নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : সিরিজ শুরুর প্রথম দিনটার কথা মনে আছে? এঞ্জেলো ম্যাথিউস টস জিতে ব্যাট বেছে নিলেন, ৩৫ ওভার অস্ট্রেলিয়া বোলারদের বিপক্ষে প্রাণপণ লড়াইয়ের পর তার দল গুটিয়ে গেল মাত্র ১১৭ রানে। এর ঠিক ৮ ক্রিকেটীয় দিবস পর চ‚ড়ান্ত হয়ে গেল তিন ম্যাচ সিরিজের ওয়ার্ন-মুরালিধারণ ট্রফির বিজয়ী দল। এবং দলটা আস্ট্রেলিয়া নন, ম্যাথিউসের শ্রীলঙ্কা। পাল্লেকেলেতে ১০৬ রানের জয়ের পর এবারের জয় ২২৯ রানে।
পাল্লেকেলেতে বৃষ্টি আর আলোক স্বল্পতার কারণে ম্যাচ গড়িয়েছিল পঞ্চম দিনে। কিন্তু গলের আকাশ তেমন আচরণ করেনি। শুষ্ক পিচে অস্ট্রেলিয়া যখন পুরোপুরি ধরাশায়ী হল ম্যাচের তখনও অর্ধেকেরও বেশি সময় বাকি। মাত্র আড়াই দিনেই ৭ নম্বর দলের কাছে ধসে গেল টেস্ট র্যাংকিংয়ের ১ নম্বর দল। এ নিয়ে এশিয়ায় টানা ৮ ম্যাচ হারল ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পরাশক্তিরা। প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ম্যাচেও অজি ব্যাটসম্যানরা অসহায়ভাবে ধরাশায়ী হল লঙ্কান স্পিনারদের কাছে এবং গলে এই কাজটি প্রায় একাই সারলেন দিলরুয়ান পেরেরা।
প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে অনেকটা আড়ালেই ছিলেন রঙ্গনা হেরাথের হ্যাট্রিকের কারণে। পরের ইনিংসে ৭০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেয়িাকে একাই ১৮৩ রানে গুটিয়ে দেন পেরেরা। সব মিলে ক্যারিয়ারের প্রথম ১০ উইকেটের দেখা পেলেন এই অফ-স্পিনার। ব্যাট হাতেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৪ রানের এক ঝলমলে ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। দুইয়ে মিলে হয়ে গেলেন প্রথম লঙ্কান ক্রিকেটার হিসেবে এক ম্যাচে ১০ উইকেট ও ফিফটি করার কৃতিত্বের অধিকারী।
হেরাথ-পেরেরা প্রমাণ করলেন উপমহাদেশের স্পিন অস্ট্রেলিয়ার জন্য এক বড় ধন্দের নাম! গত ৮৭ বছরে এত কম সময় ব্যাট করেছে অস্ট্রেলিয়া একবারই। ১৯৯৫ সালে পোর্ট অব স্পেনে ৮৪.২ ওভার ব্যাট করতে পেরেছিল অজিরা। এবার ব্যাট করলেন তার চেয়ে মাত্র ২ বল বেশি। আশ্চর্যের বিষয় হল ১৯ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম দুই ইনিংসে একটিও ফিফটি নেই কোন অজি ব্যাটসম্যানের।
নিজেদের ২৫০তম ম্যাচটা কি দারুণভাবেই না রাঙিয়ে রাখলো শ্রীলঙ্কা। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় জয়ের জন্য যাদের অপেক্ষা করতে হয়েছিল দীর্ঘ ১৭ বছর। তাদেরই তৃতীয় জয় এলো মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে। তবে অজিদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আনন্দটা সেই ১৭ বছর পরেই। এ কারণে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে পিটার নেভিল রান-আউট হওয়ার সাথে সাথে লঙ্কান শিবিরে সে কি বাঁধ-ভাঙা উল্লাস। গোটা দল মাঠে দিলেন ‘ল্যাপ অব অনার’। গ্যালারি থেকে তাদের ক্রমাগত হাততালি দিয়ে অভিনন্দন জানালেন অরবিন্দ ডি সিলভা, সনাৎ সয়াসুরিয়া ও রমশ কালুভিথারানা। তিনজনই হয়ত ফিরে গিয়েছিলেন সেই ১৭ বছর আগের সেই দিনে, যেদিন প্রথম তারা সিরিজ জিতেছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।
হাতে ৭ উইকেট আর ২৫ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল অস্ট্রেলিয়া। উপায়ান্তর না পেয়ে আক্রমণাত্মক পথ বেছে নেন ওয়ার্নার-স্মিথ। মাত্র ৫ ওভারেই তুলে ফেলেছিলেন ৩৫ রান। এরপর ওয়ার্নারকে (৩১ বলে ৪১) ফিরিয়ে দিনের প্রথম ধাক্কাটা দেন পেরেরাই। খানিক বাদে স্মিথকেও ফেরান তিনি। এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে অজিরা। গুটিয়ে যায় মাত্র ৫০.১ ওভারে। লক্ষ্য তখনও ২২৯ রান দূরে।
শ্রীলঙ্কা : ২৮১ ও ২৩৭। অস্ট্রেলিয়া : ১০৬ ও ৫০.১ ওভারে ১৮৩ (ওয়ার্নার ৪১, স্মিথ ৩০, ভোজেস ২৮, মার্শ ১৮, নেভিল ২৪, স্টার্ক ২৬; হেরাথ ২/৭৪, দিলরুয়ান ৬/৭০, সান্দাকান ১/৩০)।
ফল : শ্রীলঙ্কা ২২৯ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে শ্রীলঙ্কা ২-০ তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ : দিলরুয়ান পেরেরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।