Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাটিসহ উপকূলজুড়ে নদ-নদী বিপদসীমায় : বিস্তৃত নদীভাঙন

সুস্পষ্ট লঘুচাপে সাগর উত্তাল বন্দরে ৩ নম্বর সঙ্কেত : দেশজুড়ে ভাদ্রের বর্ষণ

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০২০, ১২:০১ এএম

বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয়, উপক‚ল সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোরালো অবস্থায় রয়েছে। সক্রিয় মৌসুমী বায়ু ও গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার প্রভাবে দেশের বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপক‚ল-চর-দ্বীপাঞ্চলে প্রবল জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। উপক‚লভাগ জোয়ারের পানির দ্বিমুখী চাপে ফুলে-ফুঁসে থাকায় দেশের উত্তরাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল ও ভাটি হয়ে উপক‚লভাগের দিকে বন্যার পানি হ্রাস ব্যাহত হচ্ছে। এরফলে দেশের উত্তর, মধ্যাঞ্চল, ভাটি এলাকা থেকে শুরু করে উপক‚লীয় অঞ্চলব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে ভয়াবহ নদীভাঙন। দেশের দক্ষিণাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ মধ্যাঞ্চলের নদ-নদীগুলো বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হচ্ছে। সেই সঙ্গে তলিয়ে যাচ্ছে একের পর এক গ্রাম-জনপদ, হাট-বাজার, ফল-ফসলি জমি, ক্ষেত-খামার। করোনাকালে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও বন্যার কবলিত ভাটি এলাকাসহ উপক‚লীয় অনেক জনপদে থমকে গেছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।

ভাদ্র মাসের প্রথম সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে। মৌসুমী বায়ু সক্রিয় থাকায় গতকাল শনিবারও দেশের সর্বত্র হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতিবৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় চট্টগ্রামে ১০২ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয় ৪৬ মি.মি.। আরও অন্তত দু’দিন দেশের অধিকাংশ স্থানে হালকা থেকে মাঝারি বর্ষণ, কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।

অব্যাহত বর্ষণের ফলে তাপমাত্রা আরও কমেছে। গতকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রাজশাহীতে ৩৩.৩ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ২৮.৬ এবং সর্বনি¤œ ২৬.৩ ডিগ্রি সে.। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ২৮.৫ এবং সর্বনি¤œ ২৫ ডিগ্রি সে.।

আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আরিফ হোসেন জানান, ভারতের মধ্যপ্রদেশের মধ্যভাগ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি গতকাল সরে গিয়ে মধ্যপ্রদেশের উত্তর-পশ্চিমভাগ ও এর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী বায়ু সক্রিয় রয়েছে এবং গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালা সৃষ্টি হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সঙ্কেত দেখানো হচ্ছে।

সক্রিয় মৌসুমী বায়ু এবং ভারী বর্ষণের কারণে উপক‚লীয় জেলা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার থেকে খুলনা-সাতক্ষীরা পর্যন্ত এবং সেখানকার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নি¤œাঞ্চল স্বাভাবিক সামুদ্রিক জোয়ারের চেয়ে এক থেকে ২ ফুট উচ্চতার বায়ুতাড়িত প্রবল জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে। সমুদ্র উত্তাল থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপক‚লের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বর্ষারোহী মৌসুমী বায়ুর একটি বলয় ভারতের রাজস্থান, উত্তর-পশ্চিম মধ্যপ্রদেশ ও এর সংলগ্ন সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত আছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয়, উত্তর বঙ্গোপসাগরে জোরদার রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপকূল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ