নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ম্যাচের শুরু থেকেই চলল গোল উৎসব। তারকা রবের্ত লেভান্দোভস্কি, থমাস মুলার তো বটেই জালের দেখা পেলেন অখ্যাতরাও। যেন প্রতিপক্ষকে নিয়ে ছেলেখেলায় মেতে উঠল বায়ার্ন মিউনিখ। সেটি যে বার্সেলোনার মতো দল, তা-ও যেন বেমালুম ভুলিয়ে দিলো বাভারিয়ানরা। দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলা বায়ার্ন মিউনিখের সামনে স্রেফ উড়ে গেল বার্সা। ইচ্ছে হলেই যেন গোল করল হান্স ফ্লিকের দল। কিকে সেতিয়েনের দলকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালে গেল জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।
গতপরশু রাতে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনের স্তাদিও দা লুজের কোয়ার্টার-ফাইনালে ৮-২ গোলে জিতেছে বায়ার্ন। জোড়া গোল করেন মুলার ও বার্সা থেকেই ধারে বায়র্নে আসা ফিলিপ কৌতিনহো। একবার করে জালের দেখা পেলেন লেভান্দোভস্কি, সের্গে জিনাব্রি, ইভান পেরিসিচ ও জশুয়া কিমিচরা। ডেভিড আলবার আত্মঘাতী গোলের পর বার্সার হয়ে ব্যবধান কমান লুইস সুয়ারেজ। বায়ার্নের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার দিনে খালি হাতে মৌসুম শেষ নিশ্চিত হয় বার্সেলোনার। ১৩ বছর পর আবারও একটি মৌসুম কোনো শিরোপা না জিতেই শেষ করে দলটি।
প্রতিপক্ষের গতি, কৌশল ও সৃষ্টিশীলতার কোনো জবাবই দিতে পারেনি বার্সা। রক্ষণ ছিল ভঙ্গুর, মাঝমাঠ ছন্নছাড়া, বিবর্ণ আক্রমণভাগ-এমন চেহারার দলটিকে নিয়ে যেন ছেলেখেলা করল বায়ার্ন। ম্যাচের প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যেই জয় এক প্রকার নিশ্চিত করে ফেলে দলটি। এ সময়ে বাভারিয়ানরা গোল পায় চারটি। বাকি চারটি আসে সময়ের স্রােতে ভেসে বার্সা গোলরক্ষ টেন স্টেগানের খামখেয়ালিতে ভর করে। দলে সময়ের সেরা তারকা লিওনেল মেসি ছিলেন সেটিও মনে পড়েনি একটি বারের জন্যও। সতীর্থদের কাছ থেকে কোনোরকম সহযোগীতাই পাননি বায়ার্নের কৌশলে বন্দী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড।
আগের রাউন্ডে দুই লেগ মিলিয়ে চেলসির জালে ৭ গোল করেছিল বায়ার্ন। ১৯৯২ সালে শুরু হওয়া চ্যাম্পিয়ন্স লিগের (এর আগে ইউরোপিয়ান কাপ নামে পরিচিত ছিল ইউরোপের সেরা ক্লাব প্রতিযোগিতাটি) ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে নক-আউট পর্বে আট গোল করার কীর্তি গড়ল বায়ার্ন। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম দল হিসেবে বিপরীত অভিজ্ঞতা হলো বার্সেলোনার। দুই অর্ধে চারটি করে গোল হজম করে বিব্রতকর হারে শ‚ন্য হাতে মৌসুম শেষ করল বার্সা। আগের ম্যাচে নাপোলির বিপক্ষে দারুণ ফুটবল খেলা বার্সেলোনার জন্য যেন ছিল দুঃস্বপ্নের রাত। ফুটবল ইতিহাসে দলটিকে এমন করুণ চেহারায় খুব বেশি দেখা যায়নি।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম নয়টি ম্যাচের সবকটিতে জেতার রেকর্ড এতদিন ছিল কেবল বার্সেলোনার নামের পাশে। স্প্যানিশ ক্লাবটিকে ছারখার করে সেই কীর্তিতেই ভাগ বসাল বায়ার্ন। ২০০২-০৩ মৌসুমে প্রথম গ্রুপ পর্বের ছয় ম্যাচে শেষ হাসি হাসার পর দ্বিতীয় গ্রুপ পর্বের প্রথম তিনটিতেও জেতে বার্সা। শুরুতে ‘এইচ’ গ্রুপে লোকোমোটিভ মস্কো, ক্লাব ব্রুগ ও গ্যালাতাসারাইকে দুই লেগেই হারিয়েছিল দলটি। এরপর ‘এ’ গ্রুপে বেয়ার লেভারকুসেন, নিউক্যাসল ইউনাইটেড ও ইন্টার মিলানের বিপক্ষেও বিজয়ীর বেশে মাঠ ছেড়েছিল তারা। কাতালানদের জয়যাত্রা থেমেছিল দশম ম্যাচে গিয়ে। সান সিরোতে ইন্টারের সঙ্গে ফিরতি ম্যাচে গোলশ‚ন্য ড্র করেছিল তারা। ১৭ বছর পর বার্সাকে হারিয়েই প্রতিযোগিতার প্রথম নয় ম্যাচে টানা জেতার রেকর্ড স্পর্শ করেছে বায়ার্ন। হতশ্রী পারফরম্যান্সে হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যদের কাছে কোনো পাত্তাই পাননি মেসি-পিকেরা।
এবারের আসরের গ্রুপ পর্বে টটেনহ্যাম হটস্পার, অলিম্পিয়াকোস ও রেড স্টার বেলগ্রেডকে উড়িয়ে দিয়ে নক-আউটে নাম লিখিয়েছিল বায়ার্ন। ছয় ম্যাচে ২৪টি গোল করেছিল তারা। এরপর শেষ ষোলোতে লেভান্দোভস্কি-মুলাররা দুই পর্ব মিলিয়ে ৭-১ ব্যবধানে ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেন চেলসিকে। তবে সেরাটা যেন বার্সেলোনার জন্য জমিয়ে রেখেছিল বায়ার্ন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে স্প্যানিশ ক্লাবটির বিপক্ষে তাদের অতীত পরিসংখ্যানও (পাঁচ জয়ের বিপরীতে দুটি হার) যোগাচ্ছিল আত্মবিশ্বাস। মাঠের লড়াইয়ে দেখা গেল সাম্প্রতিক সময়ে ধুঁকতে থাকা বার্সার বিবর্ণ রূপও। সবমিলিয়ে লজ্জাজনক এক হারই মেসিদের উপহার দিলো বায়ার্ন।
ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে কাকে পাচ্ছে বায়ার্ন সেটিও ইতিমধ্যে জেনে গেছেন পাঠকেরা। গতরাতে ম্যানচেস্টার সিটি অথবা অলিম্পিক লিওঁ ম্যাচের জয়ীই যে জার্মান চ্যাম্পিয়নদের প্রতিপক্ষ।
ফলাফল
বার্সেলোনা ২-৮ বায়ার্ন মিউনিখ
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।