Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সমুদ্রে পানির উচ্চতা এক মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে

২৩ বছরে ২৮ ট্রিলিয়ন টন বরফ হারিয়েছে বিশ্ব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

১৯৯৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২৩ বছরে পৃথিবী পৃষ্ঠ হারিয়েছে ২৮ ট্রিলিয়ন টন বরফ। পৃথিবীর মেরু অঞ্চল, পর্বত আর হিমবাহগুলো স্যাটেলাইট জরিপের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বিস্ময়কর এই উপসংহার টেনেছেন। তারা দেখেছেন, ক্রমাগতভাবে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমনের ফলে কীভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে আর কীভাবে বরফের স্তর হারিয়ে যায়। লিডস ইউনিভার্সিটি, এডিনবার্গ ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন ভিত্তিক বিজ্ঞানীরা বরফ হারানোর এই মাত্রাকে বলেছেন ‘বিস্ময়কর’। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, হিমবাহ আর বরফের চাদর গলতে গলতে চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ সমুদ্রে পানির উচ্চতা এক মিটার পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। লিডস ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পোলার অবজারভেশন অ্যান্ড মডেলিং এর পরিচালক অধ্যাপক অ্যান্ডি শেফার্ড বলেন, ‘এই প্রেক্ষাপট মাথায় রেখে, সমুদ্রে পানির উচ্চতা প্রতি সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাওয়া মানে এক মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে, যারা অপেক্ষাকৃত নিচু অঞ্চলে বসবাস করে।’ বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই পরিমানে বরফ গলে যাওয়ার ফলে সৌর বিকিরণ প্রতিফলিত করে মহাকাশে ফিরিয়ে দেয়ার সক্ষমতাও কমে আসছে পৃথিবীর। এতে সাদা বরফ অদৃশ্য হচ্ছে এবং কালো সমুদ্র কিংবা মাটি বেরিয়ে আসছে যা কিনা আরো বেশি তাপ শোষণ করছে এবং পৃথিবীকে আরো বেশি উষ্ণ করে তুলছে। এছাড়া হিমবাহ ও বরফ চাদর গলে যে ঠান্ডা সুপেয় পানি সৃষ্টি হয় তা আর্কটিক ও এন্টার্কটিকের পানির জৈবিক স্বাস্থ্যে বড় ধরণের বিঘ্ন ঘটায়। এছাড়া পর্বতাঞ্চলে হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সুপেয় পানির উৎসও হুমকির মুখে পড়ে। অধ্যাপক শেফার্ড আরো বলেন, ‘অতীতে হয়তো কেউ এন্টার্কটিক কিংবা গ্রিনল্যান্ড নিয়ে সীমিত পরিসরে গবেষণা করে জানিয়েছেন সেখানে বরফ গলছে। কিন্তু এই প্রথম সমগ্র বিশ্ব থেকে যে পরিমান বরফ হারিয়ে যাচ্ছে তার ওপর চোখ দেয়া হয়েছে। আমরা যা খুঁজে পেয়েছি তা সত্যিই স্তব্ধ করে দিয়েছে।’ দ্য ইন্টার-গভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (আইপিসিসি) সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির যে পূর্বাভাস দিয়েছিল তার সঙ্গে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের গবেষণার ফলাফল অনেকটাই মিলে যাচ্ছে। ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা দক্ষিণ আমেরিকা, এশিয়া, কানাডা ও অন্যান্য অঞ্চলের হিমবাহ; আর্কটিক ও এন্টার্কটিকের সামুদ্রিক বরফ; এন্টার্কটিক ও গ্রিনল্যান্ডের ভূমি ঢেকে রাখা বরফের চাদর এবং এন্টার্কটিক ভূখন্ড থেকে সমুদ্রে প্রসারিত বরফের তাক নিয়ে স্যাটেলাইট জরিপ বিশ্লেষণ করেছেন ১৯৯৪ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। গবেষকরা বলছেন, গত তিন দশকে প্রায় প্রতিটি অঞ্চলই ব্যাপকভাবে বরফ হারিয়েছে এবং এটি ক্রমাগতভাবে চলছে। গবেষক দলের সদস্য লিডস ইউনিভার্সিটির টম স্লেটার বলেন, ‘আমরা যে বরফ হারিয়েছি তার প্রেক্ষাপটে বলতে গেলে, এই ২৮ ট্রিলিয়ন টন বরফ দিয়ে ১০০ মিটার পুরু চাদর তৈরি করে তা দিয়ে গোটা যুক্তরাজ্যকেই ঢেকে দেয়া যেত। এটা অভূতপূর্ব।’ দ্য গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রিলিয়ন-টন-বরফ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ