক্রিয়াকরণ শেষ হলে এটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তরের আগে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৮ সালের ২২ অক্টোবর পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় ওই সভা। সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) বলেন, ফ্লাইওভারের অধিকাংশ রোড লাইট নষ্ট হয়ে আছে, যা ফ্লাইওভারের ওপরের পরিবহন ও যাত্রীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া ট্রাফিক সিগন্যাল সার্কিটও নষ্ট। বিভিন্ন জায়গায় ময়লা পানি জমে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
ওই বৈঠকে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ফ্লাইওভারের নিচের অধিকাংশ জায়গা বেদখল হয়ে আছে। সেগুলো দখলমুক্ত করে যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ফ্লাইওভারের সৌন্দর্যবর্ধন, ফ্লাইওভারে প্রয়োজনীয়সংখ্যক এলইডি লাইট স্থাপন, ট্রাফিক সাইন সিগন্যাল স্থাপন ইত্যাদি অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা প্রয়োজন। পরে ডিএসসিসির আর্থিক সীমাবদ্ধতা থাকায় সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য ডিএসসিসি অংশের ফ্লইওভার সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে এই প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়। প্রকল্পে ডিএসসিসি’র দেওয়া ২০১৮ সালের তালিকা অনুযায়ী যান-যন্ত্রপাতিগুলোর বর্তমান বাজারদর হিসাবে নিয়ে খরচ প্রাক্কলন করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৪০৪টি এলইডি বাতি স্থাপন, দুইটি হাইড্রলিক লেডার, তিনটি ওয়াটার স্প্রিংকলিং ভেহিকেল, দুইটি রোড সুইংপিং ভেহিকেল, একটি জীপ ও তিনটি মোটরসাইকেল সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া ফ্লাইওভারের ট্রাফিক সিগন্যাল, সাইন, মার্কিং সিসি ক্যামেরা ও নিচের রাস্তা, মিডিয়ান এবং ফুটপাতসহ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শুরুতে প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় দাঁড়ায় ৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকায়। প্রকল্পটির ওপর ২০১৯ সালের ৭ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রকল্প যাচাই কমিটি (আইপিইসি) সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তা, মিডিয়ান এবং ফুটপাতসহ রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন কাজ এবং জিপ গাড়ি কেনার অংশ বাদ দিয়ে ডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে। পুনর্গঠিত ডিপিপি অনুযায়ী প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৪২ কোটি ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম প্রধান রেজাউল আযম ফারুকী পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে পিইসি সভার কার্যপত্রে বলেছেন, প্রকল্পটি সম্পূর্ণ সরকারি অর্থে বাস্তবায়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কোনো অবদান নেই। তাই প্রকল্প ব্যয়ের ২০ শতাংশ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের নিজস্ব তহবিল থেকে বহন করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ফ্লাইওভার সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করা এবং নিরাপদে ট্রাফিক চলাচল নিশ্চিত করা। কিন্তু এ প্রকল্পে তিনটি মোটরসাইকেল কেনার প্রস্তাব করা হয়েছে, যা উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই এ অংশিটি বাদ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি কররেশনের অনেকগুলো প্রকল্প চলমান রয়েছে। ওই সব প্রকল্পের আওতায় অনেক যানবাহন, যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় একটি হাইড্রোলিক লেডার, একটি ওয়াটার সিপ্রংকলিং ভেহিকেল ও একটি রোড সুইপিং ভেহিকেলের কথা বলা হয়েছে। এসব যন্ত্রপাতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পিইসি সভায় আলোচনা করা যেতে পারে।
২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই ফ্লাইওভারের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চার লেনের এ ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম্প রয়েছে। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা, বিএফডিসি, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামোটর, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং শান্তিনগর মোড়ে ওঠানামা করার ব্যবস্থা রয়েছে। ৮ দশমিক ৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ তিন তলাবিশিষ্ট চার লেনের এই ফ্লাইওভারটি ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনশীল। এর নিচে বিভিন্ন জায়গায় আটটি বড় মোড় ও তিনটি রেলক্রসিং রয়েছে। ১ হাজার ২১৮ কোটি ৮৯ হাজার ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছে এলজিইডি। এর প্রতি মিটারে খরচ হয়েছে ১৩ লাখ টাকা।
ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলেও এর উপরে ছিল না কোনো বাতি। তাতে রাতে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া ফ্লাইওভারের উপরে খুনের ঘটনা ও ঘটেছে। ফ্লাইওভারের নিচের অংশ শুরু থেকেই অরক্ষিত ও বেদখল হয়ে আছে। এক পর্যায়ে নিচের অংশ ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরাও করা হলেও অনেক অংশে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে দোকানপাট ও গ্যারেজ। খালি অংশজুড়ে চলে মাদকাসক্তদের আড্ডা। চলে মাদক বেচাকেনা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এসব কারণেই নিরাপত্তা জোরদার, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্যবর্ধনে নতুন করে প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। তাতে ফ্লাইওভারের চেহারা ও পরিবেশ অনেকটাই বদলে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।