পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের ৫ আইনজীবী প্রদীপকে আইনি সহায়তা দেবেন : সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা কারামুক্ত
মেজর (অব.)সিনহা হত্যা মামলার প্রধান তিন আসামী ওসি প্রদীপ, লিয়াকত, নন্দ দুলালসহ পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াছ এবং তিন এপিবিএন সদস্যের ৪ দিন করে ২য় দফায় রিমান্ড শেষ হচ্ছে আজ শুক্রবার। রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করার কথা রয়েছে তাদের। সূত্র মতে এই পর্যন্ত পাওয়া তথ্য যাচাই বাছাইয়ের জন্য তাদের আবারো রিমান্ডের আবেদন জানাতে পারে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব।
জানা গেছে, ৩১ জুলাই (অব.) মেজর সিনহাকে গুলি করার আগেই এপিবিএন চেকপোস্টের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন ইন্সপেক্টর লিয়াকত ও এসআই নন্দ দুলাল। তারা তখন কথা বলতে দেননি এপিবিএন সদস্যদের। স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানান ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও হত্যা মামলার আসামি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের এক সদস্য আব্দুল্লাহ। গত বুধবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারহার আদালতে আব্দুল্লাহর এই জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। তিনি বলেন, সেদিন লিয়াকত অপেশাদার আচরণ করছিলেন। তাকে দেখে মনে হচ্ছিলো, তিনি কোন শিকারের অপেক্ষা করছিলেন। পাঁচ ঘণ্টা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি শেষে র্যাব আবারও আব্দুল্লাহকে কারাগারে নিয়ে যায়। সিনহা হত্যা মামলায় র্যাবের রিমান্ডে থাকা এপিবিএনের তিন সদস্যের মধ্যে আব্দুল্লাহ চারদিনের মাথায় এ জবানবন্দি দেন। গত ১৮ আগস্ট এপিবিএনের তিন সদস্য এএসআই শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব ও আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনার দিনএই তিনজনই এপিবিএনের চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং তারা ওই নির্মম ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
আরো মামলার এজাহারঃ ১০ লাখ টাকা দাবি করে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে আরো পাঁচ লাখ টাকা না দেয়ায় টেকনাফের আবদুল জলিল নামের এক সিএনজি চালককে কথিত বন্দুকযুদ্ধের নামে ক্রসফায়ারে হত্যা করে প্রদীপ কুমার দাশের লোকজন।
সিএনজি চালক আব্দুল জলিলকে হত্যার অভিযোগ এনে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আরো একটি হত্যা মামলার এজাহার দায়ের করা হয়েছে আদালতে। নিহত আবদুল জলিল টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা পশ্চিম মহেশখালীয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। গতকাল বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট টেকনাফ আদালতে এজাহারটি দায়ের করা হয়। শুনানী শেষে এজাহারটি রুজু না করে ওই ঘটনায় অন্য কোনো হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে কিনা জানাতে টেকনাফ থানার ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়।
নিহত আবদুল জলিলের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম বাদি হয়ে এই এজাহার দায়ের করেন। বাদি পক্ষের আইনজীবী মনিরুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন। এজাহারে বাদি জানান, গত ২০১৯ সালের ৩ ডিসেম্বর পারিবারিক কাজে কক্সবাজারে অবস্থানকালে জেলা ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা মানস বড়–য়ার নেতৃত্বে একদল সাদা পোশাকধারী আল ফুয়াদ হাসপাতালের সামনে থেকে আবদুল জলিল ও তার সাথে থাকা রফিক উল্লাহ একজন আটক করে। এরপর পর তাকে টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আটকের ১২ দিন পর একটি জিআর মামলা করে রফিক উল্লাহকে আদালতে প্রেরণ করা হলেও আবদুল জলিলকে ছাড়া হয়নি। আটকের তিন মাস পর্যন্ত আবদুল জলিলের কোনো খোঁজ পায়নি পরিবার। গত ৩ মার্চ হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান জলিলের বাড়িতে গিয়ে তাকে ক্রসফায়ারে না দেয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। ১৬ মার্চ ৫ লাখ টাকা আদায় করেন আসামীরা।
আটকের স্বীকার করলেও ৫ লাখ টাকা নেয়ার দুই তিন মাসও জলিলকে আদালতে পাঠায়নি পুলিশ। এর মধ্যে গত ১০ জুলাই জলিলকে টেকনাফ থানা হেফাজতে টর্সার সেলে রয়েছে বলে জানতে পারে পরিবার। তারপরও বহুবার তদবির করেও আবদুল জলিলকে আদালতে তোলা হয়নি। গত ৭ জুলাই রাতে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের কম্বনিয়া বড়ছড়া এলাকায় এনে সিএনজি চালক আবদুল জলিলকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয় বলে বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন।
কারামুক্ত সাংবাদিক : টেকনাফের বহিস্কৃত ওসি প্রদীপের নির্দেশে টেকনাফ থানায় দায়ের করা ৬টি মামলার সবকটিতেই জামিন পেয়ে সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা গতকাল কারামুক্ত হয়েছেন। সর্বশেষ চাঁদাবাজির মামলায় ফরিদুল মোস্তফা গতকাল জামিন পেয়ে সন্ধ্যা ৬ টায় কক্সবাজার জেলা কারগার থেকে ১১ মাস কারাভোগ করে মুক্তি পেয়েছেন। এর আগে কক্সবাজার জেলা যুগ্ম দায়রা জজ ১ম আদালত তাকে ছয় মামলার সর্বশেষ মামলায় জামিন প্রদান করেন।
আদালত সুত্রে জানা গেছে, ফরিদুল মোস্তফা টেকনাফের বহিষ্কার ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে মাদক নির্মূলের আড়ালে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও চাঁদাবাজির অভিযোগে বিভিন্ন সময় সংবাদ পরিবেশ করেছিলেন। যার কারণে ওসি প্রদীপ ফরিদুল মোস্তফাকে ঢাকা থেকে ধরে এনে মাদক ও চাঁদাবাজির ৬ টি মিথ্যা মামলায় জড়িত করে ও শারীরিক নির্যাতন করে কারাগারে পাঠায়। ওই মামলায় ফরিদুল মোস্তফা গত ১১ মাস ধরে কারাগারে ছিলেন। ইতিমধ্যে ৫টি মামলা থেকে সে জামিন লাভ করে।
আইনজীবী হায়ার করেছেন প্রদীপ : মেজর (অব.) সিনহা হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপের পক্ষে আইনী সহায়তা দিতে চট্টগ্রামের ৫ আইনজীবী এখন কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। এড. আহসানুল হক হেনা ও ব্যারিস্টার সাঈদের নেতৃত্বে এই আইনজীবী দল বৃহস্পতিবার কক্সবাজার এসে পৌঁছান। জানা গেছে, তারা ওসি প্রদীপকে আইনী সহায়তা দিয়ে তার জামিন চাইবেন এবং নতুন করে আর রিমান্ড না দিতে আদালতে আবেদন জানাবেন।
আরেক ওসির ক্ষমা প্রার্থনাঃ সিনহা নিহতের ঘটনায় শিপ্রা দেবনাথের সামগ্রীর দুটি জব্দ তালিকা তৈরি এবং দুটির অমিল থাকার বিষয়ে নিজের ভুল স্বীকার আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন রামু থানার ওসি আবুল খায়ের। বৃহস্পতিবার কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ দেলোয়ার হোছাইনের আদালতে এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন রামুর ওসি আবুল খায়ের।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিনহা হত্যার পর নীলিমা রিসোর্ট থেকে তাদের ২৯টি সামগ্রী জব্দ করে রামু থানা পুলিশ। কিন্তু এই জব্দ তালিকা তৈরি করেন দুটি। কিন্তু দুটিতেই অমিল ছিলো। তাই তার ব্যাখ্যা জানতে আদালত রামু থানার ওসি আবুল খায়েরকে তলব করেন। এর অংশ হিসেবে আদালতে উপস্থিত হয়ে নিজের ভুল শিকার করেন তিনি। একই সাথে লিখিত শোকজের জবাবও জমা দিয়েছেন তিনি।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।