মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাকি আর মাত্র তিন মাস। জিততে মরিয়া চেষ্টা চালালেও করোনা মহামারিকে কেন্দ্র করে ঘরে-বাইরে বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্পের নিজের হাতে গড়া করোনা টাস্ক ফোর্সও তার বিপক্ষে কথা বলছে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ১ লাখ ৬৪ হাজার ছাড়িয়েছে। লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন হাজার হাজার বাসিন্দা। এ জন্য সরকারি গাফিলতিকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন টাস্ক ফোর্সের বর্তমান ও প্রাক্তন প্রধান, ডেবোরা ব্রিক্স এবং অ্যান্টনি ফাউচি। এ অবস্থায় কিছু দিন আগে ট্রাম্প দুঃখ করে বলেছিলেন, ‘আমাকে কেউ পছন্দ করেন না।’ পরিস্থিতি সামলাতে সম্প্রতি বিভিন্ন ‘রিলিফ প্যাকেজ’ ঘোষণা করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেটা নিয়েও সমালোচনায় মেতে উঠেছেন বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা। হোয়াইট হাউসে ডেমোক্র্যাটের সঙ্গে বিবাদ যখন তুঙ্গে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংস্কার নিয়ে ট্রাম্পের প্রস্তাবে বেঁকে বসেছে ফ্রান্স ও জার্মানি। তাদের বক্তব্য, যে দেশ সংগঠনেই থাকবে না বলছে, তার ‘দাদাগিরি’ বরদাস্ত করা হবে কেন!
করোনা-পরিস্থিতিতে দেশের বাসিন্দাদের সাহায্য করতে চার রকমের আর্থিক সুবিধা দেয়ার প্রস্তাব এনেছেন ট্রাম্প। যেমন, শ্রমিকদের আয়কর কমানো, বছরের শেষ পর্যন্ত বেকারভাতা দেয়া, পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা সংক্রান্ত ঋণশোধ স্থগিত রাখা এবং স্বাস্থ্য বিমার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলোকে বিমা করার আগে থেকে থাকা অসুখেও আর্থিক সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেয়া। বিরোধীদের বক্তব্য, ট্রাম্পের আনা প্রস্তাবগুলি চোখধাঁধাঁনো লাগলেও, তা আসলে ভাঁওতাবাজি। তাদের প্রশ্ন— এই প্রস্তাবগুলো আনলেও এর অর্থ কোথা থেকে জোগাবেন, তা স্পষ্ট করছেন না প্রেসিডেন্ট। এ ধরনের পদক্ষেপ করতে গেলে সরকারকে আইনি জটিলতায় পড়তে হতে পারে, তার ব্যাখ্যা দিচ্ছেন না। এবং সর্বোপরি স্বাস্থ্য বিমার ভার লঘু করার কথা বললেও ট্রাম্প নিজে তার পূর্বসূরির করে যাওয়া ‘অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট’ (ওবামা-কেয়ার নামে বিখ্যাত) খারিজ করতে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন। শনিবার দেড় ঘণ্টা ধরে এ নিয়ে হোয়াইট হাউসের সঙ্গে বাদানুবাদ চলে ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি এবং সংখ্যালঘু নেতা চাক শুমারের। পরে ট্রাম্প বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা এ ভাবে বাধা দিলে আমি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে প্রস্তাব পাশ করব।’
এ দিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিয়েও বেকায়দায় ট্রাম্প। সংস্থাটির সংস্কার নিয়ে গত চার মাস ধরে আলোচনা করছে জি-৭ দেশগুলি। তার আগেই, করোনা পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হওয়া ও চীনের পক্ষ নেয়া— এই দুই অভিযোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। কিন্তু তার পরেও, সংস্থাটির সংস্কার নিয়ে আলোচনায় বসতে চায় জি-৭ সদস্য আমেরিকা। সেই মর্মে তারা একটি রোডম্যাপও বানিয়েছে বলে খবর।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দাবি, আমেরিকার দাদাগিরিতে ক্ষিপ্ত ফ্রান্স ও জার্মানি। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংস্কার বৈঠকে যোগ দেয়ার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। ইটালির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তারা প্যারিস ও বার্লিনের সঙ্গে সহমত। ব্রিটেন বৈঠক নিয়ে মন্তব্য না-করলেও জানিয়েছে, তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশে আছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘ফ্রান্স ও জার্মানির এ ভাবে বেরিয়ে যাওয়া দুঃখজনক।’ সূত্র: এবিপি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।