Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১৪৪২ হিজরী কিভাবে কাটাবো তা’নিয়ে ফিকির করতে হবে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২০, ৩:২৩ পিএম

১৪৪১ হিজরী সাল আমরা কিভাবে কাটিয়েছি তা’ নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আসন্ন ১৪৪২ হিজরী সাল আমরা কিভাবে কাটাবো তা’ নিয়েও ফিকির করতে হবে। করোনা মহামারীর পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া ঈমানী দায়িত্ব। ঐতিহাসিক কারবালার লোমহর্ষক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবন পরিচালিত করতে হবে। তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমেই দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণ নিহীত রয়েছে। আজ বিভিন্ন মসজিদে জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম ও খতীবরা এসব কথা বলেন। যথাযথ সামাজিক দূরত্ব বজায় এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে মসজিদগুলোতে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। মসজিদে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় রাস্তার ওপরও মুসল্লিরা জুমার নামাজ আদায় করেন। নগরীর মহাখালিস্থ মসজিদে গাউছুল আজমেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। 

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতী মুহিববুল্লাহ হিল বাকি নদভী খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, যদি জিলহজ মাস ২৯ তারিখ হয় তা’ হলে ১৪৪১ হিজরীর আজকেই শেষ জুমা। বিগত ১৪৪১ হিজরীর পুরো বছরটি কিভাবে আমরা কাটিয়েছি সে সর্ম্পকে চিন্তা করতে হবে। ১৪৪২ হিজরী সাল আমরা কিভাবে কাটাবো তা’নিয়েও ফিকির করতে হবে। তিনি বলেন, পবিত্র আশুরা সমাগত। ঐতিহাসিক কারবালার ময়দানে রসূল (সা.) দৌহিত্র হযরত হুসাইন (রা.)সহ তার পরিবারের ৭১ জন সদস্য দুনিয়ায় হক প্রতিষ্ঠ এবং অন্যায়ের প্রতিবাদের জন্য শহীদ হয়েছেন। তার সফরসঙ্গীরাও শহীন হয়েছেন। কারবালার লোমহর্ষক ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের জীবন চালাতে হবে। তিনি বলেন, যারা খুন খারাবি করে তাদের বিচার আল্লাহপাক করবেনই। যারা খুন খারাবিকে সমর্থন করবে তাদের বিচারও হবে। পেশ ইমাম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা দেশ জাতির জন্য জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। তিনি বলেন, কারবালার ঘটনা আর বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের শহীদ হবার ঘটনাকে স্মরণ করে দেশ জাতি ও মানবতার কল্যাণে কাজ করে যেতে হবে।

নগরীর চকবাজার ইসলামবাদ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দীর আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানের বলেন, ভ্যাকসিন নিলেই করোনা মহামারি থেকে মুক্তি নিশ্চিত এমন ধারণা পোষণ করা ঈমান পরিপন্থী। উপাদান ও উপকরণ অবলম্বন ইসলামে দোষণীয় নয় তবে উপাদান নির্ভরতা ঈমানের সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। মুমিন নর- নারীকে সর্বদাই এই বিশ্বাসের ওপর থাকতে হবে যে,মহান আল্লাহর নির্দেশ ছাড়া কোন কিছুই হয়না এবং হতে পারেনা। সর্বক্ষেত্রে কর্তৃত্ব ও রাজত্ব একমাত্র আল্লাহরই। সুতরাং সর্বশক্তিমান আল্লাহর রহমত ও সাহায্য ছাড়া বিপদমুক্ত হওয়া বা থাকা কোন ক্রমেই সম্ভব নয়। তিনি বলে, নমরুদ কর্তৃক প্রজ্জলিত ভয়াবহ অগ্নিকুন্ডে নিক্ষিপ্ত হয়েও হযরত ইবরাহিম আলাইহিস সালামের সম্পূর্ণরূপে অক্ষত ও নিরাপদ থাকার দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে উপকরণ উপাদানের নিজস্ব কোন কর্তৃত্ব নেই। তাই যে কোন বিপর্যয় ও বিপদ থেকে মুক্তি পেতে মুমিনকে সর্বাগ্রে মহান আল্লাহরই শরণাপন্ন হতে হবে। আল্লাহপাক সবাইকে দ্বীনমুখী হবার তৌফিক দান করুন। আমিন!

ঢাকার অদূরে সাভার সিটি সেন্টার জামে মসজিদের খতীব আবু ইয়াহয়া জাকারিয়া আল হুসাইনী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, দুনিয়ার নিরাপত্তা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য বিশুদ্ধ ঈমান প্রয়োজন। সূরা আনআম থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, যারা ঈমান এনেছে এবং ঈমানের সাথে শিরকের মিশ্রণ ঘটেনি, তাদের জন্য রয়েছে নিরাপত্তা এবং তারাই হেদায়াতপ্রাপ্ত। এ আয়াতের ওপর আলোচনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ তায়ালা মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দিতে পৃথিবীতে লাখের উপরে নবী-রসূল পাঠিয়েছেন এবং সকল নবীর দাওয়াতের মূল বিষয় ছিলো তাওহীদ। তথা আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো ইলাহ নেই। সমাজের বিভিন্ন রন্ধ্রে রন্ধ্রে জমে থাকা শিরকের জঞ্জাল মানুষকে চির জাহান্নামী বানিয়ে দেয়। সে জন্য প্রতিটি ব্যক্তির সর্ব প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে, তাওহীদ ও শিরকের জ্ঞান অর্জন করা। কুরআনুল কারীম শুরু (নাযিল) হয়েছে 'পড়' দিয়ে । পড় মানে জানো। প্রশ্ন হলো, কী জানবো? জবাব এসেছে সূরা মুহাম্মদ এ অর্থাৎ তাওহীদকে জানো। এ সমাজের বহু মানুষ ওজু ভাঙার কারণ জানে,কিন্তু অনেকেই ঈমান ভাঙার কারণ জানেন না । অথচ ঈমান সবার আগে। এটি সম্পর্কে জানা সবার জন্য আবশ্যক। ঈমানী তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমেই দুনিয়া আখেরাতে কল্যাণ নিহীত রয়েছে।

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী আরমানিটোলা শাহী জামে মসজিদে জুমা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী পৃথিবীর সমস্ত মুসলমান এক দেহের মত। মুসলমানদের কোন অংশ কোথাও আঘাতপ্রাপ্ত হলে পৃথিবীর সমস্ত মুসলমান আঘাতপ্রাপ্ত হওয়া ঈমানের দাবি।
মুসলমানদের ভূমিতে অবৈধ দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের সাথে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সমঝোতা চুক্তি মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত করেছে। অবৈধ দখলদার ইসরাইলকে এই চুক্তির মাধ্যমে স্বীকৃতি প্রদান করে সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশ্বের তাবৎ মুসলমানদের পিঠে ছুরিকাঘাত করেছে। তিনি আরো বলেন, মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পৃথিবীতে আগমন ঘটেছিল তাওহীদ এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠার জন্য। সমাজের সর্বস্তরে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা আল্লাহর রাসূলের অন্যতম মিশন ছিল। তিনি বলেন, মেজর (অব.) সিনহার হত্যাকাÐের মাধ্যমে কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তারন্যায় বিচার বহির্ভূত হত্যাকাÐের ধারাবাহিক ঘটনাবলি দেশের মানুষের অন্তরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

কামরাঙ্গীরচর হাফেজ্জী হুজুর মাদরাসা মসজিদে মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী জুমার বয়ানে বলেন, রাসূলের (সা.) অনুসরণই আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালের সফলতার চাবিকাঠি। রাসূল (সা.) এর সুন্নতের অনুসরণ আল্লাহকে পাওয়ার উপায়। জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে সকল মুসলমানদেরকে সুন্নত তরিকায় জীবন যাপন অত্যন্ত জরুরি।
রাজধানীর মুগদা মানিকনগর ওয়াসা রোডস্থ মদিনা মনোয়ারা জামে মসজিদের খতীব হাফেজ মাওলানা মুফতী জোবায়ের আহমেদ খুৎবার বয়ানে বলেন, করোনা মহামারির পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকার অসহায় ক্ষুধার্ত মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়া প্রত্যেক মানুষের ঈমানী দায়িত্ব। তিনি বলেন, দেশ ও জাতির জন্য যারা জীবন দিয়েছেন তাদের রূহের মাগফিরাত করা আমাদের কর্তব্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পেশ ইমাম


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ