পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আলোচিত ঠিকাদার ও যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা জি কে শামীমের বিরুদ্ধ অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সিআইডি।
গত বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) শামীম ও তার সাত অস্ত্রধারী দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
অভিযোগপত্র দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডির অর্গানাইজড ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার আবু সাঈদ বলেন, অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আয় করা অর্থ শামীম বিদেশে পাচার করার চেষ্টা করছিলেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্যরা হলেন জি কে শামীমের (৫৫) দেহরক্ষী মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৯), মো. মুরাদ হোসেন (৫২), মো. জাহিদুল ইসলাম (৪১), মো. শহিদুল ইসলাম (৩৬), মো. কামাল হোসেন (৪৯), মো. সামসাদ হোসেন ও মো. আমিনুল ইসলাম (৩৪)।
এ ছাড়া ঢাকায় তার দুটি বাড়িসহ প্রায় ৫২ কাঠা জমির মালিক তিনি। এসবের দাম ৪১ কোটি টাকা। জি কে শামীম তার অস্ত্রধারী সাত দেহরক্ষীকে দিয়ে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে টেন্ডারবাজি, বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে অপরাধলব্ধ এসব সম্পদ–অর্থ অর্জন করেছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশের ১৮০টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৬ হাজার ৫৮ কোটি ৪৯ লাখ ৫১ হাজার ৮৪২ টাকা লেনদেন করেন। ২০১৮ ও ২০১৯ সালে এর মধ্যে বেশির ভাগ লেনদেন হয়।
জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাবের পর্যালোচনা করে অভিযোগপত্রে মন্তব্য করা হয়, জি কে শামীমের ব্যাংক লেনদেনে সর্বমোট ক্রেডিট হয় ৩ হাজার ৪২ কোটি ৮৩ লাখ ৪৮ হাজার ৯১ টাকা। আর ডেবিট হয়েছে ৩ হাজার ১৫ কোটি ৬৬ লাখ ৩ হাজার ৭৫১ টাকা।
মামলার তদন্তকারী সিআইডির কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, জি কে শামীমের স্থায়ী আমানত ৩৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৫১ হাজার ৪০৬ টাকার ওপর আদালতের আদেশে স্থিতি রয়েছে। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার মার্কিন ডলার ও ৭৫২ সিঙ্গাপুরি মুদ্রা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ঢাকায় দুটি বাড়িসহ তার ৫১ দশমিক ৮৩ কাঠা স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। এর দলিলমূল্য ৪০ কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার ২০০ টাকা।
সিআইডি অভিযোগপত্রে বলেছে, ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এস এম গোলাম কিবরিয়ার প্রতিষ্ঠান জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানি একক ও যৌথ নামে ১৫৪টি প্রকল্পের কাজ পায়। জি কে শামীম গ্রেফতারের আগে ৬১টি প্রকল্প শেষ করে ৭৪৩ কোটি ৭৭ লাখ ৩৬ হাজার ৮৪৩ টাকা বুঝে নেন। ৪ হাজার ৮১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৩ হাজার ২৬২ টাকার বাকি ৯৩ প্রকল্পের কাজ এখনো শেষ হয়নি।
সিআইডির অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে কর্তব্যরত থেকে আসামিরা প্রকাশ্যে অস্ত্র ব্যবহার করে মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে, পরস্পর যোগসাজশে সংঘবদ্ধ অপরাধ করার মাধ্যমে টেন্ডারবাজিতে সহায়তা এবং বিভিন্ন দরপত্রপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ নিয়ে রয়্যালটি ফি গ্রহণ করতেন। জি কে শামীম তার দেহরক্ষীদের দিয়ে জুয়ার ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল ও গরুর হাটে চাঁদাবাজি করতেন। তারা অপরাধলব্ধ আয় অবৈধভাবে বিদেশে পাচারের জন্য মজুত করে বিদেশে মানি লন্ডারিংয়ের চেষ্টা করেছেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ (সংশোধনী/ ২০১৫)-এর ৪(২) ধারায় শাস্তিযোগ অপরাধ।
ক্যাসিনোকাণ্ডে অভিযানের এক পর্যায়ে র্যাব গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জি কে শামীমের গুলশানের নিকেতনের বাসা ও তার কার্যালয়ে অভিযান চালায়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা সাত দেহরক্ষীকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে শামীমের অফিস থেকে মাদক, ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর চেকসহ প্রায় দুই কোটি টাকা জব্দ করা হয়। এ সময় শামীমের কাছে একটি অস্ত্রও পাওয়া যায়। পরে গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে র্যাব। এর আগে র্যাব অস্ত্র ও মাদকের মামলায় অভিযোগপত্র দেয়।
ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত জি কে শামীমের নাম ফের আলোচনায় আসে হাইকোর্টে পরিচয় গোপন করে জামিন নেওয়ার পর। অবশ্য পরে আদালত সেই জামিনের আদেশ বাতিল করেন। জি কে শামীম এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কারা হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।