গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
রাজধানীর ভাটারা থানার মইনুল ইসলাম মাদরাসা (কোকাকোলা মাদরাসার) ছাত্র শিক্ষকদের উপর সাদ’পন্থিদের হামলার নিন্দা, সুষ্ঠু বিচার ও বৈধ কর্তৃপক্ষের কাছে মাদরাসার দায়িত্ব হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছেন মোহাম্মদপুরস্থ কওমী মাদরাসা সমুহের ঐক্যবদ্ধ ফোরাম ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া মোহাম্মদপুর ।
আজ জামিয়া মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালামের সভাপতিত্বে ইত্তেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া মোহাম্মদপুরে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, বেফাকভুক্ত এ মাদরাসাটি ১৯৯৭ সালে জসিম উদ্দীন ঢালী কর্তৃক দানকৃত ভাটারার সোলাইমাদস্থ টেক-ঢালিবাড়ির ভূমিতে স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করে। মসজিদ-মাদরাসার জন্য দানকৃত ভূমির দলিলে সুস্পষ্ট শর্ত রাখা হয় যে, মাদরাসাটি তাবলীগ জামাআতের কাকরাইল ও দিল্লীর ওলামায়েকেরামের পরামর্শে পরিচালিত হবে।
নেতবৃন্দ আরো বলেন, গত ১ আগস্ট রাত্রে মুঈনুল ইসলাম মাদরাসার প্রাক্তন প্রিন্সিপাল আতাউর রহমানের শশুর আব্দুর রাজ্জাক, হিসাব রক্ষক আব্দুল আহাদ ও ইঞ্জিনিয়ার রফিকের সহায়তায় মঈনুল ইসলাম মাদরাসা ও মসজিদে বিভিন্ন এলাকা থেকে সাদপন্থীদের প্রায় শতাধিক সদস্য জড়ো হয়। পরিস্থিতির প্রতিকূলতা আঁচ করে রাত ১১টায় মাদরাসার শিক্ষাসচিব মুফতী সেলিম ভাটারা থানার ওসিকে আশঙ্কার কথা ফোনে জানালে তিনি কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে বলেন। পরের দিন সকালে দেখা করার অজুহাত দেখিয়ে দারোয়ানকে দিয়ে কলাপসিবল গেটের তালা খুলে মাদরাসা মসজিদের দ্বিতীয় তলায় অবস্থানরত শিক্ষক-ছাত্রদের উপর লোহার রড ও ধারালো ছুরি দিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। অতর্কিত আক্রমণে ঘুমন্ত শিক্ষক-ছাত্রগণ বিচলিত হয়ে পড়েন। এ সময় ৬/৭ জনের মাথা ফেটে যায় এবং মোট ২৭ জন আহত হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাদেরকে মারতে মারতে মাদরাসা থেকে বের করে দেয় হামলাকারীরা। এলাকাবাসী খবর পেয়ে ছুটে এলে সাদপন্থী হামলাকারীরা মাদরাসা গেটে তালা দিয়ে ভেতরে অবস্থান নেয়। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ এসে সাদপন্থীদেরকে গ্রেফতার না করে শুধু তাদেরকে নিয়ে ওসি ভাটারা কয়েক ঘন্টা মাদরাসার অভ্যন্তরে অবস্থান করেন। হামলাকারীরা মাদরাসার প্রয়োজনীয় দলিল, কাগজপত্র ও মূল্যবান জিনিসপত্র বিনষ্ট করে ও নিয়ে যায়। হামলাকারীদেরকে নির্বিঘেœ চলে যেতে দিয়ে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পাহাড়া বসানো হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, থানায় মামলা নেয়ার চেষ্টা করা হলেও ওসি ভাটারা মামলা গ্রহণ করেননি। ভাটারা থানায় বার বার অবগত করা সত্তেও আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ পদক্ষেপ না নিয়ে বরং পক্ষাবলম্বন করায় পুলিশ প্রশাসন তথা সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। অবিলম্বে মাদরাসার মসজিদকে আজান ও নামাজের জন্য খুলে দেওয়া এবং সাদপন্থী হামলাকারীদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনতে হবে। নেতৃবৃন্দ মাদরাসা মুঈনুল ইসলামের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে জড়িত প্রকৃত বৈধ কর্তৃপক্ষের কাছে মাদরাসার দায়িত্ব হস্তান্তর এবং ভাটারা থানার ওসিকে প্রত্যাহার করার আহবান জানান। অন্যথায় পরবর্তী পরিস্থিতির দায়বার সরকারকেই বহন করতে হবে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা ফারুক আহমাদ, জামিয়া ইসলামিয়া বায়তুল ফালাহ এর প্রিন্সিপাল মাওলানা মুহাম্মদ তালহা, ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, আশরাফুল মাদারিস এর প্রিন্সিপাল মাওলানা ইসমাঈল, জামিয়া ওয়াহিদিয়া এর প্রিন্সিপাল মাওলানা যোবায়ের, জামিয়া মুহাম্মাদিয়া আরাবিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা মোহাম্মাদ ফয়সাল, বাইতুল আমান আদাবর এর প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহমুদুর রহমান, বায়তুল জান্নাত মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা ওমর ফারুক, আদাবর আহসানুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আমির হোসেন, ফাতেমাতুজ জোহরা মাদরাসার মুহামিম মাওলানা সাইফুল ইসলাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।