Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লক্ষ্মীপুরে মেঘনা শুধু ভিটেমাটি ভাঙ্গছেনা, ভাঙ্গছে মানুষের হৃদয়

লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদাদাতা | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২০, ১২:৩৮ পিএম

লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীর অভ্যাহত ভাঙ্গনে ক্রমশ বদলে যাচ্ছে কমলনগর ও রামগতি উপজেলা । মেঘনা শুধু তাদের ভিটেমাটি ভাঙ্গছেনা, ভাঙ্গছে মানুষের হৃদয়। মেঘনা নদীর প্রতিনিয়ত ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে যাচ্ছে ঘর-বাড়ী গাছপালা, ফসলের মাঠ। শত শত একর জমি থাকলেও এখন তারা ভূমি হীন হয়ে পথে বসেছে। পূর্বপুরুষের বিপুল সম্পত্তির মালিকানা এখন তাদের কাছে শুধুই ইতিহাস। মেঘনার ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে পড়ে শত বছরের পুরোনো কয়েকটি বাজার ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। বিলীন হয়ে গেছে শত বছরের পুরোনো মসজিদ, সরকারি-বেসরকারি বহু স্থাপনা।

স্থানীয় লোকজন জানান, ভাঙ্গনের প্রভাব পড়েছে তাদের জীবনের সব ক্ষেত্রে। জীবিকার ধরন বদলে গেছে। নদী-নির্ভর জীবিকার কারণে অনেকেই নদীর কিনারে থাকতে চান। কেউ পারেন। আবার কেউ পারেন না। ফলে জীবিকার প্রয়োজনে পরিবারের সব সদস্যদের নিয়ে তাদের ছুটতে হয় শহরে। গত কয়েক বছরে এসব এলাকা থেকে স্থানান্তর হওয়া মানুষের সংখ্যাও অনেক বেড়েছে।
পরিবার স্থানান্তরিত হওয়ায় বহু ছেলে-মেয়ে লেখাপড়া ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে। অনেকে আবার একই ক্লাসে ২-৩ বছর থেকে লেখাপড়ায় অগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

সূত্র মতে, মেঘনার ভাঙ্গন রোধে ইতোমধ্যে সরকারি বরাদ্দে কাজ হয়েছে রামগতি বাজার এলাকায় ও আলেকজেন্ডার এলাকায়। এই প্রকল্পের মধ্যে কমলনগর উপজেলায় এক কিলোমিটার কাজ করলেও তা নদীর তীব্র ভাঙ্গনের কবলে পড়ে বেশ কিছু অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এ কারণে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে সরকার দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে লক্ষ্মীপুরের মানচিত্র থেকে কমলনগর উপজেলা হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা স্থানীয়দের।

রামগতি ও কমলনগর বাচাঁও মঞ্চের আহবায়ক এডভোকেট আবদুস সাত্তার পলোয়ান জানান, যদি এভাবে ভাঙ্গন অব্যাহত থাকে, তাহলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এ দুই উপজেলার ২ লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়বে। ভিটা মাটি রক্ষায় প্রতি নিয়ত মানববন্ধন বিক্ষোভসহ বিভিন কর্মসুচি পালন করে যাচ্ছি। কিন্তু কোন কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। দ্রুত দ্বিতীয় পর্যায় প্রকল্পের কাজ শুরু করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে জোর দাবী করেন তিনি।

কমলনগর নদী শাসন সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব ও কমলনগর প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ মজিদ জানান, গত ১৫ দিনে ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়েছে তিন শতাধিক মানুষ। এ ভয়াবহ ভাঙ্গন এর আগে দেখেনি তারা। ভাঙ্গন প্রতিরোধ ও বাঁধ নির্মানের দাবীতে আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফারুক আহমেদ ভয়াবহ ভাঙ্গনের কথা স্বীকার করে বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে কিছু এলাকায় বাঁধের কাজ চলছে। সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেঘনা

২৪ জানুয়ারি, ২০২২
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ