Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রাকের উপরের গ্রেনেড বিস্ফোরিত হলে কেউ বাঁচতো না

২১ আগস্টের স্মৃতিচারণে বাহাউদ্দিন নাছিম

ইয়াছিন রানা | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০২০, ১১:১২ পিএম

সমাবেশ শেষ হবে, এমন একটি মুহূর্তে সমাবেশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। মুহুর্তেই রক্তাক্ত হয়ে যায় সমাবেশ স্থল। সেদিন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানব ঢাল তৈরি করে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনাকে ঘেরাও করে রেখেছিল। সে কারণে সেদিন তিনি প্রাণে বেঁচে যান। ট্রাকের উপরে যে সকল গ্রেনেড পড়েছিল সেসকল গ্রেনেড যদি বিস্ফোরিত হতো তাহলে কেউ বেঁচে থাকতে পারত না। আর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আজ কোন দিকে যেত সেটি স্পষ্ট ভাবে এখন বোঝা যায়।

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ভয়াবহতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ইনকিলাবকে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।
তিনি বলেন, ২১ আগস্ট ছিল সন্ত্রাসবিরোধী আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ। পূর্বনির্ধারিত ওই সমাবেশ শেষে আমাদের মিছিল করার কর্মসূচি ছিল। ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। একটি ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চে নির্ধারিত সময়েই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশ শেষ হবে, এমন একটি মুহূর্তে সমাবেশের ওপর গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।
২১ আগস্টে গ্রেনেডের আঘাতে শরীর ক্ষতবিক্ষত হবার কথা বর্নানা করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, নেত্রীর বক্তব্য শেষের দিকে। আমি মঞ্চ থেকে নেমে ট্রাকের পাশেই দাড়ালাম। এমন অবস্থায় গ্রেনেড নিক্ষেপ শুরু হয়। গ্রেনেড নিক্ষেপ যখন থামল তখন ধীরে ধীরে গুলি হচ্ছিল, টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ হচ্ছিল। গ্রেনেডের আঘাতে ঘটনাস্থলে আমার শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায় আমার। আমি জ্ঞান হারিয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ি। সেই গ্রেনেডের বিকট শব্দে আমি আমার জ্ঞান ফিরে পাই। চারদিকে রক্ত আর রক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছে। রাস্তায় লুটিয়ে পড়া অবস্থায় মহিলা আওয়ামী লীগের কিছু নেত্রীরা আমাকে উদ্ধার করে এবং পাশের বিল্ডিং এ নিয়ে যায়। এমন অবস্থায় কিভাবে বেঁচে গিয়েছি এটা আমার জানা নেই। অবশ্য আমি বেঁচে থাকার জন্য হয়তো সৃষ্টিকর্তার বিশেষ সহানুভূতি আমার পক্ষে ছিলো।
নাছিম বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বিএনপি-জামায়াতের অপশক্তির মূল লক্ষ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করে পাকিস্তানি ভাবধারায় সা¤প্রদায়িক শক্তির উত্থান এর ভেতর দিয়ে মৌলবাদী জঙ্গিবাদী শক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশকে পাকিস্তানি রূপান্তরিত করা এবং ধর্ম ভিত্তিক একটি রাষ্ট্র তৈরি করা। ঠিক একইভাবে ২০০৪ সালে একুশে আগস্ট আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের বিনির্মাণের যে শক্তি, সেই শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধ্বংস করা হত্যা করা।
গ্রেনেড হামলায় চারদিকে আহত নেতাকর্মী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সেই মুহুর্তে ও আওয়ামী লীগ ও সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলেই প্রতিবাদ সভা ও মিছিল মিটিং করছিলেন জানিয়ে তিনি আরও বলেন, একটি গ্রেডেনে প্রচুর পরিমাণে স্পিøন্টার থাকে, যখন আঘাত করে তখন বোঝা যায় না। কিন্ত যখন রক্ত ঝরতে থাকে, তখন তার যন্ত্রণা বোঝা যায়, তার বিশ ক্রিয়া কী ভয়াভহ।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেনেড

২২ আগস্ট, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ