নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাউদাম্পটনে প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হেরে অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু ম্যানচেস্টারের পরের দুই টেস্ট পুরো ভিন্ন ছবি। প্রথম টেস্টের একাদশ থেকে জায়গা হারিয়ে ‘ক্ষুব্ধ’ স্টুয়ার্ট ব্রড পরের দুই টেস্ট দেখালেন ঝলক। বিশেষ করে শেষ টেস্টে ১০ উইকেট নিয়ে দলকে জেতালেন, নিজে স্পর্শ করলেন ৫০০ উইকেটের মাইলফলক। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ও টেস্ট ইতিহাসের সপ্তম বোলার হিসেবে তার মাইলফলক ছোঁয়ার দিনে হাতছাড়া করা উইজেডেন ট্রফিও পুনরুদ্ধার করল জো রুটের দল। তবে এটিই শেষবার। কেননা আগামী বছর থেকে সিরিজটির কেতাবি নাম বদলে হয়ে যাচ্ছে ‘রিচার্ডস-বোথাম ট্রফি’।
গতপরশু রাতে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তৃতীয় ও শেষ টেস্টে ইংল্যান্ডের কাছে পাত্তাই পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৬৯ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে তারা। তিন টেস্টের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল স্বাগতিকরা। যার পুরো কৃতিত্ব একাই পেতে পারেন ব্রড। এমন নায়কোচিত বোলিংয়ের পর ব্রডের বন্দনায় মেতে উঠেছে ক্রিকেটবিশ্ব। অভিষেকের সময় তাকে টেস্ট ক্যাপ তুলে দেওয়া মাইকেল ভন থেকে শুরু করে ৫০০ উইকেট শিকারি প্রথম বোলার কোর্টনি ওয়ালশ, কিংবা কিংবদন্তি শচিন টেন্ডুলকারসহ আরও অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইংলিশ পেসারকে। ওয়ালশ তো বলেই দিলেন, ব্রডের পরের লক্ষ্য ৬০০ উইকেট।
২০০৭ সালে কলম্বোতে ব্রডের অভিষেক টেস্টে তাকে টেস্ট ক্যাপ পরিয়ে দিয়েছিলেন সেই সময়ের ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন। এবার তিনি ধারাভাষ্যকক্ষে বসে দেখেছেন ব্রডের ৫০০ উইকেট পাওয়ার মুহূর্ত। অভিষেকের সময় টেস্ট ক্যাপ উপহার দেওয়ার সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে ভন লিখেছেন, ব্রডকে নিয়ে এত বড় আশা তার ছিল না, ‘সবসময়ই মনে হয়েছে, ভালো একটি টেস্ট ক্যারিয়ার ওর হবে। তবে ৫০০ উইকেট পাওয়া মোটেও আমার সমীকরণে ছিল না! স্কিল, স্থায়িত্ব, কঠোর পরিশ্রম ও হাল না ছাড়া মানসিকতা... অথচ ওর শুরুটা ছিল ব্যাটসম্যান হিসেবে... সব তরুণ ক্রিকেটারের জন্য ভালো উদাহরণ... অভিনন্দন স্টুয়ার্ট ব্রড।’
২০০১ সালের মার্চে পোর্ট অব স্পেনে দক্ষিণ আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিসকে এলবিডব্লিউ করে ৫০০ ছুঁয়েছিলেন ওয়ালশ। নাম লিখিয়েছিলেন ইতিহাসে। সেই প্রথম, টেস্টে পাঁচশর ঠিকানায় পৌঁছতে পেরেছিলেন কেউ। অনেক বছর আগে ছোট্ট ব্রডকে দেখার স্মৃতি মনে করলেন এই ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি, ‘৫০০ উইকেট স্পর্শ করায় ব্রডকে অভিনন্দন। কঠোর পরিশ্রমের ফল মিলেছে ওর। আমার এখনও মনে আছে, ব্রিস্টলে তুমি আমার ছেলেকে বোলিং করছিলে, যখন তোমরা দুজনই বাচ্চা ছিলে। দারুণ অর্জন, তোমার সীমানা আকাশ... পরের ধাপ ৬০০ উইকেট।’
এই সিরিজের প্রথম টেস্টে উপেক্ষিত হওয়ার পর ব্রডের ভেতরে যে বারুদ দেখা গেছে, সেটিই তুলে ধরলেন শচিন টেন্ডুলকার, ‘আগেই বলেছিলাম, ব্রডকে দারুণ উজ্জীবিত মনে হচ্ছে এবং সে যেন একটা অভিযানে নেমেছিল। ৫০০ উইকেট পাওয়ায় তাকে অভিনন্দন, অসাধারণ অর্জন।’ এমন একটা অর্জন ফাঁকা গ্যালারির সামনে হলো, এটা খানিকটা পোড়াচ্ছে ব্রডের সাবেক সতীর্থ পল কলিংউডকে, ‘খুবই দুঃখজনক যে ব্রডের ৫০০ উইকেট পূর্ণ গ্যালারির সামনে হলো না। তবে আমরা সবাই সমীহ ও প্রশস্তি নিয়েই দেখছি এই দুর্দান্ত অর্জন। অবিশ্বাস্য...।’
প্রশংসা এসেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের শিবির থেকেও। ব্রডের ৫০১ উইকেটের ৩২১টি এসেছে ইংল্যান্ডে। এই কন্ডিশনে তার কার্যকারিতা মনে করিয়ে দিলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং, ‘৫০০ উইকেটের জন্য অভিনন্দন ব্রড। সবসময়ই কঠিন এক প্রতিপক্ষ এবং দারুণ স্কিলফুল বোলার, বিশেষ করে ইংলিশ কন্ডিশনে।’
গত ১৩ বছরে ১৪০টি টেস্ট খেলেছেন ব্রড। টেস্ট ইতিহাসে পেসারদের মধ্যে এত টেস্ট খেলতে পেরেছেন কেবল আর জিমি অ্যান্ডারসন (১৫৩)। অস্ট্রেলিয়ান গ্রেট অ্যাডাম গিলক্রিস্ট মনে করিয়ে দিলেন সেটি, ‘দারুণ অর্জন, স্টুয়ার্ট ব্রড। একজন চ্যাম্পিয়নের সবচেয়ে বড় বিশেষত্ব হলো দীর্ঘস্থায়িত্ব। তুমি একজন সত্যিকারের চ্যাম্পিয়ন।’ সমসাময়িক গ্রেটদের মধ্যে ৫০০ উইকেটের পথে জোর পায়েই ছুটছিলেন ডেল স্টেইন। কিন্তু চোট-আঘাতের কারণে তাকে থামতে হয়েছে শেষ পর্যন্ত ৪৩৯ উইকেটে। ব্রডকে অভিনন্দন জানালেন তিনিও, ‘ব্রডের ৫০০ বড় শিকার... কী দারুণ এক অর্জন... কুর্নিশ!’
ব্রড নিজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কৃতজ্ঞতা জানালেন সবার প্রতি, ‘সবার সমর্থন ও ভালোবাসায় আমি অভিভূত। অনেক ধন্যবাদ। দলের জয়ের ম্যাচে ৫০০ উইকেট পাওয়া, সিরিজ জয় সবই স্পেশাল অনুভূতি। আমি ক্রিকেট ভালোবাসি।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।