মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইসরাইল ও ইউএই’র চুক্তির ফলে একটি ভূ-রাজনৈতিক ভ‚মিকম্পের কবলে পড়েছে মধ্যপ্রাচ্য। এই চুক্তির পর নেতানিয়াহু নিক্সন যেমন চীনের সাথে করেছিলেন, তেমনি নেতানিয়াহু তার স্বভাবগত আদর্শিক মিত্রদের পরিত্যাগ করেছেন, যারা তাকে সমর্থন করেছিলেন এ ভেবে যে, তিনি ফিলিস্তিন এবং ইসরাইলকে এক রাষ্ট্র করবেন। ইসরাইলি লেখক আরি সাভিত বলেছেন, ‘এটি নেতানিয়াহুকে ইসরাইলের কেন্দ্রীয় শক্তির প্রতি আরও নির্ভরশীল হতে বাধ্য করবে। এ চুক্তি আপাতত ইসরাইলি গণতন্ত্র বাঁচাতে সহায়তা করতে পারে, তবে, ডামপন্থীদের পুরো সেনাবাহিনীকে বঞ্চিত করার আগে তার ইসরাইলের সুপ্রিম কোর্ট ধ্বংস করার প্রয়োজন ছিল’। ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে থাকা মাহমুদ আব্বাসকেও এ চুক্তিতে বঞ্চিত করা হয়েছে, যা তাকে আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য করতে পারে। এ চুক্তি তার কাছ থেকে সব থেকে বড় টেক্কা ছিনিয়ে নিল, যার মাধ্যমে আশা ছিল যে, উপসাগরীয় আরবরা ইসরাইলীয়দের সাথে কেবল তখনই সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে, যখন ইসরাইলীরা ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের দাবিকে পূরণ করবে। এটি আব্বাসের জন্য একটি নিখরচায় পরামর্শ প্রেরণ করেছে, ‘এখনই টেবিলে ফিরে এসে বলুন যে, আপনি ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ফিলিস্তিনি আকাক্সক্ষার জন্য আকাশ নয়, জমিন হিসাবে দেখছেন। এর জন্য আপনি ট্রাম্প, ইউরোপ এবং আরবদের প্রচুর সমর্থন পাবেন। আপনার এখনও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং ইসরাইলের মধ্যে যাই ঘটুক না কেন, আপনাকে এখনও ইসরাইলের সাথে মোকাবিলা করতে হবে। কারণ সংযুক্ত পশ্চিম তীরে আপনার জনগণ সহসাই অদৃশ্য হয়ে যাবে না। এ চুক্তি অবশ্যই বাহরাইন, ওমান, কাতার, কুয়েত এবং সউদী আরবের মতো অন্যান্য উপসাগরীয় শেখদের ইসরাইলের সাথে গোপন ও অপ্রকাশিত ব্যবসা এবং গোয়েন্দা লেনদেনে আমিরাতের নেতৃত্ব অনুসরণ করতে উৎসাহিত করবে। কারণ তারা অবশ্যই চাইবে না যে, ইসরাইলের সাথে সাইবার টেকনোলজি, কৃষি ও স্বাস্থ্য প্রযুক্তিতে সম্ভাব্য আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত তাদের থেকে বেশি শক্তিশালী ও উন্নত হয়ে উঠুক এবং এগিয়ে থাকুক।
এই ভূ-রাজনৈতিক ভ‚মিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইরান এবং তার সমস্ত অনুসারীরা। যাদের মধ্যে রয়েছে হিজবুল্লাহ, ইরাকি মিলিশিয়া, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ, হামাস, ইসলামিক জিহাদ, ইয়েমেন ও তুরস্কের হুথিরা। এর যথেষ্ট কারণও রয়েছে। এখন অবধি ইউএই ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে একটি নাজুক ভারসাম্য বজায় রেখেছে, ইরানকে প্ররোচিত না করে গোপনে ইসরাইলের সাথে সন্ধি করেছে। তবে, এ চুক্তির মাধ্যমে ইউএই ইরানকে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, ‘আমাদের এখন ইসরাইল রয়েছে, সুতরাং আমাদের সাথে গÐগোল করবেন না’। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ইসরাইল সাইবার যুদ্ধের মাধ্যমে ইরানের যে বিরাট ক্ষতি করেছে, তা ইউএইকে এ চুক্তি করতে আরও প্ররোচিত করেছে। এর সাথে আরও একটি বার্তা রয়েছে, যা আরও গভীর এবং আরও মনস্তাত্তি¡ক। এর মাধ্যমে ইউএই ইরানীদের এবং তার অনুসারীদের জানান দিয়েছে, ‘বর্তমানে এ অঞ্চলে প্রকৃতপক্ষে দুটি জোট রয়েছে। এক. যারা অতীতকে ভবিষ্যতে কবর দিতে দিতে চায় এবং দুই. যারা ভবিষ্যতকে অতীতে কবর দিতে দিতে চায়। ইউএই প্রথমটির কান্ডারী হয়েছে এবং ইরান দ্বিতীয়টির নেতা হতে চলেছে। ইরানের এ পরিণতির কারণ সুলাইমানি ধ্যানধারণা, যা শিয়াশাসিত ইরানের মূলমন্ত্র হয়ে উঠেছে। ইরান আরব সুন্নীদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শন করার জন্য ইরাক, লেবানন, ইয়েমেন এবং সিরিয়ার শিয়াদের নিয়োগ করেছিল এবং এর ফলস্বরূপ, ইরানকে অনুসরণ করে এ চারটি রাষ্ট্র ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। ইরানের ধর্মবিরোধী নেতৃত্ব তার নিজেরসহ মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্রগুলির ব্যর্থতার বৃহত্তম সহায়ক হয়ে উঠেছে এবং এ কারণেই লেবানিজরা ইরানকে দোষারোপ করেছে এবং হিজবুল্লাহকে তাদের দেশের অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ী করেছে, যা গত সপ্তাহে বৈরুত বন্দরে বিধ্বংসী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। অঞ্চল আর কখনও আগের মতো হবে না। হয়তো শিগগিরই একদিন পুরো অঞ্চলজুড়েই পরিবর্তনের এক চঞ্চল বাতাস ছড়িয়ে পড়বে।
সূত্র : দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।