বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চিকিৎসক ও সেবিকা সহ চিকিৎসা কর্মী সংকটের মধ্যেই করোনা সংক্রমণে দক্ষিণাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা বিপর্যয়ের কবলে। ফলে এ অঞ্চলের কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় সরকারী উদ্যোগ ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় পৌনে ৫শ চিকিৎসক, সেবিকা ও চিকিৎসা কর্মী করেনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ বাদে এ এ বিভাগেই ইতোমধ্যে চিকিৎসকই প্রায় ৮০ জন সহ সেবিকার সংখ্যা প্রায় ১২০।
জনবল বৃদ্ধি না করেই জেলা-উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হলেও পুরনো জনবল কাঠামোরই অর্ধেক পদ শূন্য থাকায় গোটা দক্ষিণাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা দীর্ঘদিন ধরেই সংকটের মধ্যে দিয়ে চলছিল। এরই মধ্যে সাম্প্রতিক করোনা সংক্রমণে বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিপুল সংখ্যক চিকিৎসক, সেবিকা ও চিকিৎসা কর্মী ‘কোভিড-১৯’এ আক্রান্ত হওয়ায় পরিস্থিতি আরো নাজুক হয়ে পড়েছে। অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা হাসপাতাল সহ জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা মারাত্মক বিপর্যয়ের কবলে।
তবে এরপরেও কর্তৃপক্ষ ‘পরিস্থিতি সামাল দেয়ার আপ্রান চেষ্টা’র কথা জানিয়েছেন। করোনা আক্রান্ত অনেক চিকিৎসক ও সেবিকা সহ চিকিৎসা কর্মী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠলেও অনকেরই কাজে যোগ দিতে কিছুদিন সময় লাগছে। পাশাপাশি প্রতিদিনই ডাক্তার -সেবিকা সহ অন্য চিকিৎসা কর্মীরা আক্রান্তও হচ্ছেন। ফলে অনেকের মধ্যেই দায়িত্ব পালনে এক ধরনের ভীতি সহ অনিহাও কাজ করছে বলে জানা গেছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের নির্ভরযোগ্য সূত্রের মতে, বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা সদর ছাড়াও ৩৬টি উপজেলা সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হাসপাতালগুলোতে মোট ১ হাজার ৮৭টি চিকিৎসকের পদের মধ্যে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৪শ পদই শূণ্য। তবে পুরনো এ জনবল কাঠামোর প্রায় ৪০%-এর বেশী শূণ্য থাকার মধ্যেই পটুয়াখালী, ভোলা, পিরোজপুর ও ঝালকাঠীর জেলা সদরের হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের ৩১ শয্যার বেশীরভাগ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যার হাসপাতালে উন্নীত করা হলেও জনবল মঞ্জুরী মেলেনি এখনো। পটুয়াখাালী ও ভোলা হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১শ থেকে আড়াইশ করা হলেও চিকিৎসক সহ অন্যসব জনবল মঞ্জুরী আগের অবস্থানেই রয়েছে। ঝালকাঠী, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালগুলোও ৫০ শয্যা থেকে ১শ শয্যায় উন্নীত করা হলেও চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টি হয়নি।
ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীর ব্যপক সংকট অব্যাহত থাকার মধ্যেই করোনা সংক্রমনে নতুন দূর্যোগ নেমে এসেছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত হিসেব অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালের অন্তত ৮০ জনের মত চিকিৎসক করেনা সংক্রমনের শিকার। প্রতদিনই এসংখ্যা বাড়ছে। এমনকি বরিশালে দুজন সিনিয়র চিকিৎসক করেনা সংক্রমনে মৃত্যুবরনও করেছেন। এছাড়া প্রায় ১২০ জন সেবিকাও প্রায় পৌনে ৩শ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যকর্মী করোনা সংক্রমনের শিকার হয়েছেন ইতোমধ্যে। ফলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা চরম সংকটকাল অতিক্রম করছে। যদিও আক্রান্তদের অনেকই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু প্রতিদিনই নতুন আক্রান্তও হচ্ছেন। এমনকি করোনাকালের শুরুতেই চিকিৎসকগন প্রাইভেট চেম্বারে রোগী দেখা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে, মানসম্মত পিপিই সরবারহ সহ শুরু থেকে চিকিৎসা কর্মীদের নিরাত্তার বিষয়টি যথাযথভাবে অনুসরন না করায় প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তবে ইতোমধ্যে অধেূকেরও বেশী চিকিৎসক সুস্থ্য হয়েছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে। এরপরেও আক্রান্তের তালিকায় প্রতিদিন নুতন করে চিকিৎসক, সেবিকা ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নাম যূক্ত হওয়ায় পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না।
বর্তমান পরিস্থিতি উত্তরনে অবিলম্বে দক্ষিণাঞ্চলের সব সরকারী হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের মানসম্মত পিপিই সরবারহ সহ তার ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দায়িত্ব বন্টনে নিয়মÑশৃংখলা ফিরিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ মহল। একইসাথে অবিলম্বে দক্ষিণাঞ্চলের সব সরকারী হাসপাতালগুলোতে বর্তমান মঞ্জুরীকৃত চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মী পদে জনবল নিয়োগ সহ মানউন্নীত হাসপাতালগুলোর জন্য জনবল কাঠামো অনুমোদন ও পদায়নের দাবী জানান হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।