Inqilab Logo

বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবার বন্যার আশঙ্কা

বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

বন্যার পানি নামছে। ৩৩ জেলায় চার দফায় দীর্ঘস্থায়ী ও ভয়াবহ বন্যার ক্ষত দগদগে। অব্যাহত রয়েছে সর্বনাশা নদীভাঙন। এ অবস্থায় বন্যার ধকল না কাটতেই চলতি সেপ্টেম্বর (ভাদ্র-আশি^ন) মাসে আরেক দফায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস প্রদানের লক্ষ্যে মঙ্গলবার বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় জানানো হয়েছে, সেপ্টেম্বরে বর্ষার মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকবে। সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের কারণে এ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কতিপয় স্থানে ‘স্বল্পমেয়াদি’ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও কমিটির চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন আহমেদ। সভায় পূর্বাভাসে জানানো হয়, সেপ্টেম্বরে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দু’টি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এরমধ্যে একটি বর্ষাকালীন নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এরফলে সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে বর্ষা ঋতু পরবর্তী (শরৎ কাল) অধিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

পূর্বাভাস মতে, এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। গত আগস্ট (শ্রাবণ-ভাদ্র) মাসে সারাদেশে গড়ে স্বাভাবিক হারে বৃষ্টিপাত হয়। তবে অঞ্চলওয়ারি হিসাবে বৃষ্টিপাতে ছিল অসঙ্গতি। আগস্টে ভরা বর্ষার সময়েই রাজশাহী বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৫ ভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৬ ভাগ, রংপুর বিভাগ ৩৪.৬ ভাগ, ঢাকা বিভাগে ২৭.৮ ভাগ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবার চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮.১, বরিশাল বিভাগ ১৮.৩ ভাগ বেশি বর্ষণ হয়।

বিশেষজ্ঞ কমিটি আগস্ট মাসের আবহাওয়া পর্যালোচনা করে জানায়, বর্ষার সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে ৩ থেকে ৫ এবং ১৫ থেকে ২২ আগস্ট দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হয়। আগস্ট মাসে দেশে গড় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১ দশমিক ৩ এবং ০.৯ ডিগ্রি সে. বেশি।
এদিকে গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশের উপর বর্ষার মৌসুমী বায়ু কিছুটা সক্রিয় এবং উপক‚লভাগ সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল অবস্থায় ছিল। প্রধান নদ-নদীর উজানভাগের অববাহিকায় উত্তর-পূর্ব ভারতে এখন পর্যন্ত মৌসুমী বায়ু কম সক্রিয় অথবা অনেক অঞ্চলে নিষ্ক্রীয় রয়েছে। এরফলে আপাতত বৃষ্টিপাতও হচ্ছে কম।

নদ-নদী প্রবাহ পরিস্থিতি
গতকাল পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল রয়েছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সুরমা-কুশিয়ারা নদ-নদীগুলোর পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টায় স্থিতিশীল থাকতে পারে। দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
দেশের নদ-নদীগুলোর ১০১টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৩৭টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৫৭টিতে হ্রাস পায়। ৭ স্থানে পানির সমতল অপরিবর্তিত ছিল।

গরম বেড়েছে
আপাতত জোর নেই মৌসুমী বায়ুর। ভাদ্র মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বর্ষার মৌসুমী বায়ু কম সক্রিয় থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিটেফোঁটা ও অস্থায়ী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রায় অনাবৃষ্টিতে তালপাকা গরম বেড়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় টাঙ্গাইলে ৪০ মিলিমিটার ছাড়া উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত তেমন কোথাও হয়নি। সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫.৩ ডিগ্রি সে.।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য বিভাগের কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সে. বৃদ্ধি এবং রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আসছে সপ্তাহে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বন্যা

১৫ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ