Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনা ভ্যাকসিনে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবডি

গণউৎপাদন শুরু রাশিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ৯:৫৭ পিএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৬ আগস্ট, ২০২০

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে নিজেদের অনুমোদিত করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের গণউৎপাদন শুরু করেছে রাশিয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স গতকাল এ খবর জানিয়েছে। উৎপাদন শুরুর দুই সপ্তাহের মাথায় এ মাসের শেষ নাগাদ গণহারে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ শুরু করা যাবে বলেও জানিয়েছে রুশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে তৃতীয় ধাপে ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে এগিয়ে রয়েছে চীনের ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট সিনোফার্ম। স¤প্রতি সউদী আরবে শুরু হয়েছে তাদের তৈরি ভ্যাকসিনের তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল। প্রথম দুই ধাপে এটি কেমন কাজ করেছে তার ফলাফল প্রকাশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
করোনাভাইরাসের নিরাপদ ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যে গত ১১ আগস্ট বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিন হিসেবে ‘স্পুটনিক ভি’ অনুমোদনের ঘোষণা দেয় রাশিয়া। তবে রাশিয়ার ঘোষণার পরই ভ্যাকসিনটির নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। রাশিয়ার অনেকেও ভ্যাকসিনটির নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেছেন।
স্নায়ুযুদ্ধ যুগে মহাকাশ জয়ে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কৃত্রিম উপগ্রহ স্পুটনিক এর নামে রাশিয়া তাদের কোভিড-১৯ টিকার নাম রেখেছে। প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, এ টিকা ইতোমধ্যে তার মেয়ের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই মনে করেন, দ্রæত ভ্যাকসিন অনুমোদন দিতে গিয়ে নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছে রাশিয়া। দেশটিতে পরিচালিত এক স্বাধীন জরিপেও দেখা গেছে, রাশিয়ার অর্ধেকের বেশি বিশ্বাস করতে না পারায় ভ্যাকসিনটি গ্রহণে আগ্রহী নন।
বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ ও সন্দেহ থাকলেও ২০টির মতো দেশ এরইমধ্যে রাশিয়ার টিকা নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছে মস্কো। ভিয়েতনামও টিকাটির ৫ থেকে ১৫ কোটি ডোজ পেতে চুক্তি করেছে। এর একাংশ রাশিয়া ‘অনুদান’ হিসেবে দেবে, বাকিগুলোর দাম দেবে ভিয়েতনাম।
সিনোফার্ম জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ৯৬ জনকে অল্প ডোজে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় ধাপে দেয়া হয়েছে ২২৪ জনকে। এ পর্যায়ে ডোজের পরিমাণ সামান্য বাড়ানো হয়। এতদিন পর্যবেক্ষণে ছিলেন স্বেচ্ছাসেবকরা। প্রত্যেকের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে, ভ্যাকসিন প্রয়োগের ফলে তাদের শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
সিনোফার্মের গবেষকরা জানিয়েছেন, এ ভ্যাকসিন শরীরে প্রবেশ করে রক্তের বি-লিম্ফোসাইট কোষ তথা বি-সেলকে সক্রিয় করে তুলছে। ফলে রক্তে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে, পাশাপাশি টি-সেলও সক্রিয় হয়েছে। টি-সেল হলো শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার মূল অস্ত্র। শরীরে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা প্যাথোজেন ঢুকলে সেটি মোকাবিলায় টি-সেল শরীরের স্বাভাবিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। ফলে শরীরে ঢোকা ভাইরাল অ্যান্টিজেনকে আটকাতে একটা সুরক্ষা বলয় তৈরি হয়। যেকোনও ভ্যাকসিন গবেষণার মূল লক্ষ্যই থাকে বি-সেল ও টি-সেলকে সক্রিয় করে এ সুরক্ষা বলয় তৈরি করা। সিনোফার্মের দাবি, তাদের তৈরি ভ্যাকসিন এ কাজ ঠিকভাবেই করছে।
স¤প্রতি ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন’-এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। চীনের ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটেউটের দাবি, এ ভ্যাকসিন মানুষের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ। তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে সউদী আরবে কয়েক হাজার স্বেচ্ছাসেবককে চীনের এ ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। সূত্র : ইন্টারফ্যাক্স ও দ্য ওয়াল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ