Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

৬২’র যুদ্ধের পর সবচেয়ে গুরুতর পরিস্থিতি লাদাখে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২০, ১২:০২ এএম

লাদাখ সীমান্তে চীনের সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনাকে ‘১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধের পর সবচেয়ে গুরুতর’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। একই সঙ্গে এই সীমান্তে উভয়পক্ষের সেনা মোতায়েনের ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম রেডিফকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর এসব কথা বলেছেন।
ভারতীয় এই মন্ত্রী বলেছেন, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর এটাই সবচেয়ে গুরুতর পরিস্থিতি। এমনকি ৪৫ বছর পর এই সীমান্তে সামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) উভয় দেশের সামরিকবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েনের সংখ্যাও নজিরবিহীন।
পূর্বাঞ্চলের লাদাখ সীমান্তে চীনের সঙ্গে উত্তেজনা তৈরি হওয়ার পর ইতোমধ্যে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ক‚টনীতিকরা বেশ কয়েকবার বৈঠক করেছেন।
গত মে মাস থেকে এই অঞ্চলে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে নজিরবিহীন উত্তেজনা তৈরি হয়। গত ১৫ জুন লাদাখ সীমান্তে চীনের সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অস্ত্রবিহীন সংঘর্ষে ভারতের অন্তত ২০ সৈন্য নিহত হয়।
জয়শঙ্কর বলেছেন, ভারত পরিষ্কারভাবে চীনকে জানিয়ে দিয়েছে যে, সীমান্ত এলাকায় শান্তি এবং স্থিতিশীলতা দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি। তিনি বলেন, আমরা যদি গত তিন দশকের দিকে ফিরে তাকাই, তাহলে এটি বেশ স্পষ্ট দেখতে পাবো। বহুমুখী ক‚টনৈতিক ও সামরিক আলোচনা সত্তে¡ও পূর্বাঞ্চলের লাদাখে সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ভারত ও চীনের সামরিক বাহিনী মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে।
ভারতের এই পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতীতে সীমান্ত পরিস্থিতি ক‚টনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে। গত দশকের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়— দেসপাং, চুমার এবং ডোকলাম সীমান্তে বেশ কয়েকবার উত্তেজনার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু সেগুলোর প্রত্যেকটি ছিল ভিন্ন ভিন্ন ধরনের। এবারের এই উত্তেজনাও ভিন্ন ধরনের।
‘দ্য ইন্ডিয়া ওয়ে: স্ট্র্যাটেজিস ফর অ্যান আনসার্টেইন ওয়ার্ল্ড’ নামে একটি লিখেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। আগামী সাত সেপ্টেম্বর বইটি প্রকাশিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই বই প্রকাশের আগে রেডিফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, সামরিক এবং কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে আমরা চীনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। আসলে এসব চ্যানেল একটির পর আরেকটি কাজ করে।
কয়েক দশকের আলোচনা সত্তে¡ও ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের অমীমাংসিত কিছু এলাকা নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি ভারত এবং চীন। লাদাখের তুষারাবৃত মরুভ‚মি থেকে ঘন-গহীন বনাঞ্চল ও পার্বত্য এলাকার এসব সীমান্ত এলাকায় অতীতেও দুই দেশের মাঝে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল।
১৯৬২ সালে চীন তিব্বত দখল করার পর ভারতের ‘অরুণাচল প্রদেশ’ ও ‘আকসাই চীন’ দখলে নেয়। চীন এই দুই এলাকা নিজেদের বলে দাবি করার পর ভারতের সঙ্গে যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। পরে অরুণাচল প্রদেশকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করলেও আকসাই চীন দখলে রাখে বেইজিং। যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা সত্তে¡ও চীনের কাছে শোচনীয় পরাজয় ঘটে ভারতের। সূত্র : এনডিটিভি।



 

Show all comments
  • আমান উল্লাহ ২৮ আগস্ট, ২০২০, ৬:০৮ এএম says : 0
    ভারত,এই সাম্প্রদায়িক দেশটিও কাশ্মীর,সিকিম জুনাগড়, হায়দ্রাবাদ প্রভৃতিকে জোর করে দখলে রেখেছে। এ সমস্ত রাজ্যগুলিকে মুক্ত করে না দিলে চীনও হয়তো জোর করে ভারতের কথিত এলাকা দখলে রাখবে। অবশ্য গজওয়াতুল হিন্দের মাধ্যমে ভারত অনেক খন্ডে ভাগ হয়ে যাবে।শুধু অপেক্ষার পালা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ৬২’র-যুদ্ধ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ