রাশিয়া সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরর মধ্যেই
করোনার
‘সম্ভাবনাময়’ দুটি টিকার উৎপাদন শুরুর পরিকল্পনা করেছে। দেশটির পক্ষ
থেকে বুধবার এ কথা বলেছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সভাপতিত্বে এক
বৈঠকে উপ-প্রধানমন্ত্রী তাতিয়ানা গোলিকোভা মস্কোয় রিসার্চ
ইন্সস্টিটিউটে একটি এবং সাইবেরিয়ার ল্যাবে আরেকটি পৃথকভাবে এই দুটি
টিকার উৎপাদনের কথা তুলে ধরেন।–দ্য মস্কো টাইমস
তিনি বলেন, আজ এ দুটি টিকাই সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়। গোলিকোভা বলেন,
মস্কো ভিত্তিক গামালিয়া ইনস্টিটিউট ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যে টিকার
পরীক্ষা চালিয়েছে সেটিই প্রথম সেপ্টেম্বরে উৎপাদনের সময় ঠিক করা
হয়েছে। অপরদিকে সাইবেরিয়ার কাছের শহর নভোসিব্রিস্কের ভেক্টর স্টেট
ল্যাবরেটরি যে টিকা তৈরি করেছে তা অক্টোবরে উৎপাদন শুরু করা হবে। বিশ্বে
করোনায় পর্যুদস্ত চতুর্থ রাষ্ট্র রাশিয়া। দেশটি আশা করছে বিশ্বে তারাই
প্রথম
করোনার টিকা বাজারে আনতে যাচ্ছে। তবে পশ্চিমা বিজ্ঞানীরা রুশ টিকা
তৈরির গতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের চাপে পড়ে গবেষকরা হয়তো তাড়াহুড়ো করছেন।
পুতিন বুধবার বলেছেন, একটি চুড়ান্ত পণ্যের জন্যে সতর্কতা ও
ভারসাম্যপূর্ণ উপায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয়ের তৈরি টিকা আগস্টের মাঝামাঝি
বাজারে চলে আসবে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। বলা হয়েছে, ১০ অগস্ট
বা তার আগেই নতুন এই টিকা বাজারে আনার সরকারি অনুমোদন মিলে যেতে পারে।
রাশিয়ার গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউট এই টিকা তৈরি করছে। চূড়ান্ত অনুমোদন
পেলে সবার আগে ফ্রন্টলাইনে থাকা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ
করোনা
যোদ্ধাদের ওপর এই টিকা প্রয়োগ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। খবর সিএনএন ও
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের।
রাশিয়ার ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান নির্বাহী কিরিল
দিমিত্রিয়েভ
করোনা প্রতিষেধক আবিষ্কারকে ‘স্পুতনিক মোমেন্ট’ বলে দাবি
করেছেন। ১৯৫৭ সালে অন্তঃরীক্ষে উপগ্রহ ‘স্পুতনিক’ উৎক্ষেপণের সাফল্য
পেয়েছিল রাশিয়া। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সেই সাফল্যকে
করোনাভাইরাস
টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে তুলনা করতে চেয়েছেন তিনি। কিরিল দিমিত্রিয়েভ
বলেছেন, স্পুতনিকের সাফল্যের কথা জেনে মার্কিনরা অবাক হয়ে গিয়েছিল।
এবার ফের যুক্তরাষ্ট্রের তাক লেগে যাবে।
করোনা টিকা তৈরিতে রাশিয়াই
প্রথম সাফল্য দেখাবে বলেও দাবি করেন তিনি।
রাশিয়া যে সবার আগে
করোনার টিকা আবিষ্কার করতে পারবে এমন দাবি আগেই
করেছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি দ্বিতীয় পর্যায়ের
পরীক্ষা সফল হওয়ার পরে রাশিয়ার উপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুসলান সালিকভ
জানান, দেশের গামালেয়া ন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এপিডেমোলজি অ্যান্ড
মাইক্রোবায়োলজির বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা যে টিকা তৈরি করেছেন, সেটি এখন
ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। গত জুন মাসে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের
অধীনে থাকা গবেষণায় তৈরি হওয়া টিকার ক্লিনিকাল ট্রায়ালের অনুমতি দেয়
রুশ সরকার। এরপর এক বিবৃতিতে কিরিল দিমিত্রিয়েভ সেসময় বলেন, ৩ আগস্ট ওই
টিকার তৃতীয় দফার ট্রায়াল শুরু হবে। রাশিয়া ছাড়াও সৌদি আরব ও সংযুক্ত
আরব আমিরাতের মানুষের উপরে এই পরীক্ষা হবে। ওই ট্রায়ালে অংশ নেবেন কয়েক
হাজার মানুষ। সেটা সফল হলে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে টিকা বন্টন শুরু হবে।
এখন দাবি করা হচ্ছে, আগস্টের মাঝামাঝিতেই বাজারে চলে আসবে সেই টিকা।
উল্লেখ্য, রাশিয়ায় ৮ লাখ ২৮ হাজারেরও বেশি লোক
করোনায় আক্রান্ত হয়েছে
এবং মারা গেছে ১৩ হাজার ৬শ’ জন।