পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাভারের চামড়া শিল্প নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য পরিশোধনাগার (সিইটিপি) পুরোপুরি কার্যকর না করেই ১২৫টি ট্যানারি উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করেছে। ফলে ট্যানারির বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে সাভারের ধলেশ্বরী নদী। এ ছাড়া অপরিকল্পিতভাবে খোলা জায়গায় ডাম্পিং স্টেশন করে ট্যানারির কঠিন বর্জ্য ফেলে দূষিত করা হচ্ছে শিল্প নগরীর আশপাশের এলাকা। সব মিলিয়ে আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণ, চামড়া প্রক্রিয়াজাত ও চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনে এখনো স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারেনি সাভারের চামড়া শিল্প নগরী। এ কারণে চাহিদা থাকার পরও আর্ন্তজাতিক অনেক খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য কেনা বন্ধ করে দিয়েছে।
সাভার চামড়া শিল্প নগরীতে প্লটের সংখ্যা ২০৫, ট্যানারির সংখ্যা ১৫৫। পরিবেশগত ছাড়পত্র নিয়ে বেশির ভাগ ট্যানারি উৎপাদনে রয়েছে। তবে এসব ট্যানারির একটিও আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে উৎপাদন করতে সক্ষম নয়। এজন্য এখানকার একটি ট্যানারিও লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ পায়নি। কারখানায় আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে উৎপাদন করতে সক্ষম হলেই শুধু এই সনদ পাওয়া যায়। আন্তর্জাতিক বাজারে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করতে হলে এই সনদ প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশ ট্যানারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহিন আহমেদ বলেন, আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে ব্যবসা করতে হলে এলডব্লিউজি সনদ প্রয়োজন হয়। এই সনদ এখনো পাওয়া যায়নি, কারণ শিল্পনগরী এখনো সম্পূূর্ণ প্রস্তুত হয়নি। ট্যানারির মালিকদেরও কিছু প্রস্তুতি নেয়ার আছে। তিনি বলেন, এলডব্লিউজি সনদ না থাকায় গুণগত মানের চামড়ার চাহিদা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ থেকে প্রক্রিয়াজাত চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য কেনা বন্ধ করে দিয়েছে বা কমিয়ে দিয়েছে। সরকার ও ট্যানারির মালিকরা এ সনদ পেতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আশা করি, অচিরেই সব প্রস্তুতি শেষ হবে।
আন্তর্জাতিক মানদন্ড মেনে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে ও উৎপাদনে বাধ্য করতে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হওয়ায় ২০০১ সালে রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি সরিয়ে নিতে নির্দেশ দেন আদালত, কিন্তু ট্যানারি মালিকদের অসহযোগিতায় এসব ট্যানারি সরিয়ে নিতে সরকারের এক যুগেরও বেশি সময় পার হয়।
সাভারে ট্যানারি সরিয়ে নিলেও এখন পর্যন্ত চামড়া শিল্প নগরীতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার স্থায়ী সমাধান হয়নি। দীর্ঘদিনেও পরিবেশের জন্য কার্যকর আধুনিক বর্জ্য শোধন ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু করা হয়নি। ফলে পথ চলতেই দেখা মেলে দূষিত পানি আর চামড়ার উচ্ছিষ্ট অংশের। চামড়ার বর্জ্য সংরক্ষণে শিল্প নগরীর তিনটি ডাম্পিং ইয়ার্ডের দুটির নির্মাণকাজ কবে শেষ হবে সেটাও এখনো অনিশ্চিত।
শিল্প মন্ত্রণালয় অবশ্য বলছে পরিবেশ রক্ষা করে ট্যানারিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণ চলছে। ঈদের পরদিন চামড়া শিল্প নগরীর সার্বিক পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান শিল্প সচিব কে এম আলী আজম ও ‘বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন’ বিসিকের চেয়ারম্যান মো. মোশতাক হাসান।
শিল্প সচিব চামড়া রফতানির বিষয়ে সাংবাদিকদের জানান, এবার আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী যারা চমড়া প্রক্রিয়াজাত করবে তারাই রফতানির সুযোগ পাবেন। আমাদের কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে রফতানির অনুমোদন দেয়া হবে। এছাড়া এই প্রকল্পের মেয়াদ এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। ফলে এই সময়ের মধ্যে সাভারে ট্যানারিতে আরও যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধানের আশ্বাসও দেন তিনি।
চামড়া শিল্প নগরীতে সলিড বা কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য এখনও স্থায়ী সমাধান হয়নি। খোলা জায়গায় ডাম্পিং স্টেশন করে সেখানে চামড়ার কঠিন বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে শিল্প নগরীর আশপাশের এলাকার পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। বিসিক চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান বলেন, আগামী ৩ মাসের মধ্যে আধুনিক ও স্থায়ীভাবে চামড়ার কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা হবে।
চামড়া শিল্প নগরীর প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জিতেন্দ্র নাথ পাল বলেন, অস্থায়ী বা ইমার্জেন্সি যে ডাম্পিং করা হচ্ছে, সেটা সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে শেষ হবে। অস্থায়ী এ ডাম্পিংগুলোর পর স্থায়ী ডাম্পিং করা হবে। সিইটিপিতে পুরোপুরি কাজ চলছে। ফিনিশিং কিছু বাদ আছে। এ জন্য ফাংশন করতে সমস্যা নেই। সিইটিপির মূল কাজ বর্জ্য পরিশোধন করা, সেটা করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।