পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গ্রাহকের ভুতুড়ে (অতিরিক্ত) বিদ্যুৎ বিলের সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) চিঠি দিলেও এ ব্যাপারে এখনো কোম্পানিগুলো কোন পদক্ষেপ নেয়নি। কমিটি গঠন ও চিঠি চালাচালির মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন নিয়েও চলছে নয়ছয় খেলা। অতিরিক্ত ভুতুড়ে বিলের মধ্যে যে সব গ্রাহক পরিশোধ করেছেন তাদের সমস্যার এখনো কোন সুরাহা হচ্ছে না। এতে বিইআরসির ওপর গ্রাহকদের ক্ষোভ বাড়ছে। বিইআরসি গণশুনানির নামে দফায় দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়াতে পারে কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধে কোনো ভ‚মিকা রাখতে পারে না বলে গ্রাহকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ।
গত ১৭ জুলাই বিইআরসির সচিব মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠি বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি), ডেসকো, ওজোপাডিকো এবং নেসকোকে দিয়েছে। করোনা সঙ্কটের কারণে ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে মিটার রিডাররা গ্রাহকদের বাড়িতে গিয়ে মিটার পরীক্ষা করতে পারেননি। এই অবস্থায় বিদ্যুৎ বিভাগ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পূর্ববর্তী কয়েক মাসের বিল গড় করে ওই দুই মাসের বিল নির্ধারণ করা হবে। ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করতে কমিটির পর কমিটি, মিটিংয়ের পর মিটিং, প্রতিবেদনের পর প্রতিবেদন দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। তবে কয়েকজনকে সাময়িক বরখাস্ত আর নিচের দিকের কয়েকজন মিটার রিডারের চুক্তি বাতিল ছাড়া এখনও বড় কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব ধামাচাপা দেয়ার প্রক্রিয়া ছাড়া আর কিছু নয়।
ডিপিডিসি তাদের ৩৬টি কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে বেশি বিল করার নির্দেশ দিয়েছিল। ওই নির্দেশে এলাকাভেদে ১০ থেকে ৬১ শতাংশ বেশি বিল করতে বলা হয়। কেবল করোনাকালেই নয়, বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থাগুলো অর্থবছরের শেষ দিকে আয় বেশি দেখানোর জন্য বরাবর বাড়তি বিল করে থাকে। এবার সেই বাড়তি বিলের পরিমাণ হয়েছে কয়েক গুণ। ফলে গ্রাহকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ভুতুড়ে বিল নিয়ে অনেক গ্রাহক অভিযোগ করেছেন। আবার অনেকে প্রতিকার পাওয়া যাবে না ভেবে অভিযোগ করেননি। অন্যান্য বছরের ভুতুড়ে বিল যদি চুরি হয়ে থাকে, এবারেরটি হয়েছে ডাকাতি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ভুতুড়ে বিল হওয়ার কথা স্বীকার করে ইনকিলাবকে বলেন, যেসব কোম্পানি অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল নিয়েছে তাদের সমন্বয় করে দিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারপরও যদি তারা বিল সমন্বয় না করে থাকে তবে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মঈন উদ্দিন (অব.) ইনকিলাবকে বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের সকল সমিতি কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। যেসব জেলায় গ্রাহকের বিল সমন্বয় করেনি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিদ্যুৎ কোম্পানির বিরুদ্ধে চলতি বছরের গত এপ্রিল মাস থেকেই ভুতুড়ে বিলের অভিযোগ আসে। এপ্রিলে এ নিয়ে সারা দেশে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে টনক নড়ে বিদ্যুৎ বিভাগের। কোম্পানিগুলোকে পৃথকভাবে তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে আবার বিদ্যুৎ বিভাগ টাস্কফোর্স গঠন করে। কোম্পানি এবং বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে বলা হয়, তারা দায়ীদের চিহ্নিত করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু এরপর আবার বিদ্যুৎ বিভাগ যেমন কমিটি গঠন করেছে, তেমনি বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট কোম্পানিও কমিটি গঠন করেছে। এসব কমিটি কাজও করছে। আর প্রতিবেদনের পর প্রতিবেদন দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের কোনো সমাধান হয়নি। এখনো গ্রাহকরা বেশি বিল পরিশোধ করে আসছেন।
এ বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ শামসুল আলম বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলছিলাম নিচের কর্মকর্তাদের দায়ী করা হলেও ওপরের যারা নির্দেশ দিয়েছে তাদের অভিযুক্ত করা হয়নি। ডিপিডিসি শুরু থেকেই বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এখনও ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের ভোগান্তির এই বিচার হওয়া উচিত। নইলে এই খাতের দুর্নীতি আরও বাড়বে। ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান ইনকিলাবকে বলেন, গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ করছে। তারা অভিযোগের ভিত্তিতে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রহমত উল্লাহ মো. দস্তগীর এনডিসিকে প্রধান করে তিন সদস্যের আরও একটি কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্য পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন ইনকিলাবকে বলেন, আমরা ছয়টি বিতরণ কোম্পানির সঙ্গেই কথা বলছি। যেহেতু ডিপিডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগ বেশি এসেছে তাই তাদের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তদন্তের জন্য তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আগামীকাল পর্যন্ত এই জিজ্ঞাসাবাদ চলবে। কমিটিগুলোর প্রতিবেদন দেখে সব যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।