বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে বন্দি তিন কিশোর হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলা, গাফিলতির তথ্য প্রমাণ পেয়েছে সমাজ কল্যাণ অধিদপ্তরের দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রতিষ্ঠান) যুগ্ম সচিব সৈয়দ নুরুল বাসির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটলেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেননি কর্মকর্তারা।
বন্দি কিশোর হত্যার ঘটনায় কর্মকর্তাদের সরাসরি জড়িত ছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কমিটির প্রধান যুগ্ম সচিব সৈয়দ নুরুল বাসির বলেন, ‘কারো কারো সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। সেটা ক্রিমিনাল ফ্যাক্ট। ওটা নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। তারা প্রাথমিক তদন্তে সত্যতাও পেয়েছে। ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। পুলিশ চূড়ান্ত তদন্তে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে চার্জশিট দেবে। আমরা মূলত প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করেছি। কেন এমন ঘটনা ঘটলো সেটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করেছি। তদন্ত সূত্র জানায়, তদন্ত কমিটি সুপারিশ দিয়েছি, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।
তদন্ত কমিটির প্রধান যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মুহাম্মদ আবুল লাইছ বলেন, তিন কিশোর নিহতের ঘটনায় শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তা রিমান্ডে আছেন। তদন্ত কমিটি তাদের বক্তব্য নিতে পারেনি। রিমান্ড শেষ হলে বক্তব্য নেওয়া হবে। এজন্য সাতদিন সময় চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে, কেন্দ্রের সহকারি পরিচালকসহ তিন কর্মকর্তাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যশোর চাঁচড়া পরিদর্শক মোঃ রোকিবুজ্জামান জানান, রিমান্ডে কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আপাতত তাদের আর রিমান্ডে নেওয়া হবে না। তিনি আরো জানিয়েছেন, ‘কেন্দ্রে বন্দি চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার আনিস নামে আরেক বন্দির শ্যোন অ্যারেস্টের আবেদন আদালত মঞ্জুর করেছেন। এর আগে আরও ৭ বন্দিকে শ্যোন এরেস্ট দেখানো হয়েছে। বর্তমানে এই মামনার মোট আসামি ১৩ জন।
ঘটনায় জড়িত ৮ কিশোরের রিমান্ড আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো তিন কর্মকর্তা হলেন- সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহ, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম। এর আগে রিমান্ড শেষে কেন্দ্রের আরো দুই কর্মকর্তা সাইকো সোস্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান ও কারিগরি প্রশিক্ষক (ওয়েল্ডিং) ওমর ফারুককে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পৈশাচিক নির্যাতনে তিন কিশোর হত্যা ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় ১৪ আগস্ট রাতে নিহত কিশোর পারভেজ হাসান রাব্বির বাবা রোকা মিয়া যশোর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কর্তৃপক্ষকে আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় কেন্দ্রের সহকারী পরিচালকসহ পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার করে।
ঘটনার সার্বিক বিষয় জানার জন্য যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন ঘটনাস্থল শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার পর কি পরিস্থিতিতে আছে ওই কেন্দ্র, সেখানকার বন্দিরা কেমন আছে, নতুন কর্মকর্তারা কিভাবে কাজ করছেন এই সব বিষয়ে পুলিশ সুপার খোঁজ খবর নিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।